ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

পাঁচ জেলায় সড়কে মৃত্যু ১০

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:২৮

পাঁচ জেলায় সড়কে মৃত্যু ১০

দেশের চার জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতের বিভিন্ন সময় কক্সবাজারের চকরিয়া, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও গাইবান্ধা জেলায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে চকরিয়া উপজেলায়।

সেখানে বাস উল্টে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন যানটির চার যাত্রী। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৫ জনের মতো। এছাড়াও কুমিল্লায় কাভার্ডভ্যানের পেছনে বাসের ধাক্কায় দুইজন এবং লক্ষ্মীপুর ও মুন্সীগঞ্জে একজন করে বাইক আরোহী নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশ জার্নালের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

কক্সবাজার- শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া স্টেশনে স্টার লাইন পরিবহনের একটি বাস উল্টে খাদে পড়ে নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বাসটির ২৫ যাত্রী।

জানা যায়, রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল স্টার লাইন পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-২৩৪৩) একটি বাস। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া স্টেশনের অদূরে পৌঁছলে যানটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে বাসটি খাদে পড়ে উল্টে গেলে ঘটনাস্থলেই চার যাত্রী নিহত ও ২৫ যাত্রী আহত হন।

চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে আনা হয়।

নিহতদের মধ্যে ঝর্ণা বেগম নামে এক নারী যাত্রীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী। বাকিদের নাম-ঠিকানা এখনও জানা যায়নি। আহতদের উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

কুমিল্লা- রাত একটার দিকে কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানের পেছনে এনা পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় চালকসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বাসের ১০ যাত্রী।

চৌদ্দগ্রাম মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এ কে এম শরফুদ্দিন দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাত একটার দিকে চট্টগ্রামমুখী একটি কাভার্ডভ্যান চৌদ্দগ্রাম জগন্নাথদীঘি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের ফোরলেনের ডিভাইডারের ওপর উঠে যায়। এ সময় এনা পরিবহনের একটি বাস কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থনেই কাভার্ডভ্যান চালক ও বাসের সুপারভাইজার নিহত হয়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য, চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ সদস্য এবং দমকল বাহিনীর সদস্যরা বাসের আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দুর্ঘটনায় নিহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। তবে তারা কাভার্ডভ্যানের চালক ও এনা পরিবহনের সুপারভাইজার বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

লক্ষ্মীপুর- গতকাল রাতে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের যাদৈয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবদুর রহিম নামে মোটরসাইকেল আরোহী একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তার ছোট ভাই মানিক হোসেন। নিহত আবদুর রহিম ও আহত মানিক সদর উপজেলার লাহারকান্দি গ্রামের ফজলুল করিমের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানায়, দুই ভাই বাইকে করে লাহারকান্দি থেকে মান্দারি যাচ্ছিলেন। যাদৈয়া এলাকায় আসার পর একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গেলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বাইকটির ধাক্কা লাগে। এতে দুজনই গুরুতর আহত হয়।

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আবদুর রহিমকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আহত মানিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মুন্সীগঞ্জ- রাত ১১টার দিকে জেলার মুক্তারপুর সেতুর টোল প্লাজার কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় মো. সুমন নামে বাইক আরোহী এক যুবক নিহত হয়েছেন। সুমন নারায়ণগঞ্জের চর সৈয়দপুর গ্রামের মো. জলিলের ছেলে। তিনি ডক ইয়ার্ডের শ্রমিকের কাজ করতেন।

মুন্সিগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ দেখতে পায়। মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে মোটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে ধাক্কায় এই ঘটনা ঘটেছে।

গাইবান্ধা- শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সড়কে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় মাইক্রোবাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলে নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- উপজেলার সাতারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুল ইসলাম (৪৫) ও তার ছেলে স্থানীয় ইউনিক কিন্ডার গার্টেন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মাহি (১০)।

মমিনুল ইসলাম উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুকঘোড়াবান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পরিবার নিয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের প্রফেসরপাড়ায় বসবাস করতেন।

পলাশবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মতিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৭টার দিকে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়ক দিয়ে তিনি পলাশবাড়ী শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় একটি মাইক্রোবাস পেছন থেকে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই বাবা মমিনুল ইসলাম ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর ছেলে মাহির মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত