ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

শেরপুরে মদনা টিয়ার আবাসস্থল ধংসের পাঁয়তারা

  সুজন সেন, শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৪, ০৯:১২

শেরপুরে মদনা টিয়ার আবাসস্থল ধংসের পাঁয়তারা
শেরপুরে মদনা টিয়ার আবাসস্থল ধংসের পাঁয়তারা। ছবি: প্রতিনিধি

বিপন্ন প্রজাতির মদনা টিয়ার নিরাপদ আবাসস্থল শেরপুরের নালিতাবাড়ীর বনাঞ্চল শালবন ধংসের পাঁয়তারা চলছে। প্রকৃতিপ্রেমীদের অভিযোগ, বছর কয়েক আগে বনের গাছ কাটার উদ্যোগ নিয়েছিল একটি কুচক্রী মহল। পরে স্থানীয় বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের প্রতিবাদের মুখে ওই বৃক্ষ নিধন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আবারও পাহাড়ি অঞ্চলে থাকা একটি চার্চ কর্তৃপক্ষ শালবন কাটার উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যদিকে সরেজমিনে পরিদর্শনের পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

নালিতাবাড়ীর একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা ও শিক্ষক সোহেল তালুকদার বলেন, উপজেলার পানিহাতা গারো পাহাড়ে গড়ে উঠা সেন্ট এন্ডুজ মিশন বা সাধু আনিদ্রয়র নামে একটি চার্চের লোকজন শালবন কাটতে চাইছে। যেসব গাছ কাটা হবে ইতোমধ্যে তা মার্কিংও করা হয়েছে। আমি এর প্রতিবাদ জানাই।

শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটির সভাপতি সুজয় মালাকার জানান, পানিহাতা চার্চ এলাকার শালবাগানে বিপন্ন প্রজাতির মদনা টিয়ার আবাসস্থল। ৩-৪ বছর আগে সেখানে মাত্র কয়েক জোড়া মদনা টিয়া ছিল। তখনও শাল গাছ কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল কিন্তু তাদের প্রতিবাদের মুখে তা স্থগিত হয়ে যায়।

সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে ওই শালবনে দুই শতাধিক মদনা টিয়া ছাড়াও পাহাড়ি ময়না, লটকন টিয়াসহ নানা প্রজাতির পাখির আবাসস্থল। এছাড়া এই বনাঞ্চলে বুনোহাতি, গোড়খোদক শূকর, উড়ুক্কু কাঠবিড়ালিসহ মহাবিপন্ন প্রাণীর দেখা মেলে।

শহীদুজ্জামান আরও বলেন, বনের গাছ এবং বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত বনভূমি ধংস করা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী। তাই দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রীসভার নিয়মিত বৈঠকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞার আইন অনুমোদন করা হয়। পানিহাতা চার্চের পুরোহিত রেভারন্ড চাম্বু ম্রং বলেন, এ বনভূমিতে চার্চের ৪১ একর জমি রয়েছে। সেখানে শালবনও আছে। ওইসব শালগাছ কাটার কোনো উদ্যোগ স্থানীয় চার্চ কর্তৃপক্ষ নেয়নি। তবে ঢাকার ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তা তার জানা নেই।

পানিহাতা বনভূমির আওতাভুক্ত গোপালপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা সাব্বির জাহাঙ্গীর বলেন, পানিহাতা চার্চ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গাছ কাটার জন্য একটি আবেদনপত্র পেয়েছি। সরেজমিন পরিদর্শন শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকার ‘সেইফ দ্য নেচার বাংলাদেশ’ এর চেয়ারম্যান আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বনের গাছ কাটা তো দূরের কথা বাসা-বাড়িতে বনজ গাছ রোপণ করলে তা কাটতেও বন বিভাগের অনুমতি লাগে। তাছাড়া পানিহাতা চার্চ কি ভাবে ৪১ একর বনভূমির জমি পেল তা অনুসন্ধান করে দেখা দরকার।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত