ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

রামগঞ্জ পৌর শহরের রাস্তাই পৌরবাসীর গলার কাঁটা

  রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:১৮

রামগঞ্জ পৌর শহরের রাস্তাই পৌরবাসীর গলার কাঁটা

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়ে পৌরবাসীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। শহরের সবগুলো সড়কে বিশাল বিশাল গর্তের কারনণ জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই বিশাল আকৃতির গর্তে কাদা পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

১৭ বছর উক্ত সড়কগুলোতে কোন প্রকার সংস্কার না করায় দুর্ভোগ নিয়ে বছরের পর বছর বাধ্য হয়ে চলাচল করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। বর্তমান সরকার দেশব্যাপী চলমান উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করলেও রামগঞ্জ পৌর কতৃপক্ষ ভ্রুক্ষেপ করছে না।

প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান মেয়র বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় পৌরসভাব্যাপী জনসাধারণের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত রামগঞ্জ পৌরসভা। ২০০৩ সালে ‘খ’ শ্রেণী থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নীত করে পৌর শহরের সবক’টি রাস্তাই পিছঢালাই করা হয়।

এরপর এক এক করে ৫ জন মেয়র পরিবর্তন হলেও সড়কগুলো সংস্কার না করায় বর্তমানে চলাচলে জনসাধারণের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে বাইপাস সড়কটিতে বিশাল বিশাল গর্তের কারণে যানবাহন ও সাধারণের চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই খানাখন্দগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়াও রামগঞ্জ হাসপাতাল সড়ক, রামগঞ্জ থানা ও সাব রেজিস্ট্রি অফিস সড়ক, রামগঞ্জ সোনাপুর বাইপাস সড়ক, সোনাপুর থেকে চিতুসী চৌরাস্তা সড়ক, রামগঞ্জ সরকারি কলেজ ও রামগঞ্জ রাব্বানীয়া কামিলা মাদ্রাসা সড়ক, রামগঞ্জ ওয়াপদা সড়ক, রামগঞ্জ মাছ বাজার সড়কসহ প্রত্যেকটি সড়কে বিশাল বিশাল গর্তে সয়লাভ।

বাইপাস সড়কের ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও কয়েকজন অভিবাবকসহ শিক্ষার্থী জানান, সড়কটির দুপাশে ১০/১২টি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং স্কুল কলেজ রয়েছে। বিশাল আকৃতির গর্তের কারণে জরুরি প্রয়োজনে মুমূর্ষু রোগীদের স্থানান্তরে চরম সমস্যায় পড়তে হয়ে। এ সড়ক দিয়ে যেতে হয় রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সেও। বর্তমানে এ সড়কের অবস্থা নাজুক। রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হলেও বিদ্যালয়ের সামনের সড়কটি দিয়ে শিক্ষার্থীরাসহ সাধারণ পথচারীদের হেঁটে যেতে জামা-কাপড় নষ্ট হচ্ছে।

রামগঞ্জ পাট বাজার সড়কের ব্যবসায়ী মোঃ বাবলু মিয়া জানান, একটা সময় এ সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করতো। এখন জনশূন্য। রাস্তা খারাপ হওয়ায় একান্ত বাধ্য না হলে মানুষ এখন আর এ সড়কে চলাচল করেন না।

একজন সরকারি চাকুরীজিবী জানান, একটা প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার রাস্তাঘাট এতটা নাজুক হতে পারে তা ভাবাই যায় না। এমন বেহাল অবস্থা যে সামান্য বৃষ্টি হলেই লোকজনকে হাঁটু পর্যন্ত প্যান্ট-কাপড় উপরে উঠিয়ে চলতে হয়।

তিনি আরো জানান, বালুয়া চৌমুহনী থেকে কাশেম মাস্টার সড়ক, হাজি বাড়ির সড়ক, জামতলী বাজার সড়কগুলোও ভেঙ্গেচুরে একাকার।

বীমাকর্মী রহমত উল্যা পাটোয়ারী জানান, রামগঞ্জ কাঁচাবাজারের প্রধান সড়কটি এতই বেহাল অবস্থা যে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান পানি জমে যায় যেন দেখার কেউ নেই।

নাম প্রকাশ্যে অনিশ্চুক কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, পৌরসভার মেয়র সাহেব তো বেশীর ভাগ সময় ঢাকা থাকেন এবং এলাকায় আসলেও পাজেরো গাড়ীতে চলেন। তাই উনার কোন সমস্যা হয় না। স্থানীয় জনগন আমাদের গালাগালি করেন। জনগণের পক্ষ থেকে সড়কগুলো মেরামতের জন্য বারবার মেয়রের কাছে আবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

তিনি আরো জানান, শুধুমাত্র পৌর শহরের রাস্তাগুলো সংস্কার করা হলেই পুরো শহরের চেহারা পাল্টে যাবে।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী জানান, কয়েকটা রাস্তার টেন্ডার হয়েছে এবং আরো কিছু রাস্তা টেন্ডারাধিন আছে। আসা করি কয়েক মাসের মধ্যে সকল রাস্তার সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত