ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

সংসদ সদস্যরাও রেহাই পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সংসদ সদস্যরাও রেহাই পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকলে সংসদ সদস্যরাও বিচারের আওয়াত থেকে বাদ যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আমরা পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে তৈরি তালিকায় যাদের নাম কমন পড়ছে, তাদেরই আটক করছি। বিচারে নির্দোষ হলে ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা কোনো ক্রসফায়ার করছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাংসদরাও বাদ যাবে না। অপেক্ষা করুন।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা বা মাদকের সাথে জড়িত থাকায় দুই শতাধিক মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? -সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা ও মাদক ব্যবসার সাথে পুলিশের যেসব সদস্যের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। প্রমাণের ভিত্তিতে সাসপেন্ড হচ্ছেন। ইতোমধ্যে ২/৩ জনকে কারান্তরীণ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যও অপরাধ করলে পার পাচ্ছেন না। দেশের আইন অনুযায়ী বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরাও বাদ যাবেন না। তবে কোনো নির্দোষ ব্যক্তি যাতে সাজা না পান সে জন্য সময় লাগছে। বিভাগীয় তদন্তও চলছে। তদন্তে মাদকে জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণ মিললে ছাড় দেয়া হবে না।

‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরাম নিহত হওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, একরামের পরিবারের সাথে দেখা ও কথা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আর র্যাব সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি তদন্তের অংশ। তদন্তে যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয় তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খালেদা জিয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ নন। তার স্বাস্থ্যহানিও হয়নি। তারপরও তাকে আমরা চিকিৎসার জন্য দুটি হাসপাতালে সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি তা নেননি। কারাবিধি মেনে এর বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা মোকাবিলা আমাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। এ সময় তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রোহিঙ্গারা ৩০ হাজার টাকায় বাংলাদেশে পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে—এ বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি ঠিক আছে। তবে যারা ধরা পড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। নজরদারি রাখা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে কারো কাছে পাসপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গারা যাতে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীর শিকার না হয় সে জন্য চেষ্টা চলছে। ভারতসহ সবাই এ ব্যাপারে সোচ্চার।

এ সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনো গুম হচ্ছে না। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ও ব্যবসায় ব্যর্থ হয়ে নানান জন নানান দিকে চলে যাচ্ছে। আমরা তাদের এনে হাজির করছি। কেউ গুম হচ্ছে না।

বৈঠকে সাংবাদিক দম্পতি সাগর–রুনি হত্যার প্রসঙ্গ টেনে জানতে চাওয়া হয়, তদন্ত প্রতিবেদন কি আলোর মুখ দেখবে? জবাবে মন্ত্রী বলেন, আদালত র‍্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। র‍্যাব বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। পৃথিবীজুড়ে অনেক তদন্ত আছে, যেগুলো বছরের পর বছর ধরে চলে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, কাজ চলছে, দ্রুতই ফিরিয়ে আনা হবে।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গ্রেপ্তারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিযোগ ছাড়া কাউকে ধরা হয় না। কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো পুলিশ যায় না। যখনই বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ চায়, তখনই যায়। উপাচার্যের বাড়িতে যে ঘটনা হয়েছে, তা খুবই লজ্জাজনক। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর ও মানহানি করে যাঁরা বক্তব্য দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারকে (এনটিএমসি) নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন, যে অন্যায় করবে তার বিচার হতেই হবে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। অভিযোগ ওঠার পর তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত যাতে নির্ভুল হয় সেজন্য সময়ক্ষেপন হচ্ছে। এ কথা বলতে পারি, তদন্তের রুট অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও প্রয়োজনে যদি বিচারিক ব্যবস্থারও প্রয়োজন হয় খুব শিগগিরি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে জোর গলায় বলতে পারি, কোউকে ছাড় দিচ্ছি না।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ এর সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত