ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত গণবিরোধী: রিজভী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:৫১

টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত গণবিরোধী: রিজভী

মহাসড়ক থেকে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত দু দিন আগে একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন দেশের মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করতে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ গণবিরোধী। জনগণের পকেট কাটতেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা হলে তা যাত্রীদের পকেট থেকেই দিতে হবে, যানজটের তীব্রতা বাড়বে, নষ্ট হবে সময়৷

তিনি বলেন, দেশের মহাসড়কগুলো তো টোল আদায়ের জন্য উপযুক্তই না। সারাদেশের অধিকাংশ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে মহাসড়কগুলোতেও। এসব কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। এছাড়াও নানা কারণে সকল সড়কে যানজট লেগেই আছে। যানজটের কারণে গাড়ি ঠিকমত চলতে পারে না৷ এর মধ্যে টোলঘর বসালে প্রতিবন্ধকতা আরও বাড়বে৷ যানজটের পরিমাণও বেড়ে যাবে৷

রিজভী বলেন, বাস ভাড়া অনেক বেশি। সড়কে টোল আদায় করলে বাস ভাড়া আরও বাড়বে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া পরিবহন মালিকরা নেন না। তারা অনেক বেশি টাকা নেন। এখন টোলের টাকাও যাত্রীদের কাছ থেকে উঠানো হবে। এই টোলের ফলে যাত্রীদের অর্থ অপচয় হবে, সময় অপচয় হবে। ফলে যাত্রীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

তিনি আরও বলেন, টোল থেকে আদায় হওয়া টাকার কত অংশ সরকারি কোষাগারে জমা পড়বে সেই প্রশ্নও রয়েছে। সরকার নিজেরা টাকা ওঠালে সেখানে দুর্নীতির কারণে নয়-ছয় হয়৷ আবার ইজারা দিলে খাতিরের লোকজনকে নামমাত্র মূল্যে দেওয়া হয়৷ ফলে সরকারি কোষাগারে খুব বেশি টাকা জমা পড়ে না৷ অন্যদিকে টোল প্লাজা পার হতে যদি প্রতিটি গাড়ির পাঁচ মিনিট করেও সময় লাগে তাহলে শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৫ লাখ মিনিট সময় মানুষের জীবন থেকে চলে যাবে৷ এই এক লাখ গাড়িতে তো অনেক মানুষ চড়বেন৷ এর পাশাপাশি টোল আদায়ের সময় গাড়ির অতিরিক্ত তেল পুড়লে তার টাকাও আদায় হবে জনগনের কাছ থেকেই। সুতরাং টোলের খড়গ নেমে আসবে জনগনের কাঁধেই। টোলসহ অতিরিক্ত সকল খরচের মাশুল দিতে হবে জনগনকেই।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সরকার সারাদেশে লুটপাট চালিয়ে দেশকে ফোঁকলা করে ফেলেছে। এখন তাদের জনগণের ওপর ট্যাক্স না বসিয়ে কোন উপায় নেই। তাই একের পর এক ফন্দি করে জনগনের টাকা কেটে নিচ্ছে সরকার। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারকে এ ধরণের গণবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা ও নির্যাতন আরও বেড়ে গেছে। বেড়েছে বিএসএফের নৃশংসতার ধরনও। বিশেষ করে দেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় আটক বাংলাদেশিদের প্রতি ভয়ংকর নৃশংস আচরণ করেছে বিএসএফ। বাংলাদেশিদের ওপর বিএসএফ যে নিষ্ঠুর আচরণ করছে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। আটক বাংলাদেশিদের বিষয়ে আইন প্রয়োগের সুযোগ থাকলেও তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। সুযোগ পেলেই এদেশের নিরীহ লোকদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হচ্ছে। দিন দিন বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যার সংখ্যা বাড়লেও নীরবতা পালন করে আসছে বর্তমান সরকার।

রিজভী বলেন, সীমান্ত হত্যা নিয়ে রাষ্ট্র একবারে চুপ করে বসে আছে কিংবা কোন কোন সময় প্রতিবাদের পরিবর্তে বিএসএফের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। দুনিয়ার কোনো দেশের সীমান্তে এত হত্যা ও রক্তপাতের একতরফাভাবে ঘটনা ঘটেনা। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিবাদ হলে এসব ঘটনা কমতে পারত। কিন্তু সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত নিরাপদ হচ্ছে না। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। আমি সরকারের এ ধরণের ঘৃন্য নীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত