ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনার লক্ষণ দেখা দিলেই পরীক্ষা করুন: প্রধানমন্ত্রী

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২০, ১২:৪৩  
আপডেট :
 ৩১ মার্চ ২০২০, ১৫:১৪

করোনার লক্ষণ দেখা দিলেই পরীক্ষা করুন: প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলেই পরীক্ষা করানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন নির্দেশনা দিতে গিয়ে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।

করোনার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে কোনো লুকোচুরি করার সুযোগ নেই। লুকোচুরি করলে নিজের জীবনকেই ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া। তাই করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত পরীক্ষা করান।’

করোনা বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করাটা জরুরি। আমাদের দেশটা ছোট কিন্তু জনসংখ্যা বিশাল। এরপরও আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি। সেজন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ পর্যায়ে রয়েছে।’

সাধারণ ছুটি আরও বাড়ানো হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের ছুটিটা একটু বাড়াতে হবে। আমরা ১২ দিনের ছুটি দিয়েছিলাম এটা ১৪ দিন হতে পারে।’

আরও পড়ুন: ৯ তারিখ পর্যন্ত বাড়ছে ছুটি!​

সবাইকে ঘরে অবস্থানের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে মানুষের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আপনারা এসব নির্দেশনা মেনে চলুন। কেননা নিজেদের সুরক্ষা নিজেদেরই করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনার থাবা রয়ে গেছে। আমরা বিশ্ব থেকে দূরে নই। আমাদের আরও সচেতন থাকা দরকার। আমরা আমাদের দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য অনেক আগে থেকেই কাজ করেছি। ভবিষ্যতে যাতে করোনা না ছড়ায় সেজন্য সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে।’

নববর্ষের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সামনে বাংলা নববর্ষ রয়েছে। এই নববর্ষ আমাদের প্রাণের উৎসব। অত্যন্ত উৎসাহ ও জাঁকজমকপূর্ণ উৎসবের মাধ্যমে আমরা এই অনুষ্ঠান পালন করে থাকি। কিন্তু এ বছর আপনারা জানেন, আমরা ১৭ মার্চ ও ২৬ মার্চের সব অনুষ্ঠান সীমিত করেছি। কোনো ধরনের জনসমাগম যেন না হয়, আমরা সে নির্দেশনা দিয়েছি। নববর্ষের জন্যও একই নির্দেশনা থাকবে।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে দরিদ্রদের সহযোগিতায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিত্তবানদের সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম। অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তা হবে দুঃখজনক। এটা আমরা সহ্য করব না।’

তিনি বলেন, ‘ছুটি ঘোষণার কারণে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের সমস্যা হচ্ছে। কৃষক, চা শ্রমিক, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে। তারা দৈনন্দিন কাজে যেতে পারছে না। তাদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সামাজিক কর্তব্য। সেখানে ১০ টাকা কেজি চালসহ নানা সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের কাছে সাহায্য ও খাদ্যদ্রব্য পাঠাতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা করতে হবে। সেই অনুযায়ী সবাই যেন সাহায্য পায়। কেউ যেন বাদ না পড়ে।’

আরও পড়ুন: নববর্ষের সব অনুষ্ঠান বন্ধের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

তিনি আরও বলেন, ‘সাহায্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কোনো রকম দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দুঃসময়ে কেউ সুযোগ নিলে, কোনো অভিযোগ পেলে আমি কিন্তু তাকে ছাড়ব না। বিন্দু পরিমাণ অনিয়ম সহ্য করা হবে না।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলার সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই না, বাইরের কেউ আর ওখানে ঢুকুক। যেহেতু একটা কেস (করোনায় আক্রান্ত রোগী) পাওয়া গেছে। আর যেন সংক্রমিত না হয়, এজন্য সেখানে পর্যটকও যেতে পারবে না। সবই বন্ধ রাখতে হবে। এখন একটা সুযোগ হয়ে গেছে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে সবকিছু যেন ভালোভাবে সংরক্ষিত হয়, সেটা দেখতে হবে। কিন্তু কোনো পর্যটক যেন আর না যায় সেখান।’

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়েই আমরা চিন্তিত। কারণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যদি কোনো কিছু হয়ে যায়, তাহলে খুবই ক্ষতি হবে। এ জন্য বাইরের কোনো লোকের দরকার নেই। আমাদের যারা আছে, তারাই সার্ভিস দেবে। ওখানে তো আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংস্থা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সশস্ত্রবাহিনী, সেনাবাহিনী সকলেই তো আছে। তারা তো কাজ করছে। আমরা নিজেদের লোক দিয়েই সব করাব। বাইরের লোক যেন এই সময়ের মধ্যে বেশি কেউ না যায়, সেটা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত