ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

এমপিওভুক্তির আশ্বাস দ্রুত বাস্তবায়ন হোক

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:৪২  
আপডেট :
 ০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:৪৫

এমপিওভুক্তির আশ্বাস দ্রুত বাস্তবায়ন হোক
ফাইল ছবি

পৌষের প্রচণ্ড শীতে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে নন্দিত শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাতে দিনের পর দিন অবস্থান-অনশন ধর্মঘট পালন করছেন- এ দৃশ্য অমানবিক, অগ্রহণযোগ্য। স্বস্তির কথা, শুক্রবার বিকেলে এ আন্দোলনের অবসান ঘটেছে। তবে উদ্বেগ রয়েই গেল এ কারণে যে, এমপিওভুক্তির দাবিতে শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে রাজপথে নেমে আসা শিক্ষকরা কর্মসূচির অবসান ঘটাননি, শুধু স্থগিত করেছেন।

বাংলাদেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজের বেশিরভাগ এমপিওভুক্ত। শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পান সরকারের তহবিল থেকে। কিন্তু এখনও প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়ে গেছে, যেখানে প্রায় ৭৫ হাজার শিক্ষক কর্মরত; এমপিওভুক্ত না হওয়ায় তাদের বেতন-ভাতা অনিশ্চিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতন থেকে প্রাপ্ত সামান্য অর্থের ওপরেই ওইসব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা হয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা এ বৈষম্যের অবসান চেয়েছেন। তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরুর পর শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের সামনে হাজির হয়ে দাবি বিবেচনার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষকরা চেয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আশ্বাস এবং সে দাবি সামনে রেখে একদল শিক্ষক আমরণ অনশন শুরু করেন।

তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিবের মাধ্যমে। শিক্ষকরা সানন্দচিত্তে এ ঘোষণা মেনে নিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘আন্দোলন সফল হয়েছে। এখন আনন্দে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়া যাবে।’ আমরা আশা করি, যথাশিগগির এ কাজটি সম্পন্ন হবে। এটা ঠিক, স্বল্প আয়ের দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে সবেমাত্র নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া দেশটির আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ থেকে মানবসম্পদ উন্নয়ন- কত খাতই না রয়েছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের তালিকায়! তদুপরি আছে দুর্নীতি ও অনিয়ম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের উৎকোচ দিতে হয়- এমন অভিযোগ বহুদিনের। এ অসৎ প্রক্রিয়ায় জনপ্রতিনিধি থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংশ্নিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে এবং তা অমূলক বলা যাবে না।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের যে বেতন কাঠামো, তাতে মেধাবীদের এ পেশায় আকৃষ্ট করা সহজ নয়। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি সম্ভব। আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া সুচারুরূপে সম্পন্ন করায় সংশ্নিষ্ট সবাই যত্নবান থাকবেন। শিক্ষামন্ত্রী সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে অনিয়মের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অনেক পরিদর্শক উৎকোচ গ্রহণ করে অনেক অনিয়ম উপেক্ষা করে যান- এটা ওপেন সিক্রেট। শিক্ষার মান বাড়াতে হলে অবশ্যই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া, অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির লাগাম টানতেই হবে। মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সবার ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত