ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

২১ মার্চ ১৯৭১

বুলেট-বেয়োনেট দিয়ে বাঙালির দাবিকে স্তব্ধ করা যাবে না

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২১, ০৯:২১  
আপডেট :
 ২১ মার্চ ২০২১, ০৯:২৪

বুলেট-বেয়োনেট দিয়ে বাঙালির দাবিকে স্তব্ধ করা যাবে না
ফাইল ছবি

২১ মার্চ, ১৯৭১। এদিন অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে মুক্তিপাগল হাজার হাজার মানুষের দৃপ্ত পদচারণায় রাজধানী ঢাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে মিছিল যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। মুক্তির শপথ নিয়ে সেখান থেকে মিছিল যায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে। যেকোনো ত্যাগের জন্য জনগণকে প্রস্তুত থাকতে বলেন বঙ্গবন্ধু। আহ্বান জানান শৃঙ্খলা ও ঐক্য বজায় রাখতে।

বঙ্গবন্ধু বলেন, বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অহিংস অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। নীতির প্রশ্নে কোনই আপস নাই এবং আমাদের ভূমিকা অত্যন্ত পরিষ্কার।

অসহযোগ আন্দোলনের ২০তম দিনে বিকালে জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু আরও বলেন, বুলেট-বেয়োনেট দ্বারা কখনো সাড়ে ৭ কোটি বাঙালির দাবিকে স্তব্ধ করা যাবে না।

গুজব ও বিভেদসৃষ্টিকারীদের সম্পর্কে সতর্ক থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভবনে ইয়াহিয়া খানের পঞ্চম দফা বৈঠক হয়। সেটি ছিল অনির্ধারিত বৈঠক। ৭০ মিনিটের ওই বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদ।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত কিছু জানাননি বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, আগের বৈঠকের আলোচনায় উদ্ভূত কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যার জন্য এই বৈঠক।

এর আগে ধানমণ্ডির বাসভবনে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম কৌঁসুলি এ কে ব্রোহির সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বসেন বঙ্গবন্ধু।

এদিকে সন্ধ্যায় পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো কড়া সেনা পাহারায় প্রেসিডেন্ট ভবনে যান। সেখানে ২ ঘণ্টার বেশি সময় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। তবে ওই বৈঠক সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানা যায়নি।

ভুট্টোকে বিমানবন্দর থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে আসার সময় রাস্তার দুপাশে পথচারীরা ভুট্টো-বিরোধী শ্লোগান দেয়।

ওইদিন সেনাবাহিনীর লোকেরা হোটেল কর্মচারীদের জামায় কালোব্যাজ ও বাংলার পতাকা খুলে ফেলার জন্য চাপ দেয়। তবে বাঙালি হোটেল কর্মীরা পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেন, তারা ‘ভাত-পানি’ বন্ধ করে দেবেন। পরে সামরিক কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামলাতে কয়েকজন সামরিক সদস্যকে সরিয়ে নেয়।

হোটেল লাউঞ্জে অপেক্ষমান সাংবাদিকরা সেদিন ভুট্টোর দেখা পাননি। হোটেলে পৌঁছে ভুট্টো সরাসরি লিফটে চড়েন। সাংবাদিকরা লিফটে উঠতে চাইলে ভুট্টোর প্রহরীরা অস্ত্র উঁচিয়ে বাধা দেয়।

এদিকে ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বিকালে চট্টগ্রামের পলো গ্রাউন্ডে এক বিশাল জনসভায় বলেন, আলোচনায় ফল হবে না। এ দেশের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে চাপরাশি পর্যন্ত যখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে মানে না, তখন শাসন ক্ষমতা শেখ মুজিবের হাতে দেওয়া উচিত।

১৯ মার্চ জয়দেবপুরে সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ২০ জন নিহত হওয়ার পর কারফিউ জারি করা হয়েছিল। ২১ মার্চ দুপুর ১২টায় তা ৬ ঘণ্টার জন্য প্রত্যাহার করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আবার কারফিউ জারি করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত