ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জট খুলছে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৩:২৬  
আপডেট :
 ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৫৯

নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জট খুলছে

ছয় বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে জট খুলছে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির। সারা দেশে সংসদ সদস্যদের চাপ এবং আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এমপিও নীতিমালা খতিয়ে দেখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের মাদরাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রওনক জাহানকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কারিগরি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বিল্লাল, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে যুগ্ম সচিব (মাদরাসা) এনামুল হক, যুগ্ম সচিব (কারিগরি) সফিউদ্দিন আহমেদ এবং মাদরাসা বিভাগের উপসচিব ওয়াদুদ হোসেন। কমিটিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন: ‘এনটিআরসিএ মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ’

এ ছাড়াও সংশোধিত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা ও ২০০৬ এর আলোকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি এমপিও ও নীতিমালা অন্তর্ভুক্তকরণ এবং জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এমপিও নির্দেশিকা অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির যৌক্তিকতা ও শর্তাবলী পরীক্ষা করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির শিগগিরই প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের আলোকে বর্তমানে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি প্রদান বন্ধ রেখেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিগগিরই দুই মন্ত্রণালয় যৌথ বৈঠক করে এমপিও সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করবে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে কমিটির একজন যুগ্ম সচিব বলেন, আমাদের দায়িত্ব হলো পুরোনো এমপিও নীতিমালার আলোকে নতুন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা। সর্বশেষ ২০১১ সালে এমপিও দেয়া হয়েছিল। এরপর এনটিআরসিএ মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ এবং ৮ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন হয়েছে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন এমপিও দিতে হলে নতুন করে কিছু ধারা সংযোজন করতে হবে। আমরা মূলত এসব বিষয় খতিয়ে দেখবো। চূড়ান্ত এমপিও দেয়ার এখতিয়ার সরকারের।

আরো পড়ুন: শিক্ষা সংক্রান্ত অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে দুদকের ৩৯ সুপারিশ

আর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি সময়েরও দাবি। সংসদে এমপিদের তোপের মুখে পড়তে হয় আমাদের। কিন্তু আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এখন প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এমপিও দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই নতুন এমপিও দেয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে পারব।

কর্মকর্তারা জানান, নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও দিতে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিবে। এর মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়নি। নতুন করে এমপিও দিলে অর্থ যোগান কীভাবে হবে এটি হবে নতুন চ্যালেঞ্জ। তবে এমপিরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার তাগিদ দিচ্ছেন।

২০১০ সালে সর্বশেষ ১ হাজার ৬২৪টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। ২০১১ সালে ১০০০ স্কুল-মাদরাসা এমপিওভুক্তি করার ঘোষণা দেয়া হলেও তা করা হয়নি। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি বন্ধ রয়েছে ২০১১ সাল থেকে। এতে নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভীষণ কষ্টে দিন কাটছে। এমপিওভুক্তির দাবিতে অন্তত ২০ বার আন্দোলন হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু এমপিওভুক্ত করা হয়নি।

দেশে এখন এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। এসব প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে একরকম বিনা বেতনে চাকরি করছেন কয়েক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী। স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বলেন, এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। কারণ এমপিও না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। আমরা চাই অবিলম্বে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা হোক।

/এসকে/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত