ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

২৩ কূটনীতিক বহিষ্কারা

কোন দিকে যাচ্ছে রাশিয়া-ব্রিটেন সম্পর্ক

কোন দিকে যাচ্ছে রাশিয়া-ব্রিটেন সম্পর্ক

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে ২৩ জন রুশ কূটনীতিকে ব্রিটেন থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা দেবার পর বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন , ঐ ২৩ জন কূটনীতিক প্রকৃতপক্ষে গোয়েন্দা কর্মকর্তা, এবং তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে ব্রিটেন ছেড়ে যেতে হবে।

এ নিয়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলছে দুই বৃহৎ শক্তিধর দেশের মধ্যে। দিন কয়েকের মধ্যে ব্রিটেনকে যে পাল্টা জবাব দেবেন ভ্লাদিমির পুতিন, তা একপ্রকার নিশ্চিত। রাশিয়ায় প্রবল ক্ষমতাধর এই নেতা। তাকে নিয়ে আবারও সুপার পাওয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে রুশ জনতা।

অন্যদিকে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ অভিযোগ করেছেন, ব্রিটেন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এখন প্রশ্ন উঠছে ব্রিটেনের এরকম পদক্ষেপ রাশিয়ার সাথে তাদের সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক জিল্লুর রহমান খান মনে করেন, ব্রিটেন বুঝতে পেরেছে এর মাধ্যমে আমেরিকার সাথে ভালো সম্পর্ক হবে। রাশিয়ার সাথে কোন কাজ হবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্রিটেনের প্রতি নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি আছে বলে তিনি মনে করেন।

জিল্লুর রহমান খান বলেন, "কানাডার সাথে ব্রিটেনের ভালো সম্পর্ক আছে। আমেরিকার সাথে যদি ভালো সম্পর্ক বজায় থাকে তাহলে ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা অন্যদের প্রয়োজন নেই।"

সম্প্রতি নতুন পরমাণু অস্ত্রের কথা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন "আমার তো মনে হয় পুতিন এবার বলবে যে এদের ব্যাপারে তাঁর কোন হাত ছিল না। পুতিন এবং ট্রাম্প কেউ কারো চেয়ে কম নয়," তিনি বলেন।

রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করার পেছনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে আমেরিকার সমর্থন পেয়েছেন বলে মনে করেন সাবেক অধ্যাপক জিল্লুর রহমান খান। কূটনীতিক বহিষ্কারের লড়াই নতুন কিছু নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সাথে এক ধরনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবেলার জন্য আমেরিকার নেতৃত্বে সামরিক জোট ন্যাটো গঠন করা হয়েছিল।

এ সম্পর্কে খান বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে গেল। তিনি বলেন, পুতিন চাচ্ছে সোভিয়েত ইউনিয়ন যে রকম সুপার পাওয়ার ছিল, আবার সে অবস্থায় ফিরে যেতে। এমন অবস্থায় ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে রাশিয়াকে মোকাবেলা করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে রাশিয়ার উপর নানা ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। চীন এবং রাশিয়া থেকে যেসব পণ্য আমেরিকার বাজারে আসে সেগুলোর উপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা আছে। খান মনে করেন, রাশিয়ার পারমানবিক শক্তি নিয়ে আমেরিকার উদ্বেগ রয়েছে।

সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, এতে আভাস পাওয়া যায় - রুশ-মার্কিন সম্পর্ক উষ্ণ হবার কোন আশু সম্ভাবনা এখন আর নেই।

যেভাবে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার আধুনিকায়নের কথা বলছে, তাতে অনেকেই স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের কথা মনে করে উদ্বিগ্ন বোধ করবেন।

জিল্লুর রহমান খান বলছেন, দেশের ভেতরে পুতিনের বেশ জনপ্রিয়তা আছে। নিজের রাশিয়া সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন," রাশানরা (রাশিয়ার মানুষ) পুতিনকে যে সাপোর্ট দেয় সেটা আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না।"

কারণ রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষ মনে করে পুতিনের মাধ্যমে তারা আবার সুপার পাওয়ার হবে।

পুতিনকে নিয়ে ফের সুপার পাওয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে রাশিয়া

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত