ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভাস্কর্য ইস্যুতে নীরব বিএনপি

  কিরণ শেখ

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৮:৫৯  
আপডেট :
 ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:০৮

ভাস্কর্য ইস্যুতে নীরব বিএনপি
ছবি: সংগৃহীত

দেশে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম এই বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে সংগঠনটি বলছে, সব ভাস্কর্যই এই জনপদ থেকে অপসারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সংগঠনটির এই বক্তব্যের পর সাধারণ জনগণ দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করেছিল। কারণ সারাদেশে দলটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনেক ভাস্কর্য রয়েছে। কিন্তু দলটি এখানেও নীরব রয়েছে।

তবে দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, পার্টিতে এ বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কোন মন্তব্য নয়। কিন্তু ভাস্কর্য অপসারণের বিষয় দলটি পর্যবেক্ষণ করছে। দেশের বিভিন্ন সমস্যা আড়াল করতেই সরকার এগুলো করাচ্ছে বলেও মনে করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

হেফাজতের ভাস্কর্য অপসারণের দাবির পরে বামদল ও আওয়ামী লীগের সমমনা কিছু সংগঠনসহ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর প্রতিবাদ জানালেও সরকার বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। এমনকি বিএনপিও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বক্তব্য দেয়নি।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এই বিষয়ে দলে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আর আমরা কোন বিশ্লেষণও করিনি। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, এটা (ভাস্কর্য) ভাঙবে কি কারণে? যদি কোন ব্যক্তির সাথে কারো কোন শত্রুতা থাকে তাহলে সে ভাঙতে পারে। কিন্তু একটা দেশে ভাস্কর্য থাকবে, এতে খারাপ কি। আর ভাস্কর্য ভাঙা খুবই খারাপ।

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক প্রভাবশালী সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন,পার্টিতে এ বিষয়ে এখনো কোন আলোচনা হয়নি। তাই এবিষয়ে আমার কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

এ বিষয়ে বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, কেনো এমন হলো- সেটা নিয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। কারণ দেশের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, সেগুলো আড়াল করতেই সরকার এগুলো করাচ্ছে কি না-সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।

এদিকে ভাস্কর্যকে মূর্তি স্থাপনের সঙ্গে তুলনা করে সেটাকে শিরক বা বিজাতীয় সংস্কৃতি বলে আখ্যা দেয়াকে নোংরা রাজনীতি বলে মনে করে বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট।

এ বিষয়ে গত ২২ নভেম্বর জোটের সভাপতি মাওলানা জিয়াউল হাসান বলেছিলেন, গোঁড়া তালেবানি ভাবধারায় ভাস্কর্য নির্মাণ নিষিদ্ধ, হেফাজতিরা সম্পূর্ণভাবে অ-ইসলামী সেই ভাবধারা প্রবর্তনের কথা বলছে। হেফাজতিরা যদি সত্যিকার অর্থেই ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধী হয়ে থাকেন, তবে এর প্রমাণ তারা তাদের হাটহাজারীর কাছেই অবস্থিত খাগড়াছড়িতে প্রদর্শন করতে পারেন। খাগড়াছড়ি শহরের দ্বারপ্রান্তে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একটি বৃহদাকার ভাস্কর্য রয়েছে। মানুষের এই মূর্তি ভেঙে এরা প্রমাণ করতে পারেন এ বিষয়ে তারা কতটা সিরিয়াস।

তবে দেশের বিরাজমান নৈরাজ্য থেকে জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতেই সরকার আলেমদের মাঠে নামিয়েছে বলে মনে করছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, আজকে চারিদিকে যে নৈরাজ্য, এই নৈরাজ্য থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য সরকারই আলেমদেরকে বিপদে চালিত করেছে। আমি আলেমদের বলবো, অযথা এসব বির্তকের না জড়িয়ে আন্দোলনে আাসেন। দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না তার জন্য আন্দোলনে আসেন। সরকারের কিছু পয়সা পেয়ে তাদের কথায় নাইচেন না, তাদের কথায় নাচলে আপনাদেরই ক্ষতি হবে।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর দক্ষিণে ধোলাইপাড় মোড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু এই ভাস্কর্য স্থাপনের বিরুদ্ধে ইসলামপন্থী কয়েকটি দল কয়েকদিন আগে ঐ এলাকায় সমাবেশ করেছে। এই দলগুলো শেখ মুজিবের ভাস্কর্যকে 'মূর্তি' আখ্যা দিয়ে এর নির্মাণ বন্ধ করা না হলে আরো কর্মসূচি দেয়ার হুমকি দিয়েছে।

আরপ পড়ুন- পুলিশের লাঠিচার্জে পণ্ড ভাস্কর্যবিরোধী মিছিল

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত