ঢাকা, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

স্পার আড়ালে অনৈতিক বাণিজ্য আরো রমরমা

  আহমেদ ইসমাম

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০১৯, ২০:২৫

স্পার আড়ালে অনৈতিক বাণিজ্য আরো রমরমা
গত ২২ সেপ্টেম্বর গুলশানে ৩টি স্পা সেন্টারে অভিযান চালিয়েছিল গুলশান থানা পুলিশ: ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় ক্যাসিনো ও জুয়ার আসরে অভিযানের সময় গত ২২ সেপ্টেম্বর গুলশানে ৩টি স্পা সেন্টারে অভিযান চালিয়েছিল গুলশান থানা পুলিশ। স্পা সেন্টারগুলো হলো- ম্যাঙ্গো স্পা, লাইভ স্টাইল হেল্থ ক্লাব অ্যান্ড স্পা অ্যান্ড সেুলন, রেডিডেন্স সেলুন-২ অ্যান্ড স্পা। এরপরই অনেকটা থমকে গিয়েছিল রাজধানীতে স্পার আড়ালে অনৈতিক বাণিজ্য তথা দেহ ব্যবসা। তবে মাস পেরোতেই আরো রমরমা এসব স্পা সেন্টার।

আবারো জামে উঠেছে বডি ম্যাসেজের আড়ালে অসামাজিক ব্যবসা। যাদের খদ্দের উঠতি বয়সের বৃত্তবান পরিবারের সন্তানসহ দেশি বিদেশি বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিরা। এসব ব্যবসা ঘিরে প্রতিদিন লেনদের হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

গুলশানের আবাসিক ও অফিস পাড়ায় নামে বেনামে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক স্পা সেন্টার। এমনি কয়েকটি স্পা সেন্টারে ঘুরে দেখা যায়, আগের চেয়েও ভাল ব্যবসা করছে তারা। জনসমাগমও ভাল। ভিতরে ঘরগুলোতে ছোট ছোট ঘরের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে কেবিন। যেকানে বাইরে থেকে ভিতরে কি হচ্ছে তা কোনোভাবেই বোঝার উপায় নাই। বিভিন্ন রংয়ের আলোয় ঝলমল করছে স্পা সেন্টারগুলো। তবে বাইরের হালচাল দেখে বোঝার উপায় নাই এগুলো স্পা সেন্টার।

সূত্র জানায়, গত মাসে অভিযানের পর কয়েকদিন বন্ধ ছিল স্পা সেন্টারগুলো। তবে এখন আবারো আগের মতই চলছে। খদ্দেরদের আকর্ষণ বাড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারও চালায় তারা। সেখান থেকেই ফোন নাম্বারের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। কোনো রকমের সন্দেহ হলেই ভুল ঠিকানা দিয়ে এড়িয়ে চলা হয়।

পরিচয় গোপন রেখে গুলশান দুইয়ের ডি ব্লকের ৩৮ নাম্বার সড়কের ব্লু তারা নামের একটি স্পা সেন্টারে গেলে সেন্টারটির তত্বাবধায়ক ওবাইদুর জানান, আমরা মূলত বডি মেসেজের ব্যাপারে কথা বলি। বাকি বিষয়গুলো ভেতরে কথা বলে নিতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা কোনো কথা বলব না। এখানে শুধু কেন মেয়েরাই বডি মেসেজ করে ছেলেরা কেন নয় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলে, মেয়েদের চাহিদা বেশি। গ্রাহকদের বড় অংশই ছেলে তাই মেয়েদের চাহিদা বেশি। পুলিশের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটা আমাদের ব্যাপার পুলিশের বিষয়টি আমরা ম্যনেজ করে চলি। সে ব্যপারে কোনো সমস্যা নাই। সূত্র মতে, স্পা সেন্টারগুলোতে একেকজন খদ্দেরকে মনোরঞ্জনের বিশ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। যার ষাট শতাংশ পায় স্পা সেন্টার কর্তৃপক্ষ। আকার ভেদে দিনে একশজন পর্যন্ত খদ্দের আসে একেকটি স্পা সেন্টারে।

নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক গুলশানের একটি স্পা সেন্টারে কাজ করে এমন একজন বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, শুধু বডি মেসেজ করলে যা বেতন পাই তা দিয়ে চলে না। বাড়তি কিছু কামাই করার জন্যই এ সব করি। যারা এ সব জায়গায় আসেন তাদের বডি মেসেজের দিকে আকর্ষণ কম থাকে। যার ফলে আমরাও সেই দিকে গুরুত্ব বেশি দেই। দিন শেষে আয়ও ভাল হয়।

স্পা সেন্টারগুলো বৈধ না অবৈধ এমন প্রশ্নের উত্তরে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, এ সব বন্ধের ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। আপনি আমাদের ঠিকানা দেন এখনি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতে ফিজিও থেরাপিস্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ডঃ জয়নুল আবেদিন। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, বডি ম্যাসেজ অনেক কঠিন একটা কাজ। বডি মেসেজ করতে অনেক নিয়ম জানার দরকার আছে। চাইলেই যে কেউ এই কাজ করতে পারবে না। অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে করালে বড় ধরনের সমস্যা হয়ে যেতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত