ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

লাপাত্তা মগবাজারের ভবন মালিক!

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২১, ০০:২৫

লাপাত্তা মগবাজারের ভবন মালিক!

মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। যে ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তদন্তের প্রয়োজনে সেই তিনতলা ভবনের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খোঁজ করছে তদন্ত কর্মকর্তারা। বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে ভবন মালিক মশিউর রহমান খোকনকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

শনিবার রাতে পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার এ কে এম রহমতউল্লাহ চৌধুরী বিষয়টি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রমনা থানা-পুলিশের কাছ থেকে মামলার তদন্তভার শনিবার সিটিটিসি বুঝে নিয়েছে।এ ঘটনায় আমরা বিস্তারিতভাবে তদন্ত করতে চাই। শুরুতেই কেন এই বিস্ফোরণ, কারো কোনো গাফিলতি ছিল কি না; সবই জানতে চাই। এ জন্য ভবনমালিক সহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

বিস্ফোরণের ঘটনাস্থলের আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভবনমালিক মশিউর রহমান খোকন ধানমন্ডি থাকেন। পুরো ভবনটি কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেওয়া। নব্বইয়ের দশকে তিনি এই ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। তখন নিচতলার অংশটি ফাঁকা রাখা হয়েছিল ভবনের গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থার জন্য। এই ফাঁকা জায়গাতেই ভবনটির পেছনের অংশে সেপটিক ট্যাংক বানানো হয়েছিল। কিন্তু গত ১৫ বছর আগে ওই ফাঁকা অংশে ভাড়া দেয়ার জন্য দোকান নির্মাণ করেন ভবনমালিক।

গত ২৭ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকায় একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। বাসে, গাড়িতে, পথে থাকা শতাধিক মানুষ আহত হন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১১ জন।

ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের ঘটনায় গত ২৯ জুন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম।

এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা যায়, ধসে পড়া বিল্ডিংয়ের মালিকের অব্যবস্থাপনা, অতি পুরনো বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন, ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করা হয়। এছাড়া, ভবনটির ভাড়াটিয়া শর্মা হাউজের অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার এবং অবহেলা, বেঙ্গল মিটের অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার এবং অবহেলা, গ্র‍্যান্ড কনফেকশনারির অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার এবং অবহেলা, ২য় তলায় সিঙ্গার ইলেকট্রনিকসের অননুমোদিত বৈদ্যুতিক সামগ্রী মজুদ রাখা ও অবহেলা, তিতাস গ্যাস কোম্পানির অবহেলাজনিত গ্যাস সরবরাহ, বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানির ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ, ঘটনাস্থলের সামনে সিটি করপোরেশনের অপরিকল্পিত ও গাফিলতিপূর্ণ ড্রেন খনন এসব কারণের কথা উল্লেখ করা হয়।

এসব বিষয়কে দণ্ডবিধির ৩০৪-ক ধারার অপরাধ উল্লেখ করা হয়েছে এজাহারে। ভবনটিতে অবস্থিত এক অথবা একাধিক প্রতিষ্ঠান এ ঘটনার জন্য দায়ী বলে ধারণা করছে পুলিশ।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, গত ২৭ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রমনা মডেল থানা এলাকার বড় মগবাজারের রেখা নীড় ভবনের কোনো অংশে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ভবনের সামনের ও পেছনের অংশ ধসে পড়ে এবং মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের বিকট শব্দের ফলে ভবনের সামনের তিনটি যাত্রীবাহী বাস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে বাসের যাত্রীরা আহত হন। আশপাশের কয়েকটি ভবন, তার মধ্যে আউটার সার্কুলার রোডের ভবন নং ৭৭, ৭৮, ৭৯/১, ৮১ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের বিপরীত দিকে রাস্তার ওপারের হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ/ওআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত