ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

একটি অটোরিকশার জন্য ‘এতিম’ বন্ধুকে খুন

  বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২০, ১৬:৫৭

একটি অটোরিকশার জন্য ‘এতিম’ বন্ধুকে খুন

রোজগারের পথ বের করতে বন্ধু রুমানকে (২২) হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেয় ঘাতক আসলাম। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসলাম ও তার স্ত্রী খাদিজাকে রিমান্ডে নিলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে।

দুইদিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার পর রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে ওই দুইজনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

পিতা-মাতাহীন রুমান নগরীর সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা সড়কের কুদ্দুস মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া খালা সুমি বেগমের সাথে বসবাস করতো। একই এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা ছিলো আসলাম ও খাদিজা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী মডেল থানার এসআই আল আমিন জানান, দুইদিনের রিমান্ডে আসলাম স্বীকার করে অভাবের তাড়নায় তিন মাস আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ জুন রাতে রুমানকে নিয়ে বাকেরগঞ্জ শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত আনুমানিক ৩টার পরে দুধল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ খান উজ্জলের বাড়ির পাশে অটো থামাতে বলে। অটোতে তার স্ত্রী খাদিজা বেগম, শাশুড়ি সহিদা বেগম ছিলেন। অটোটি থামালে পান খাওয়ার জন্য নিকটস্থ রাঙ্গামাটি নদীর পাড়ে নিয়ে যায় রুমানকে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রুমানকে ল্যাং মেরে ফেলে দিয়ে কোমরে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। তারপর মরদেহটি নদীতে ফেলে দেয়। কিন্তু মরদেহ ভেসে উঠলে নদীতে নেমে পেট চিরে ভাসিয়ে দেয়। ফজরের আজানের দিকে অটোর কাছে ফিরে আসে আসলাম। এসে তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে জানায় রুমানকে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। তারপর আসলাম অটো চালিয়ে তাদেরকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, নিহতের খালা সুমি বেগমের দায়ের করা সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে তারা কাজ শুরু করেন। এরপরে অটো মালিক রিফাতের দায়ের করা মামলায় যার কাছ থেকে অটোটি উদ্ধার করা হয়েছে তাকে ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে আটককৃতরা স্বীকার করেন তারা কিভাবে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।

নিহতের খালা সুমি জানান, ২৯ জুন রাত ১০টায় সাগরদী থেকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৪ নং দুধল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড চাটরার উদ্দেশে রওনা হয়ে যায় রুমান। রাত ৩টার দিকে সর্বশেষ তার সাথে মুঠোফোনে কথা হয় রুমানের। কিন্তু তারপর তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। বোনের ছেলেকে খুঁজে না পাওয়ায় ৩০ জুন কোতোয়ালী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সুমি। এর কিছুদিন পরে রুমানের ভাড়ায় চালানো অটোটির সন্ধান পায় নিহতের স্বজনরা।

সুমি আরো জানায়, অটো নিয়ে বাকেরগঞ্জের দুধল ইউনিয়নের আটরা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস শুরু করে দেয় আসলাম। সন্ধান পেয়ে কোতোয়ালী পুলিশ সাথে নিয়ে ৯ জুলাই বিকেলে অটোটি উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় আসলাম ও তার স্ত্রী খাদিজাকে। ওইদিনই অটোর মালিক রিফাতের দায়ের করা মামলায় আসলাম ও খাদিজাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করলে দুই দিনের রিমান্ড দেন বিচারক।

কোতোয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নতুন করে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। তবে নিহত রুমানের মরদেহ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মরদেহ উদ্ধারে অভিযান চলছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত