বনশ্রীতে যাত্রীবাহী বাস উল্টে খালে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:২২ আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯
রাজধানীর বনশ্রীতে আলিফ পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে রামপুরা খালে (নড়াই নদী) পড়ে তিনজন আহত হয়েছেন। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে মেরাদিয়া বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার।
তিনি বলেন, আজ (শনিবার) বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটের দিকে বনশ্রীর মেরাদিয়া এলাকায় আলিফ পরিবহনের একটি বাস উল্টে খালে পড়ে যায়। খাল থেকে বাসটি উদ্ধার করতে পুলিশ আমাদের খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে রামপুরা যাওয়ার পথে আলিফ নামে যাত্রীবাহী বাসটি হঠাৎই বাঁ দিক থেকে রাস্তার ডান পাশে খালে গিয়ে পড়ে। এসময় প্রথমে স্থানীয়রা উদ্ধার শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি টিম এসে উদ্ধার কাজে যোগ দেয়।
বাসটিতে ৩০-৩৫ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা যায়। এই ঘটনায় একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকি যারা ছিলেন তাদের উদ্ধার করে পাশের এক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এক নারী যাত্রীকে নামাতে গিয়ে পড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে অন্য যাত্রীরা হেলপারের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কয়েকজন যাত্রী চালককে মারধর শুরু করে। এরইমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি খালে পড়ে যায় বলে জানান বাসের যাত্রীরা।
বাসে থাকা এক যাত্রী বলেন, ‘চার নারী ও দুই পুরুষ যাত্রীর সঙ্গে প্রথমে বাসের কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। কন্ট্রাক্টরের চাওয়া অনুযায়ী ১৫ টাকা করে তাঁরা ভাড়াও দেন। তবে ওই যাত্রীদের যেখানে নামানোর কথা ছিল, সেখানে নামানো হয়নি। গাড়িটি রানিংয়ের ওপর ছিল। এক নারী নামার সময় পা পিছলে পড়ে যান। পরে দুই পুরুষ যাত্রী চালকের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ান। তারা চালকের কলার ধরে মারধর করেন। আমরা মারধর করতে নিষেধ করি। তবে তাঁরা থামছিলেন না। তাদের প্রশাসনের লোক মনে হয়েছিল। পরে বাসটি বনশ্রীতে ফেমাস হসপিটালে সামনে এসে থামে। তখনও যাত্রীরা চালককে মারধর করছিলেন। চালক মারধর থেকে বাঁচতে বাসটি নদীর দিকে নিয়ে যান। এরপর চালক গ্লাস ভেঙে বের হয়ে যান। কিছু যাত্রী নদীতে পড়ার আগেই লাফিয়ে বের হন। তবে কিছু যাত্রী নদীতে পড়ে যান, তারাও পরবর্তীতে বের হন।
রামপুরা থানার এসআই গোলাপ মাহমুদ বলেন, ‘ডেমরার মস্ত মাঝি এলাকা থেকে চারজন নারী ও দুজন পুরুষ যাত্রী বাসটিতে ওঠেন। তাদের মেরাদিয়া বাগান বাড়ি এলাকায় নামার কথা ছিল। তাদের ঠিকমতো নামিয়ে দেননি গাড়িচালক। একজন নারী বাস থেকে নামার সময় পড়ে যান। তখন তার সঙ্গে থাকা দুই পুরুষ যাত্রী গাড়ি চালককে গাড়িটি থামিয়ে ভালো করে নামানোর অনুরোধ জানান। তবে গাড়িচালক তাদের অনুরোধ না শুনে চালাতে থাকেন। এরপর ওই দুই পুরুষ যাত্রী গাড়ি চালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। চালককে মারধর করেন। একপর্যায়ে গাড়িটি উল্টে খালে পড়ে যায়। এতে কয়েকজন যাত্রী আহত হন।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দৌলত খান জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আলিফ নামের একটি বাস উল্টে খালে পড়ে যায়। এতে তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গাড়িটি উদ্ধার কাজ চলছে। আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নিহতের কোনও খবর নেই বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ