ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের নামে প্রধান শিক্ষকের চাঁদাবাজি!

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০১৮, ১৬:৫৯

মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের নামে প্রধান শিক্ষকের চাঁদাবাজি!

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার আগামী ১২ মার্চ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে আসবেন। তিনি ওই দিন সকাল ১০টায় মা সমাবেশসহ বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। এসব কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে বাঁশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই অনুষ্ঠানকে পুঁজি করে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের কাছ থেকে বিভিন্ন হারে চাঁদা তুলছেন। অথচ উপজেলা প্রশাসন বলছে, মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ আছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঁশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল্লাহ অভিভাবক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে ২০০ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিয়েছেন। প্রবাসী অভিভাবকদের ওপর ধার্য করেছেন বেশি। বিদ্যালয়ের ৬৩০ জন ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকদের যাঁকে যেখানে পান ডেকে চাঁদা দেওয়ার অনুুরোধ জানাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। তবে চাঁদার কোনো রসিদ দিচ্ছেন না তিনি।

অভিযোগের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘গত ৫ মার্চ চট্টগ্রাম জেলার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোলতান মিয়া স্যার উপজেলা মাসিক শিক্ষা সমন্বয় সভায় নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমি ধনাঢ্য অভিভাবক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা উঠাচ্ছি। জোরপূর্বক কারো কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছি না। কোনো অভিভাবকের অভিযোগ থাকলে তা আমাকে জানাতে পারেন।’

কয়েকজন অভিভাবকের নাম ও টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে রসিদ দেননি কেন জানতে চাইলে, প্রধান শিক্ষক কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বলেছেন, অনুষ্ঠানটিতে উপজেলার ১৫৮টি বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও প্রধান শিক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন। এটা বাঁশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান নয়। অনুষ্ঠানের কথা বলে প্রকাশ্যে অভিভাবকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় কিছুতেই কাম্য নয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) অনুষ্ঠানের জন্য চাঁদা তোলার কথা বলেননি। এলাকাভিত্তিক সমাজসেবকদের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য দানশীল ব্যক্তিদের উদ্বুদ্ধ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। চাঁদার কথা বলেননি।

জানতে চাইলে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল দাশ বলেন, ‘অন্যদের কাছ থেকে চাঁদা উঠানোর খবর আমি জানি না। তবে আমি চাঁদা নয়, ব্যক্তিগত তরফ থেকে ২০ হাজার টাকা অনুষ্ঠানের জন্য অনুদান দিয়েছি।’ বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি করা হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এটা সরকারি অনুষ্ঠান। এখানে সরকারি বরাদ্দ আছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের অনুষ্ঠানের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখানে কারো কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার দরকার নেই। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।’

বাঁশখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম মোসতাক আহমেদ বলেন, ‘কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ওই শিক্ষককে সতর্ক করে দিয়েছি।’

/এসকে/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত