ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

৫ হাজার টাকায় ঘুরে আসুন দার্জিলিং

  নাহিদুল আলম নীল

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ০১:০৮  
আপডেট :
 ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ০১:৪৭

৫ হাজার টাকায় ঘুরে আসুন দার্জিলিং

মানুষ মনের অন্তহীন গভীরতা থেকে ছুটি নিয়ে উড়ে চলে যেতে চায়। অসীম আকাশপানে চিৎকার করে বলতে চায় আমি উন্মুক্ত, আমি স্বাধীন। আফসোস! মানুষও তো আর ঘুড়ি হতে পারে না, পাখির মতো উড়তেও জানে না।

কিন্তু কথায় আছে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। আপনার এই অভিলাষী মনের সব ইচ্ছাই পূরণ করবে পাহাড়ের রাজ্য দার্জিলিং। দার্জিলিংয়ের প্রতিটি বাঁক যেন অষ্টাদশী তরুণীর নির্লিপ্ত চাহনি, শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হবে আর তাকিয়ে শুধু ডুবে যেতে মন চাইবে। পাহাড়ের কথোপকথনের শব্দরাশি আর শত-সহস্র অভিমানী পাহাড়ি মুখশ্রীর আলিঙ্গন পাবেন দার্জিলিং জুড়ে। নিজেকে উজাড় করে রাখা এক প্রিয়তম প্রেমিকার অপর নাম দার্জিলিং।

প্রথমেই আপনাকে ভারতীয় দূতাবাস হতে ‘By Road Category’-তে চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ভিসা নিতে হবে।

পাসপোর্ট, ভিসা রেডি করে মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকে ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিয়ে দিন, তাতে বর্ডারে সময় বাচবে আর ঝামেলা কম হবে। গাবতলী খেকে যাওয়ার টিকেট সংগ্রহ করতে পারেন, আর ২-৩ ঘন্টা সময় নষ্ট করে গাবতলী থেকে টিকেট কিনে ঝামেলা বাড়াতে না চাইলে সহজ.কম থেকে ঢাকা-বুড়িমারীর টিকেট কিনে প্রিন্ট করে নিন। নাবিল আরএম-২ (এসি) বাসের টিকেট পেয়ে যাবেন কাউন্টার থেকে ১০০-৩০০ টাকা কমে।

যাত্রার আগেই ভালমতো দেখে নিন পাসপোর্ট, ভিসা, ট্রাভেল ট্যাক্স আর টিকেট ঠিক মতো আছে কিনা?

হাতে কিছুটা সময় রেখে বেড়িয়ে পড়ুন বাসা থেকে। নাবিলের এসি বাস গাবতলী থেকে রাত ৯:৩০ এ ছাড়বে। পানি কিনে টাকার নষ্ট করতে না চাইলেও সমস্যা নেই কারণ বাসেই আপনাকে পানির বোতল দেওয়া হবে। রাত ১ টার দিকে ফুড ভিলেজ নামের হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে বাস স্টপেজ দিবে সেখানে খুব ক্ষিধা না থাকলেও হালকা কিছু খেয়ে বাসে উঠে পড়ুন। চোখে একটু ঘুম থাকলে চোখ বন্ধ করুন। চোখ খুলেই দেখবেন বুড়িমারী পৌঁছে গেছেন।

সকাল ৬- ৭ টার মধ্যে বুড়িমারী পৌঁছে যাবেন। বাস থেকে নামলেই অনেক দালালের দেখা পাবেন। মাথায় রাখতে হবে আপনাকে কম টাকায় ট্যুর শেষ করতে হবে, তাই দালালদের কথায় কান না দিয়ে ‘বুড়ির হোটেলে’ গিয়ে কম পয়সায় সকালের নাস্তা সেরে ফেলুন।

সারারাত তো বাসে বসে ছিলেন, তো নাস্তা শেষে হাতে কিছু সময় থাকলে একটু এদিক সেদিক হাটাহাটি করুন। বর্ডার খুলবে ঠিক ৯ টায়। নিজে নিজেই ইমিগ্রেশন অফিসে চলে যান। কাউন্টার থেকে একটা ডিপার্চার ফরম ফিলাপ করুন। কাউন্টারে আপনাকে ২০ টাকা দিতেই হবে। ফরম ফিলাপ করে ছবি তুলে কাস্টমসের দিকে এগিয়ে যান। কাস্টমসে ট্রাভেল ট্যাক্সের কপি দেখিয়ে একটা সীল নিয়ে ঢুকে যান ইন্ডিয়া …..

ইন্ডিয়া ঢুকার পরও আপনাকে দালাল ধরবে। এখানের দালালগুলা মোটামুটি ভাল। বাংলাদেশী ১০০ টাকায় আপনার সব কাজ করে দিবে। এখানে দালাল দিয়ে করিয়ে ফেলুন সব ফর্মালিটিজ।

শিলিগুড়ি অথবা দার্জিলিং-এ বাংলাদেশী টাকা এক্সচেঞ্জ করা অনেক ঝামেলার কাজ আর রেট খুবই কম পাবেন। তাই ফর্মালিটিজ শেষে বর্ডারের সাথের মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে রেট যাচাই করে সাথের টাকা/ডলার ক্যাশ করে নিন। বাংলাদেশী ১০০ টাকায় ৮০-৮২ টাকা পেতে পারেন। বর্ডারেই সব টাকা ভাঙ্গিয়ে নিন পরে কিছু বাচলে আবার ব্যাক করার সময় ক্যাশ করে নিতে পারবেন ১- ১.২০ টাকা রেটে।

টাকা ক্যাশ করে এবার শিলিগুড়ি চলে যান। চেংরাবান্ধা বর্ডার থেকেই শেয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যায় ভাড়া পড়বে ২০০ রুপির মতো অথবা বর্ডার থেকে অটো রিক্সা নিয়ে চলে যান চেংরাবান্ধা বাইপাস। ভাড়া পড়বে ৪০ রুপি। সেখান থেকে মাথাভাঙ্গা অথবা কুচবিহার থেকে শিলিগুড়ির বাসে মাত্র ৬০ রুপি দিয়ে চলে যেতে পারবেন শিলিগুড়ি।

বাসগুলা ভালই আর স্পীড লক্কর ঝক্কর এ্যাম্বাসেডর থেকে বেশি। ৯ টা বাজে বর্ডার ক্রস করলে ৩ ঘন্টার মধ্যেই শিলিগুড়ি পৌঁছে যাবেন। এবার শিলিগুড়ি তেনজিং নরগে বাস টার্মিনালে নেমে পাশের শিলিগুড়ি জংশনে একটু ঢুঁ মারতে পারেন। সাথেই সুন্দর দার্জিলিং হিমালয়ান রেল স্টেশন।

এখান থেকেই দুপুরের খাবার শেষ করে ট্রাফিক বক্সের সাথের জীপ স্ট্যান্ড থেকে ১৩০ রুপি দিয়ে দার্জিলিংয়ের শেয়ার জীপের টিকেট নিয়ে জীপে বসে পড়ুন। পাহড়ি রাস্তার সৌন্দর্য, মেঘ আর পাহাড়ী গ্রাম দেখতে দেখতে ৩ থেকে ৪ ঘন্টায় চলে যাবেন দার্জিলিং। দার্জিলিং মটর স্ট্যান্ডে নেমে একটু উপরের দিকে গিয়ে রুম নিয়ে নিন। বেশি উপরে হোটেল ঠিক করলে নিচে নামতে কষ্ট লাগবে আর বেশি নিচে নিলে উপরে যেতে কষ্ট লাগবে তাই মাঝামাঝি জায়গায় হোটেল ঠিক করুন। ৫০০ থেকে ১৫০০ রুপির মধ্যে ভালমানে রুম পাবেন।

হোটেল ঠিক করে একটু দার্জিলিংয়ের এদিক সেদিক হাটাহাটি করে রাতের খাবার খেয়ে নিন। খাওয়া দাওয়া শেষে পরদিন লোকাল ট্যুরিষ্ট স্পট ঘুরার জন্য একটা জীপ ঠিক করে নিন ২০০০-২৫০০ রুপির মধ্যে। রুমে গিয়ে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়ুন কারণ, জীপ আপনাদের রুম থেকে ডেকে নিয়ে যাবে ভোর ৪ টায়। মোটামুটি সবগুলো স্পট দেখিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ হোটেলে ছেড়ে যাবে। ঘুম থেকে সময়মত উঠতে না পারলে টাইগার হিল, বাতাসিয়া লুপ আর ঘুম মন্সট্রি মিস করবেন।

পরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিন। ভোর ৪ টায় জীপে করে টাইগার হিল, বাতাসিয়া লুপ দেখ ৮ টার দিকে হোটেলে এস সকালের নাস্তা করে নিন। নাস্তা শেষে আবার জীপে গিয়ে বসুন আর একে একে হিমালয়ান মাউন্টেনারিং ইন্সটিটউট, মিউজিয়াম, চিড়িয়াখানা, তেনজিং রক, জাপানিস টেম্পল, পিস প্যাগোডা, টি-গার্ডেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন আর রক গার্ডেন ঘুরে দেখুন। এইচএমআই তে ঢুকার জন্য আপনাকে টিকেট কিনতে হবে। ইন্ডিয়ানদের জন্য ৫০ রুপি আর ফরেনারদের জন্য ১০০ রুপি, সাথে ক্যামেরার জন্য অতিরিক্ত ১০ রুপি।

তেনজিং রকে ৫০ রুপি দিয়ে রক ক্লাইম্ব করতে পারবেন আর রক গার্ডেন ঢুকতে আপনাকে ১০ রুপি দিয়ে টিকেট কিনতে হবে। রক গার্ডেন থেকে ব্যাক করার সময় অরেঞ্জভ্যালি টি স্টেটে একটু নেমে সময় কাটাতে পারেন। দার্জিলিং স্টেশনেও এককাপ চা খেয়ে নিতে পারেন।

এখানে ক্যাবল কারে না উঠলেই ভাল। কারণ, ক্যাবল কারে চড়তে গেলে আপনাকে লাইন আর রাইড সহ ৩-৪ ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হবে তাতে আপনি অন্য জায়গাগুলো শান্তিমতো ঘুরতে পারবেন না।

সন্ধ্যায় হোটেলে ব্যাক করে দার্জিলিংয়ে পায়ে হেটে ঘুরাঘুরি করুন। জায়গায় জায়গায় রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেখানে গিয়ে লোকাল ফুড ট্রাই করতে পারেন। মমো আর থুপকা (স্যুপি নুডুলস টাইপ) অসাধারণ। রাতে হোটেলে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। একটু দেরী হলেও সমস্যা নেই কারণ কাল আপনার তেমন কোন কাজ নেই।

সকাল ৮-৯ টায় ঘুম থেকে উঠুন। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা শেষ করে বেড়িয়ে পড়ুন। গতকাল তো ক্যাবল কারে উঠতে পারেন নি। নিচে মটর স্ট্যান্ড থেকে লোকাল জীপে ১০ রুপি করে চলে যান সেন্ট জোসেফ স্কুলের সামনে। এখান থেকে ঠিক উল্টো দিকে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠলেই ক্যাবল কার। ১৭৫ রুপি দিয়ে টিকেট কিনে লাইনে দাড়িয়ে যান। লাইন শেষে ক্যাবলকারে চড়ে বসুন। ক্যাবল কার থামলে নেমে আবার লাইনে দাঁড়াতে হবে। সেখান থেকে আবার একটু পর ক্যাবল কারে চড়ে আগের জায়গায় রাইড শেষ হবে। আবার আগের মতো লোকাল জীপে চলে যান দার্জিলিং মটর স্ট্যান্ড।

হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। বিকেলে বিগবাজার অথবা লোকাল মার্কেট থেকে শপিং করার থাকলে করে নিন। সন্ধ্যায় আইনক্সে একটা মুভি দেখতে ভুলবেন না। বিগবাজারের বিল্ডিংয়েই আইনক্স। টিকেট মাত্র ৭০ রুপি। ব্লগবাস্টার থেকেও বক্সঅফিসটা জোস। মুভি দেখা শেষ করে রাতের খাবার খেয়ে নিন। রুমে ফেরত চলে যান। আপাতত আপনার দার্জিলিং ঘুরা শেষ। এবার চাইলে ব্যাগ প্যাক করে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন কাল সকালে ব্যাক করার জন্য।

ব্যাক করার সময় দার্জিলিং থেকে লোকাল শেয়ার জীপে করে মিরিক চলে যেতে পারেন। সেখান থেকে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে বাসে করে চেংরাবান্ধা বাইপাস তারপর চেংরাবান্ধা বর্ডার। ট্যুর শেষে রুপি থাকলে বর্ডারে আবার টাকায় চেঞ্জ করে নিন। বর্ডারে কাউকে ১০০ টাকা দিলে সেই সব ফর্মালিটিস শেষ করে আপনাকে গেট অবদি ছেড়ে দিয়ে আসবে। বাংলাদেশ ঢুকে টুকটাক ঝামেলা করতে না চাইলে কোনো দালালের সহায়তা নিন। কোন ঝামেলা ছাড়াই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই। কিন্তু টাকা দিতে হবে ২০০। বেশি দাবি করবে কিন্তু দিবেন না। সময় থাকলে বুড়ির হোটেলে খেয়ে নিন নয়তো কিছু খাবার কিনে বাসে উঠে বসুন।

বর্ডারেই অনেক বাস কাউন্টার আছে। সবগুলো বাস ৬-৬:৩০ এর মধ্যেই ছেড়ে দেয়। টিকেটের জন্য দালাল ধরতে পারে আপনাকে কিন্তু একাই যাবেন টিকেট কাউন্টারে। এখানে দালাল আপনার থেকে টাকা নিবে না কিন্তু কাউন্টার আপনার থেকে টিকেটের দাম ২০-৫০ টাকা বেশি নিয়ে দালালকে কমিশন দেবে। রাতে বাস হল্ড করার সময় চাইলে রাতের খাবার সেরে নিতে পারেন। সকাল সকাল ঢাকা নেমে যান আর বাসায় গিয়ে হিসাব করুন শপিং ছাড়া কত টাকা খরচ হলো ।

মনে রাখবেন ৪-৫ জনের গ্রুপ না হলে ৫০০০ টাকায় ট্যুর শেষ করা যাবে না।

কেনাকাটা কোথায় করবেন

দার্জিলিং থেকে শীতের জামা কাপড় কেনা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। শীতের শহর থেকে (মল রোড) আপনি যথাযথ মূল্যেই শীতের পোশাক কিনতে পারবেন। এ ছাড়া কিছু সতেজ চায়ের প্যাকেট কিনে নিয়ে আসতে পারেন। অন্যন্য কেনাকাটা আপনি শিলিগুড়িতে করলেই ভালো হবে।

কোথায় খাবেন

দার্জিলিংয়ে খাওয়ার জন্য সিমলা (০০৯১৯২৩৩৮২৭০৩০) রেস্টুরেন্ট অসাধারণ। মুসলিম হোটেলে খাওয়ার জন্য বড় মসজিদের সামনে যেতে পারেন।

খরচ

ঢাকা টু বুড়িমারী (৮৫০ টাকা)+সীমান্ত (১৫০ টাকা)+ চ্যাংড়াবান্ধা টু শিলিগুড়ি (২০০/২৫০ টাকা)+শিলিগুড়ি টু দার্জিলিং ২০০ টাকা= ১৫০০/১৭০০ টাকা।

হোটেল খরচ ৫০০ টাকা (প্রতিজন/প্রতিদিন)

খাওয়া খরচ ৫০০ টাকা (প্রতিজন/প্রতিদিন)

সারা দিনের জন্য জিপ ভাড়া করলে ২২০০/২৫০০ টাকা প্রয়োজন হবে।

এটা অফ সিজন রেট, সিজনের সময় ৩০ শতাংশ বেশি খরচ হবে। সুতরাং হিসাবটা সেভাবেই করে নেবেন।

কখন যাবেন

বৃষ্টির সময়টাতে দার্জিলিং যাওয়াটা বোকামি, সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি সেরা সময় দার্জিলিং উপভোগ করার জন্য।

যা করবেন না

১। দার্জিলিং পরিচ্ছন্ন শহর, দয়া করে নোংরা করবেন না।

২। দার্জিলিংয়ে উন্মুক্ত ধূমপান করা দণ্ডনীয় অপরাধ, সুতরাং ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন।

একঘেয়েমি প্রচণ্ড ব্যস্ততার এই যান্ত্রিক জীবনকে উপভোগ্য করতে মাঝে মাঝে লাইফ রিস্টার্ট বাটনে ক্লিক করতে হয়। জীবনের আনন্দে পূর্ণ সজীবতাকে বারবার ফিরিয়ে আনার মূলমন্ত্রই হচ্ছে ভ্রমণে ডুব দেওয়া। একটা ভ্রমণপিয়াসু মনই কেবল জানে, কীভাবে ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন থেকে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান হতে জীবনকে উপভোগ করা যায়। প্রতিটা জীবনই অর্থবহ হোক সঙ্গে উপভোগ্যও।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত