ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

১০ বছর ধরে জাল সনদে চাকরি করেন শিক্ষক আবু মীর

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:২৯  
আপডেট :
 ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:৪১

১০ বছর ধরে জাল সনদে চাকরি করেন শিক্ষক আবু মীর
ছবি: প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের জওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ বছর ধরে জাল সনদ দেখিয়ে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন জওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি সহকারী শিক্ষক আবু মীর রায়হান।

জানা গেছে, আবু মীর রায়হান ওই বিদ্যালয়ে ০৫-০৭-২০১১ সালে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। এর প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ে গত ২১ মে ২০১৭ তারিখে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল আলম পরিদর্শন করেন। তার পরিদর্শন তদন্ত প্রতিবেদনে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) মীর রায়হানের নিবন্ধন সনদটি ভুয়া প্রমাণিত হয়।

ঠাকুরগাঁও ডিআইএ ৩৮৫-এস/রাজ ৩৯৯ এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিবন্ধন সনদটি সঠিক নয় বলে এ প্রতিবেদনে জানানো হয়।

পরবর্তীতে নিয়োগ বাতিলের জন্য এসএমসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি সুপারিশ পত্র দাখিল করেন এবং সরকারী কোষাগার থেকে ৭ লাখ ৪২ হাজার ৫৮০ টাকা ফেরত চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পরিচালক বরাবরে একটি সুপারিশ করেন।

এ বিষয়ে জওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধনেশ্বর রায়ের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা স্কুলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে একটি লিখিত মন্তব্য হাতে পেয়েছি আমরা এখন পর্যন্ত আবু মীর রায়হানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি তাকে পর পর ২টি মিটিংয়ে আসতে বলা হয়েছে সে অনুপস্থিত। তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।

এদিকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মোশারফ হোসেন (সবুজ) বলেন, আমরা একটি লিখিত রিপোর্ট পেয়েছি। সেখানে উল্লেখ করা আছে যে, আবু মীর রায়হান ভুয়া সনদ দেখিয়ে এ যাবত চাকরি করে আসছে। সেটি তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। সেটির উপর ভিত্তি করে আমরা পরপর দুটি মিটিং করেছি। এবং তাকে অবগত করেছি সে কোনো প্রকার উপস্থিতি বা উত্তর দেয়নি।

সেই সাথে সদস্য ওয়াহেদুর রহমানও বলেন আমি শুনেছি যে ,সার্টিফিকেট ভুয়া এবং সে অনুযায়ী আমরা চিঠির মাধ্যমে তাকে অবগত করেছি এখন পর্যন্ত তার কোনো উপস্থিতি পাইনি। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যে ব্যবস্থা নেবে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

এদিকে এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুনিরুজ্জামান বাবলু বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরকৃত একটি প্রতিবেদন পেয়েছি। প্রতিবেদন চিঠিতে মীর রায়হানের ভুয়া নিবন্ধন সনদের বিষয়ে অবগত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আমি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে বিষয়টি সকলের অবগত করেছি এবং দুটি মিটিং আয়োজন করেছিলাম কোনো মিটিংয়ে মীর রায়হান উপস্থিত হয়নি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে উপর মহলের চাপের কারণে আপাতত রেজুলেশন করে মীর রায়হানের বিল আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু মীর রায়হানের সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তার কোনো পাত্তাই পাওয়া যায়নি।

এদিকে জাল সনদের বিষয়টি নিশ্চিত করতে ঠাকুরগাঁও ডিআইএ 'কে বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। জাল সনদের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত