ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

যবিপ্রবির গবেষকদের নতুন উদ্ভাবন

  যবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৫৭

যবিপ্রবির গবেষকদের নতুন উদ্ভাবন

গতানুগতিক সারের বিকল্প ন্যানো সার এবং মাছ চাষে ব্যবহৃত বাজারের গতানুগতিক খাবারের বিকল্প ন্যানো খাবার উদ্ভাবন করে সফলতা পেয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) একদল গবেষক। বাজারের রাসায়নিক সারের চেয়ে প্রায় এক শ ভাগের এক ভাগ এ ন্যানো সার ব্যাবহার করে অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব বলে দাবি করেছেন উদ্ভাবনকারী গবেষকরা।

সম্প্রতি কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জাভেদ হোসেন খান ও তার শিক্ষার্থীরা এ সফলতা অর্জন করেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং যবিপ্রবির নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত ল্যাবরেটরি অব ন্যানো-বায়ো অ্যান্ড অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষণাগারে ন্যানো প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবিত এ সার ও মাছের খাবার মাঠপর্যায়ে ব্যবহারেও সাফল্য পাওয়া গেছে।

প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জাভেদ হোসেন খান বলেন, ‘কৃষি ও মৎস্য ক্ষেত্রে ন্যানো প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের জন্য এক নতুন উদ্ভাবন, যা কৃষি ও মৎস্য শিল্পে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।’

তিনি বলেন, বাজারের গতানুগতিক ব্যবহৃত ইউরিয়া, ট্রিপল সুপার ফসফেট, মিউরেট অব পটাশসহ যেসব সার কৃষকরা জমিতে ব্যবহার করেন তার মূল সমস্যা হচ্ছে জমিতে অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ। এর ফলে মাটি ও পানির দূষণ ঘটছে। অধিক ফলনের আশায় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণ রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে মাটির গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে, সেই সঙ্গে অতিরিক্ত সার বৃষ্টির সঙ্গে জলাশয়ের পানিতে মিশে দূষণ ঘটে। রাসায়নিক সারের পরিবেশগত এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দেবে ন্যানো সার। এই ন্যানো সার ফসলের জমিতে খুব সামান্য প্রয়োগ করলে অধিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন ফসল পাওয়া যাবে। ঢেঁড়স, মরিচ, লেটুস, বেগুন চাষে খুব কম পরিমাণ সার (বাজারের রাসায়নিক সারের চেয়ে প্রায় এক শ ভাগের এক ভাগ) প্রয়োগ করলেই অধিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন ফসল উৎপাদন সম্ভব।

যবিপ্রবির গবেষণাগারে উদ্ভাবিত এই ন্যানো সারে মূলত উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও খনিজ উপাদান যেমন লৌহ, জিংক, খনিজ লবণসহ উদ্ভিদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। আর ন্যানো সার প্রয়োগ করা উদ্ভিদের মধ্যে মানবদেহের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান বেশি পরিমাণে পাওয়া গেছে।

ন্যানো সারের কণাগুলো অতি শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, সারের কেন্দ্রে রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এবং চারপাশ ঘিরে রয়েছে প্রয়োজনীয় খনিজ অণু। মাঠপর্যায়ে মরিচ গাছে ন্যানো সার প্রয়োগে করে উৎপাদিত মরিচের গুণগত ও পুষ্টিমান বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত ফসলের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ন্যানো সারে গাছের দৃঢ়তা অনেক বেশি হওয়ায় ঝড় বা বাতাসে নুইয়ে পড়ার শঙ্কাও কম থাকে।

প্রকল্পের পরিচালক ও গবেষক ড. মো. জাভেদ হোসেন খান আরো বলেন, ‘মাছের ন্যানো খাবার ও উদ্ভিদের ন্যানো সার যদি আমরা মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারি, তাহলে মাটি ও পানি দূষণ যেমন কমবে তেমনি খাদ্য গ্রহণের ফলে মানুষ যেসব জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয় তা থেকে মুক্তি পাবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত