ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪০ মিনিট আগে
শিরোনাম

মানুষ হইতে সাবধান

  রাজীব কুমার দাশ

প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৩, ১৫:৪১

মানুষ হইতে সাবধান

একদা বলিল কবির প্রিয়তমা

আমার একা জনে নাহি মজে মন

বহুরূপী মনে আমার প্রিয় বহুজন

আমার সুখের লাগিয়া শোন মন দিয়া

যাইবে এখন আমারে ছাড়িয়া

তোমার মরিতে হইবে এখন।

আহা! কবির হৃদয়টা হইল বিদীর্ণ

মনটা জীর্ণ-শীর্ণ সহজ-সরল কবি মন

বাহনা তুলিয়া প্রিয়ার সুখের মুখে তাকাইয়া

কহিল নিরবধিঃ

নিজেকে নিজে কেমনে করিব হত্যা

কী করিব এখন?

মরিতে চাহি না আমি এই ছিল বুঝি

আমার ললাটের লিখন? '

কহিল কবির প্রিয়তমা নামটি তার নিরুপমা

অতশত বুঝিনা আমি -আমার শেষ আদেশে ছাড়িতে হইবে এখনি এই ভুবন।

কবি, চারিদিকে দেখিয়া চিন্তায় পড়িয়া বিড়বিড়

সুরে স্বরে পড়েন বেদনার বেদান্ত দর্শন

আহা! এই বুঝি ভালোবাসা!

প্রিয়তমা সুখের আশার লাগিয়া হইবে ইচ্ছা মৃত্যুর নরক যন্ত্রণা বরণ।

কতশত বুঝাইল কবি পোষা টিয়া

ময়না ভাত শালিকের মতোন

বোঝে ভাত শালিক ময়না টিয়া

নাহি বুঝে -বোঝেনা সে বোঝেনা কবির প্রিয়তমা মানিক রতন।

আহা! প্রিয়তমা

তোমার সুখের লাগিয়া ওগো নিরুপমা করিও ক্ষমা চাহিয়া

কবি -চলিল তমব্রু বনে বনবীথি মাঝে অভিমানী সাঁঝের মুখে করিতে

প্রিয়তমার ইচ্ছাপূরণ।

যথারীতি হইল রাত আকাশভরা তারা

সাজ;

থালা ভরা রূপালী চাঁদ হঠাৎ দেখাইল বিদ্রুপ সাজ ;

বনবীথি মাঝে কানে একা বাজে নিরঙ্কুশ অখণ্ড স্বার্থ সংসারি গান;

চিনিতে না পারি -কে আপন কে পর?

যে করিল মোরে বিবাগী আমি তার

লাগি মাগিয়াছি বর - হয়েছি সংসারি

যাযাবর।

বনমাতা আসিয়া বুকে দিল সাহসিয়া প্রাণ

করিলেন অশ্রুচুম্বন

বলিলেন বাছাধন দুঃখ পেয়োনা মানিক

রতন

বনমাঝে দিলাম নিরাপদ আশ্রয়

মরিতে হইবে না তোমায় বনমাতা বুকে হে মানিক রতন;

হাতি বানর হনুমান আনিল ফলদ আহার পিঠে উঠিয়া চলিল কবি ঝরনা অবধি;

রাতের দ্বিপ্রহরে হঠাৎ বনমাঝে চলিল ঠা ঠা ঠা মেশিনগানের গুলি

ঝাঁঝরা হইল হাতি ভ্রাতার দেহ

কেড়ে নিল কবির হৃদয় প্রাণ।

বনমাতা আসিয়া বিলাপ করিয়া কত শত

করে কবি হৃদয়ের বর্ণনঃ

" আহা পুত্র অভিমানি,হৃদয় মাঝে কেন দিলে

ভয়ঙ্কর বহুরূপী ছল মানবী প্রিয়ার শর্তে প্রাণ বিসর্জন?

পুত্রঃ

চন্দন বৃক্ষ আগে জানেনা যেইভাবে পায় মন্দিরে দেব -দেবীর চরণ

তুমিও জানিতে না পুত্র - পূজিত হইতে একদিন চন্দন বৃক্ষের মতোন।

কবিরা -দেখিতে ভয়ঙ্কর মানব প্রাণীর মতোন;

তবে - ভয়ঙ্কর প্রাণী নহেন

দেব-দেবী ঈশ্বরের পরে পূজিত হয় তাহারা

চন্দন বৃক্ষের মতোন।

পুত্র:

জানো? পৃথিবীর মানুষই একমাত্র ভয়ঙ্কর প্রাণী;

থাকিতে নিরাপদ

মানুষ হইতে সাবধান।

এইবার আমার বুকে ঘুমিয়ে যাও;

চিরদিনের মতোন।

২৯ মে ২০২৩ খ্রি

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত