ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩০ মিনিট আগে
শিরোনাম

আওয়ামী লীগ না থাকলে বাংলা ভাষা মর্যাদা পেতো না: প্রধানমন্ত্রী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৮:৫৬  
আপডেট :
 ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৯:১৮

আওয়ামী লীগ না থাকলে বাংলা ভাষা মর্যাদা পেতো না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন না করলে পাকিস্তান শাসনতন্ত্রে বাংলা ভাষা মর্যাদা পেতো না। তখন ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ঘোষণা করা হয়। শহীদ মিনারের জন্য বাজেটও করা হয়। তবে আইযুব খান সামরিক শাসন দেওয়ার পর সেটা তখন এগোয়নি।

বুধবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য যত শর্ত রয়েছে, তার সবই বাংলাদেশ পূর্ণ করেছে। বাংলাদেশ শিগগিরই উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থানটাকে উন্নত করতে পারবো। সেই পর্যায়ে এসে গেছি। ইনশাআল্লাহ সেই ঘোষণা শিগগিরই আসবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু যে জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের সঙ্গে তো নিম্ন শব্দটি থাকতে পারে না। যে কয়টি ক্যাটাগরিতে অর্জন থাকলে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেতে পারি, তার প্রতিটি শর্তই বাংলাদেশ এখন পূর্ণ করেছে। কাজেই আমাদের মর্যাদাটা আরও এক ধাপ ওপরে এগিয়ে নিতে পারবো।

শ্রীলঙ্কায় এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের কিছু কিছু চিত্র দেখেছি। এজন্য সত্যিই আমরা আনন্দিত। জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত সব দেশে যেন এই দিবসটি পালিত হয়, আমরা এর জন্য তথ্য সব জায়গায় পাঠিয়েছি। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকেও প্রতিবছর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া উচিত। তাহলে সবাই বিষয়টি জানতে পারবে।

পাকিস্তান সরকারের সময় বাংলা ভাষা ব্যবহারে বিভিন্ন বিধি-নিষেধের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাভাষা নিয়ে অনেক যন্ত্রণা আমাদের সইতে হয়েছে। ভুক্তভোগী হিসেবে আমাদের বিষয়টি মনে আছে। একসময় আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হলো বাংলা অক্ষরে বাংলাভাষা লেখা যাবে না। আরবি হরফে বাংলা লিখতে হবে, এই দাবির প্রতিবাদ করলো বাঙালিরা। তারপর বলা হলো, রোমান হরফে বাংলা লিখতে হবে। এরও প্রতিবাদ হলো। তারপর এলো রবীন্দ্রনাথ পড়া যাবে না। তিনি হিন্দু। এ জন্য তার লেখা পড়লে আমাদের মুসলমানিত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের লেখাগুলোকে মুসলমানি ভাষা দেয়া হবে। তার ‘মহাশ্মশান’ হয়ে গেলো ‘গোরস্থান’। ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি’কে পরিবর্তন করা হলো। লেখা হলো, ‘ফজরে উঠিয়া আমি দেলে দেলে বলি।’ আমাদের ছাত্রজীবনে কত রকমের যন্ত্রণাভোগ করেছি, তা বুঝতে পারছেন।’

রক্তের অক্ষরে ভাষার মর্যাদাকে রক্ষার প্রসঙ্গে টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য বিরাট গর্বের। কাজেই এই ভাষার ব্যবহার ও চর্চা ভুলে গেলে চলবে না। বাঙালি হিসেবে সব ঐতিহ্য আমাদের ধারণ করতে হবে। চর্চা করতে হবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি প্রতিবছর জাতিসংঘে বাংলাভাষায় ভাষণ দিয়ে থাকি।

একুশের পথ ধরে স্বাধীনতা এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার ভাষার ওপর, সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়। সেই ষড়যন্ত্রটা পাকিস্তানি শাসকেরা আমাদের ওপর করেছিল। এরই পথ ধরে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছি। রাষ্ট্র পেয়েছি।

এসআইএস/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত