ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

সড়ক দুর্ঘটনা

দুই সংগঠনের মৃত্যুর হিসেবে আকাশ-পাতাল তফাত

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৫৬  
আপডেট :
 ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:১২

দুই সংগঠনের মৃত্যুর হিসেবে আকাশ-পাতাল তফাত
ছবি- সংগৃহীত

বিগত ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে দুটি বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। তবে দুটি সংস্থার হিসাবের পার্থক্য অনেক। দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির সংখ্যা দুইটি পরিসংখ্যানেই পার্থক্য প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি।

শনিবার একই দিনে দুটি সংস্থা আলাদা আলাদা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গত বছরে সড়ক দুর্ঘটনা এবং তাতে মৃত ব্যক্তির সংখ্যা তুলে ধরে। সড়ক দুর্ঘটনাসহ তাতে নিহত-আহত বা ক্ষয়ক্ষতির হিসেব রাখার জন্য দেশে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নেই। বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এই হিসেব সংরক্ষণ করে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘২০২১ সালের সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সেখান তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে সারাদেশে ৫ হাজার ৩৭১টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন।

অন্যদিকে বেলা ১১ টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘২০২১ সালের সড়ক দুর্ঘটনা পরিসংখ্যান উপস্থাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নিসচা। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছর দেশে সর্বমোট ৩ হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘঠিত হয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ২৮৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৪২৪ জন।

সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা এই দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যার পার্থক্য ১ হাজার ৫৭৮ এবং দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির সংখ্যার পার্থক্য ১৯৯৫।

দুটি সংস্থার পরিসংখ্যানের এই বিশাল পার্থক্য দেখে বিশেষজ্ঞদের মতামত, একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তি ও পদ্ধতি মেনে দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা নিরূপণ করা প্রয়োজন। তাহলে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনার একটি নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বক্তব্য অনুযায়ী, গত ৩ বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ছাড়া অন্যান্য দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় সমান। মূলত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ার কারণে ২০২১ সালে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির মোট সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৫০ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং সে সকল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়েছে ৫১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ২১ শতাংশ। করোনার বিধিনিষিধের কারণে অফিস-আদালত, দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধ ছিল। তাতে ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কম হওয়ার কথা থাকলেও আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয়েছে, যেটা উদ্বেগজনক।

নিসচার পক্ষ থেকে তাদের পরিসংখ্যান নিয়ে জানানো হয়, এই পরিসংখ্যান ও প্রতিবেদনের কাজটি করা হয়েছে পুরোপুরি সেকেন্ডারি তথ্যের ভিত্তিতে। মূলত ১১টি জাতীয় দৈনিকের তথ্য, অনলাইন পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তথ্য এবং নিসচার শাখা সংগঠনগুলোর প্রতিবেদন থেকেই এই পরিসংখ্যান তৈরি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত বছর বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনায় ৮০৩ জন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার কথাও তাদের প্রতিবেদনে উঠে আসে।

সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে এই বিশাল পার্থক্যের ব্যাপারে এ আর আইয়ের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বিভিন্ন পত্রিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। কেউ হয়তো চারটি পত্রিকার সংখ্যা নেয়, কেউ আটটি। এ জন্যই তাদের সংখ্যায় এত তারতম্য হয়। দেশে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উন্নত পদ্ধতি মেনে দুর্ঘটনার সংখ্যা নিরূপণ করা উচিত।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত