ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

রূপসী-কাঞ্চন সড়ক

ধান রোপণ করে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

  রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:২৫

ধান রোপণ করে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে ধান রোপণ করে রাস্তা অবরোধ করেছে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এ সময় তারা ঝাড়ুহাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শিল্পকারখানায় চলাচলরত হেভিট্রলি আর রেডিমিক্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। রাস্তায় ভয়াবহ ভাঙন গর্ত আর কাদামাটির এঁদো ডোবায় পরিণত হওয়ায় ব্যতিক্রম এই কর্মসূচির আয়োজন বলে জানান উদ্যোক্তারা। রোববার সকালে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কালাদি পয়েন্টে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার তারাব পৌরসভা থেকে কাঞ্চন পৌরসভা পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড় ঘেঁষে ‘রূপসী-কাঞ্চন’ সড়ক। ১৩.৯ কিলোমিটার রাস্তার মাঝখানে রয়েছে উপজেলার মুড়াপাড়া ও ভুলতা ইউনিয়নের বেশকিছু অঞ্চল। স্থানীয় ৩১ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা এই রাস্তাটি। রাস্তার দু’পাশ জুড়ে রাস্তা ব্যবহারকারী দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পকারখানা, নাভানা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, সিটি শিল্প জোন, বাংলাদেশ এডিবয়েল, গ্যালকো স্টিল, পারটেক্স গ্রুপ, ৭/৮টি পেপার মিল, সিনহা গ্রুপ, প্রাণ আরএফএলসহ ছোটবড় প্রচুর শিল্পকারখানা রয়েছে।

এছাড়া রেডিমিক্সকারী প্রতিষ্ঠান এনডিই এর ওভারলোডেট যানবাহন সারাদিন চলাচল করে এই সড়কে। পুরো রাস্তা জুড়েই বর্তমানে বেহাল দশা, খানাখন্দে ভরা রাস্তায় সিকিভাগও চোখে পরেনা পিচের অস্তিত্ব। ওঠে গেছে শুধু পিচ নয় ইট-পাথরের খোয়াও। একটু বৃষ্টি হলেই বীভৎস অবস্থার সৃষ্টি হয় রাস্তাজুড়ে। তখন সড়কটি যেন মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠে। রাস্তায় কাদা জমে হাঁটু পানি হয়ে যায়।

মাঝে মাঝে ট্রাকের চাকা ডুবে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। ভারি মালবাহী যানবাহন দূরের কথা, রিকশা-সিএনজি বাইকও চলাচল করতে পারেনা এ সড়কে। এ সড়কে গত ১০ বছরে প্রাণহানির ঘটনা ১১টি। রয়েছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ হাটাব এলাকার এনডি রেডিমিক্স এ রাস্তা নষ্টের জন্য অন্যতম দায়ী। রাস্তার ১০ টনের অধিক ওজনের যানবাহন চলাচলের অনুমোদন না থাকলেও তারা ৪০/৪৫ টনের রেডিমিক্স নিয়ে সারাদিন এ রাস্তায় চলাচল করে।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রূপসী-কাঞ্চন সড়কটি ১৯৮৭ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ হিসেবে নির্মাণ করা হলেও পরবর্তীতে এটিকে নিজেদের রাস্তা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর।

তারাই গত ৩১ বছর যাবত রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন। গত কয়েক বছর যাবত উপজেলার এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটিতে অধিক যানবাহনের বাড়তি চাপে যানজট সৃষ্টি হলে শর্টকাট পাড়ি দিতে দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলগামী মালবাহী যানবাহন রূপসী হয়ে এই রাস্তার ঢুকে সরাসরি বঙ্গবন্ধু সেতুমুখী চলে যায়। এছাড়া কয়েকটি লোকাল যানবাহনের স্ট্যান্ড ছাড়াও প্রচুর সংখ্যক ব্যক্তিগত গাড়ি যাতায়াত করে এই সড়কে। এছাড়া শিল্পকারখানার হাজার হাজার মালবাহী যানবাহন প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এই রাস্তায় চলাচলরত যানবাহন থেকে আবার চাঁদা আদায় করা হয় কাঞ্চন পৌরসভার টোকেনে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ২০০৮ সালে সর্বশেষ পিচ ঢালাই করে করা হলেও এরপর জোড়াতালির সংস্কার ছাড়া বাহ্যিক উন্নয়ন আর হয়নি।

এ কারণে রোববার সকালে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কালাদী পয়েন্টে রাস্তায় ধান চাষ করে বিক্ষোভে নামেন স্থানীয়রা। এসময় তারা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান বলেন, রূপসী-কাঞ্চন সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এটিকে আধুনিক ডিজাইন আর প্রসস্ত করার প্রস্তাবনা দিয়ে প্রায় ১৮৮ কোটি টাকার বাজেটসহ একনেকে পাঠানো হয়েছে। একনেকে অনুমোদন হলে সিআরডিবি টেন্ডার করবে। বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে বিকল্প মেরামতও করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত