ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১০

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ মে ২০১৮, ০৮:২৫  
আপডেট :
 ২৫ মে ২০১৮, ১১:৫২

সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১০

রাজধানী সহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অন্তত ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ জার্নাল প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঢাকা: রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামরুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শুক্রবার রাত পৌনে ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

র‌্যাবের দপ্তর থেকে পাঠানো ক্ষুদেবার্তায় জানানো হয়, র‌্যাব-২ এর একটি দল ও মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলাগুলিতে তেজগাঁও রেললাইন বস্তি এবং মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কামরুল নিহত হয়। নিহত কামরুল ১৫টিরও বেশি মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাদক সম্রাট রাজন নিহত হয়েছে। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে শহরের পুরো‌হিত পাড়া রেলওয়ে ক‌লোনি ভাঙ্গা ওয়াল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা, গু‌লির খোসা ও চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, শহরের পু‌বো‌হিত পাড়া রেলওয়ে ক‌লোনি ভাঙ্গা ওয়াল এলাকায় রেনু বেগ‌মের বাড়ির দক্ষিণ পশ্চিম কোনে পুকুর পা‌ড়ে ময়মন‌সিং‌হের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আলালসহ কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদক ভাগাভাগি করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে অভিযানে যায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ রাজনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহত রাজ‌নের বিরুদ্ধে মাদকসহ অন্যান্য আইনে ৮/৯ টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

নেত্রকোনা: নেত্রকোনা সদরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাতপরিচয় দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মদনপুর ইউনিয়নের মনাং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. বোরহান উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, মাদক কেনাবেচা হচ্ছে এমন গোপন খবর পেয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এতে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়। তাদের নামপরিচয় এখনও জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে ৭০৫ গ্রাম হেরোইন, তিন হাজার পিস ইয়াবা ও দু’টি পাইপগান জব্দ করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় এসআই জলিল, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জাকির ও কনস্টেবল ওয়াহিদ আহত হয়েছেন।

শেরপুর: শেরপুরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু নামের এক ব্যক্তি।

বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বন্দুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের দাবি, কালু শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী। বন্দুকযুদ্ধের সময় তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।

কুমিল্লা: কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে কামাল ওরফে ফেন্সি কামাল নামে এক মাদক ব্যবসায়ী। এসময় গ্রেপ্তার করা হয় আরও দুই মাদক ব্যবসায়ীকে। আহত হয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের ৩ সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি ও ৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কামালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২ টি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোজ কুমার দে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের একটি দল বুড়িচং উপজেলার মহিষমাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকব্যসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে মাদক ব্যবসায়ী কামাল গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান। এসময় গ্রেপ্তার করা হয় কামালের দুই সহযোগী হানিফ ও ইলিয়াছ-কে।

নিহত কামাল আদর্শ সদর উপজেলার রাজমঙ্গলপুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে।

সাতক্ষীরা: জেলার কলারোয়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ইউনুস আলী দালাল নামে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি গ্রামে এ গোলাগুলি ঘটনায় নিহত ইউনুস আলী দালাল নিহত হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কলারোয়ার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহ দালালের ছেলে ইউনুস একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলার বিচার চলছে বলে জানিয়েছেন কলারোয়ার থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ।

তিনি আরও জানান, রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি সীমান্তে দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এসময় মাদক বিক্রেতারা একটি বিলের মধ্যে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে বাচাঁও বাঁচাও বলে চিৎকার শুনে পুলিশ সদস্যরা বিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইউনুসকে পায়। তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউনুসকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শামীম সরদার ওরফে মামুন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। পুলিশ বলছে, তিনি একজন মাদক ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে মোবারকগঞ্জ চিনিকলের উত্তরে আড়পাড়া ওয়াপদা মাঠে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। তবে নিহতের স্ত্রী দাবি করেছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ধরে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত শামিম সরদার কালীগঞ্জ শহরের শিবনগরের মমিন সরদারের ছেলে। সে পেশায় একজন মোটরপার্টস বিক্রেতা ও রং মিস্ত্রি।

তবে স্থানীয়রা বলছে, সে পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হলেও মাদক ব্যবসায় যুক্ত ছিলো। শামিম ব্যবসার আড়ালে নিয়মিত মাদক বেচাকেনা পরিচালনা করতো।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান খান জানান, কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন আড়পাড়া এলাকার ওয়াপদা সড়কে একদল ব্যবসায়ী মাদক বেচাকেনা করছে এমন সংবাদ পেয়ে রাত ১১টার দিকে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম সেখানে যায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোঁড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও মাদক ব্যবসায়ী শামিমকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এসময় কর্তব্যরত ডাক্তার মাহফুজুর রহমান সোহাগ তাকে মৃত ঘোষণা করে।

কক্সবাজার: কক্সবাজারে বৃহস্পতিবার রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দু’জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন উখিয়া টেকনাফের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আব্দুর রহমান বদির বড় বোন শামসুন্নাহারের দেবর এবং টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য রয়েছেন।

পুলিশের দাবি, দু’জনই ইয়াবা ব্যবসায়ী। প্রতিপক্ষের সঙ্গে গোলাগুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জেলার মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের পাহাড়তলীতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দু’পক্ষের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মোস্তাক আহমদ নামে এক ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হন।

ঘটনাস্থল থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা ও ৩টি বন্দুক উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

তিনি আরও জানান, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই সময় অন্যান্যরা পালিয়ে গেলেও এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহটি একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোস্তাকের বলে সনাক্ত করা হয়।

তার বিরুদ্ধে অস্ত্র এবং মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।

এদিকে, শুক্রবার ভোরে কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ সড়কের দরিয়ানগর ২ নাম্বার ব্রিজ এলাকা থেকে আকতার কামাল (৪১) নামে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আকতার কামাল উখিয়া টেকনাফের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আব্দুর রহমান বদির বড় বোন শামসুন্নাহারের দেবর এবং টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য।

মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির আইসি পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, ভোরে দরিয়ানগর ব্রিজ এলাকায় গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ টহলে যায়। এক পর্যায়ে সেখানে সড়কের পাশে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পায়।

লাশের পাশে এক হাজার পিস ইয়াবা, ১টি এলজি ও ৪ রাউন্ড গুলি পড়ে ছিল। পরে স্থানীয়রা এসে লাশটি এমপি বদির বেয়াই আকতার কামালের বলে সনাক্ত করেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তার ধারণা, প্রতিপক্ষের মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে আকতার কামালের মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা ইয়াবা, বন্দুক ও গুলিগুলো উদ্ধার করেছে পুলিশ। আখতার কামাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবার গডফাদার বলেও জানান পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।

এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত