ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকার কৌশলী অবস্থান নি‌য়ে‌ছে: কা‌দের

  নিজস্ব প্র‌তি‌বেদক

প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০১৯, ১৬:৪২

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকার কৌশলী অবস্থান নি‌য়ে‌ছে: কা‌দের

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়ত‌নে বিআরটিসি শ্রমিক-কর্মচারী লীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

কা‌দের বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সিটিজেনশিপের মতো বিষয়গুলো এখানো সমাধান করতে না পারায় তাদের মধ্যে অবিশ্বাস রয়ে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে জাতিসংঘ ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে শেখ হাসিনা সরকার যতটা কুটনীতিক সাফল্য অর্জন করেছে এটা অন্য কোনো দেশে সম্ভব হয়নি। এখানকার সমস্যাটা জটিল। এই জটিলতার মধ্যে যুদ্ধ পরিহার করে ঠান্ডা মাথায় যুদ্ধের উস্কানির মধ্যে যুদ্ধের পথে না গিয়ে শান্তির মাধ্যেমে আলাপ আলোচনা করে এর সমাধান করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

তি‌নি ব‌লেন, এখানে ব্যর্থতার কোনো বিষয় নেই। এখানে কৌশলগত বিষয় রয়েছে। অনেক সময় দু’পা এগিয়ে এক পা পিছিয়ে যেতে হয়। এটিকে কুটনীতিক ব্যর্থতা বলা যাবে না। রোহিঙ্গারা কক্সবাজার সীমান্ত অতিক্রম করে আসার পর মিয়ানমার সরকার সবচেয়ে বেশি চাপ অনুভব করছে।

কাদের বলেন, মিয়ানমার সরকার সেখানে পরিবেশ সৃষ্টি করেনি, নিরাপত্তা সৃষ্টি করেনি, সিটিজেনশীপের মতো বিষয়টি সুরাহা করতে পারেনি; এজন্য তাদের বিশ্বাস করতে পারেনি রোহিঙ্গারা। তারা অত্যাচারিত নির্যাতিত হয়েছে। এর দায় মিয়ানমার সরকারকে নিতে হবে। সেজন্য আমরা যুদ্ধের পথে যাবো না, আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখবো। সেই কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।

তি‌নি ব‌লেন, আজকের দিনে যুদ্ধের পথে গিয়ে জয়ী হওয়া যাবে না। শান্তিকে জয় করতে হবে। এই লোকগুলোকে সম্মানের সঙ্গে নিরাপত্তার নিশ্চিত করে ফেরত পাঠাতে হবে। সেজন্য চেষ্টা চলছে। আজকে যারা বলেন এখানে কুটনৈতিক প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে, আমি বলবো তাদের এটা বিগ মিসটেক। সরকারের কুটনৈতিক প্রয়াস এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এই ব্যাপারে আমাদের মনে রাখতে হবে মিয়ানমারেরও বন্ধু আছে এবং শক্তিশালী বন্ধু আছে।

তি‌নি আ‌রো ব‌লেন, বাস্তবতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। দীর্ঘদিন স্বৈরাচারি শাসন কায়েম করেছে বলে তারা বন্ধুহীন এটা চিন্তা করার কারণ নেই। আজকের পৃথিবীতে ডিপ্লোমেসিটা ইকোনমি ডিপ্লোমেসি। এখানে জিও ফিজিক্যাল কন্ডিশনে মিত্রতা সৃষ্টি হয়। ইকোনোমিক কারণে ফিনান্সিয়াল কারণে মিত্রতা হয়। সবার একটা অংক আছে। হিসাব আছে। সেই হিসাবে মিয়ানমারের বন্ধুরা কম শক্তিশারী নয়। কাজেই আমাদের কৌশলী হতে এগোতে হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদে অবস্থান কক্সবাজার-টেকনাফ এলাকার পর্যটনসহ সব বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের লালন পালন আশ্রয় দেয়ায় আমাদের ট্যুরিজম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ইকোলজি অ্যফেকক্টটে হচ্ছে। আমাদের ইকোনমি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত যা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে, সেই পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের এক নেতা রোহিঙ্গাদের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সেখানে রোহিঙ্গারা ১১ লাখ আমাদের ৪ লাখ। মনে রাখতে হবে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সবাই যে নিরীহ শান্ত সেটি মনে করার কারণে নেই। তাদের মধ্যে হতাশা আছে, বেপরোয়া মনোভব আছে সেটির একটি বিচ্ছিন্ন প্রকাশ ঘটেছে। কাজেই এর জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাবে এটা মনে করার সঠিক হবে না। পরিস্থিতি আমাদের সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।

বিআরটিসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়েছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দুর্নীতি মুক্ত না হলে বিআরটিসি লাভের মুখ দেখতো না। লাভের গুড় এখানে পিপড়ায় খেয়ে ফেলে। লাভের গুড় যখন পিপড়ায় খেয়ে ফেলে তখন লোকসান হবে। যারা ওপরে আছেন ভাগাভাগি তারাই করেন। আমি বিআরটিসির ব্যাপারে কঠিন হতে চলেছি। নতুন গাড়িগুলো এসে বহর আরো সমৃদ্ধ হয়েছে। আপনারা সহযোগিতা করলে বিআরটিসিকে লাভবান করা সম্ভব। বিআরটিসি থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা হবে। এই প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে দেখাবো।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত