ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইসলাম উদ্দিন বয়াতির পাশে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৬ জুন ২০১৯, ২১:৩৪

ইসলাম উদ্দিন বয়াতির পাশে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি

প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ইসলাম ইসলাম উদ্দিন বয়াতির পাশে দাঁড়ালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। অসুস্থতার খবর পেয়ে রোববার বিকেলে তার নিজ এলাকা ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামে ইসলাম উদ্দিন বয়াতির বাড়িতে যান তিনি। সেখানে ইসলাম উদ্দিনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি তার পরিবারের বিষয়েও খোঁজ নেন তিনি।

ছাত্রলীগ নেতা সনজিত চন্দ্র দাস জানান, ইসলাম উদ্দিন বয়াতির শারীরিক অবস্থা ভাল না। নিয়মিত চিকিৎসা করা না হলে অবণতির দিকেই যাবে। ইসলাম উদ্দিনের একমাত্র মেয়েটির মধ্যে পড়ালেখা করার মানসিকতা আছে। কিন্তু তার বাবা ইসলাম উদ্দিনের চিকিৎসার খরচ জুগিয়েই পরিবারটির অবস্থা নাজেহাল। অসুস্থ বাবার দিকে তাকিয়ে মেয়েটি পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। এসময় সঞ্জিত সমাজের বিত্তবানদের সাধ্যমতো পরিবারটির পাশে দাঁড়াবার আহবান জানান এবং তিনি নিজেও সাধ্যমতো সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের একাধিক নাটক, চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনে গান গেয়ে খ্যাতি পান ইসলাম উদ্দিন বয়াতি। প্রায় বছরখানেক সময় ধরে জনপ্রিয় এই শিল্পী অসুস্থ। কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না। দিন দিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

সম্প্রতি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন ইসলাম উদ্দিন বয়াতি। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শ দিলেও অর্থাভাবে তা হয়ে ওঠেনি। এরপর থেকে বাড়িতেই অবস্থান করছেন তিনি।

চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ খাচ্ছেন। কিন্তু অনেক সময় টাকার অভাবে ওষুধও জোগাড় করতে পারছেন না। কারণ তার পরিবারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। বাস্তুভিটা ছাড়া আর কোনো সহায় সম্পদও নেই তাদের। অর্থাভাবে তার একমাত্র মেয়ের পড়ালেখাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্বামীর চিকিৎসা, মেয়ের পড়ালেখা আর সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তার স্ত্রী লিয়া খানম।

ইসলাম উদ্দিন বয়াতি বলেন, হুমায়ূন আহমেদ থাকতে আমার খোঁজখবর নিতেন। বিভিন্ন সময়ে আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতাও করেছেন। কিন্তু এখন আর ওই পরিবার থেকে কেউ তার তেমন খোঁজ নেয় না। এসময় ছাত্রলীগ নেতা সনজিতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইসলাম উদ্দিন বয়াতি।

ইসলাম উদ্দিনের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামে। তিনি শৈশবকাল থেকেই গানে মগ্ন। ছাত্রজীবনে মামা রঙ্গু মিয়ার কণ্ঠে গান শুনে সঙ্গীতের প্রতি আসক্ত হন। এর পর প্রখ্যাত বাউল আবেদ আলীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে বাউল গান ও বাউল শাস্ত্রের তালিম নেন। কৈশোরেই তিনি সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে গানকেই বেছে নেন জীবিকার অবলম্বন হিসেবে।

১৯৯২ সালে কেন্দুয়ার কুতুবপুর গ্রামের এক আসরে বাউল গান গেয়ে তিনি জননন্দিত কথা সাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের দৃষ্টিকারেন। পরবর্তীতে তার ঘনিষ্ঠ সহচর হয়ে ওঠেন। হুমায়ূন আহমেদের ‘উড়ে যায় বক পক্ষী’, ‘চন্দ্র কারিগর’, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘এনায়েত আলীর ছাগল’, ‘অদেখা ভুবন’, ‘চৌধুরী খালেকুজ্জামানের বিশ্ব রেকর্ড’, ‘চৌধুরী খালেকুজ্জামানের এভারেস্ট জয়’, ‘থ্রি-টু-ওয়ান জিরো এ্যাকশান’সহ ১৩টি নাটক, দুটি চলচিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ও ‘নয়ন নম্বর বিপদ সংকেত’ এবং তিনটি বিজ্ঞাপন চিত্রে গান ও অভিনয় করেছেন তিনি। এসব অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নব্বই দশক ও তার পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে পরিচিতি পান তিনি। একাধিকবার গান করেছেন দেশের বাইরেও।

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত