ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঘরবন্দি মানুষের মন ভালো করছে টিভি চ্যানেলগুলো

  কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১০:২৪  
আপডেট :
 ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১০:২৯

ঘরবন্দি মানুষের মন ভালো করছে টিভি চ্যানেলগুলো

ভারত জুড়ে করোনা আতঙ্কের আবহে লকডাউনের ফলে দিনের পর দিন একঘেয়েমি আর ভালো লাগছে না গৃহিনীদের। তাদের মন ভাল রাখার জন্য ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন সংস্থা দুরদর্শন ফিরিয়ে এনেছে রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’, বি.আর.চোপড়ার ‘মহাভারত’, শাহরুখ খান অভিনীতি ‘সার্কাস’, রজত কাপুর অভিনীতি ‘ব্যোমকেশ বক্সী’র মতো অত্যন্ত জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলিকে।

দুরদর্শনের দেখানো পথেই এবার হাঁটতে চলেছে স্টার জলসা, জি বাংলা এবং কালারস বাংলার মতো বেসরকারি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। তারাও পুরানো ক্লাসিক টিভি ধারাবাহিকগুলিকে ফিরিয়ে আনতে চলেছে ঘরবন্দি বাঙালির মন ভালো করতে।

সেই তালিকায় রয়েছে ‘এক আকাশের নীচে’, ‘গানের ওপারে’, ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘আমার দুর্গা’, ‘দ্বীপ জেলে যাই’, ‘গোয়েন্দা গিন্নি’, ‘ভুতু’, ‘সারেগামাপা’, ‘মীরাক্কেল’, ‘মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য’, ‘মনসা’, ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’, ‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে’র মতো ছোট পর্দার জনপ্রিয় সিরিয়ালগুলি।

লকডাউনের কারণে শুটিং বন্ধ থাকায় চলমান টিভির সিরিয়ালগুলো নতুন কিছু দেখাতে পারছে না। যে কারণে বাড়ির গৃহিনীদের মানসিক চাপ, একঘেঁয়েমির মধ্যে সময় কাটাতে হচ্ছে। সেই সব মানুষের কাছে পুরানো বিনোদনগুলি অনেকটা রিলিফ দিতে পারে।

সোমবার (৬ এপ্রিল) থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় স্টার জলসায় দেখানো হবে মিমি চক্রবর্তী অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক‘গানের ওপারে। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত এই ধারাবাহিকটি আবার দেখানোর খবর শুনে নষ্টালজিক অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি।

তিনি জানান ‘এটাই ছিল আমার প্রথম কাজ। কিন্তু শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে আমি এটা দেখতে পারিনি। সেসময় বহু মানুষ এই ধারাবাহিকের প্রশংসা করেছিলেন। অনেকে এটাও জিজ্ঞাসা করেছেন গানের ওপারে-২ নির্মিত হবে কি না। যাই হোক প্রায় দশ বছর পর, আমি এটা দেখতে পারবো। আমার মনে হয়, টিভির সামনে বসা এবং এটা দেখার সেরা সময়।’

ইতিমধ্যেই স্টার জলসা চ্যানেলে মহাভারতের বাংলা ডাবিং দেখানো শুরু হয়েছে। বেসরকারি হিন্দি টিভি চ্যানেল স্টার প্লাস-এ সম্প্রচার হওয়া অত্যন্ত জনপ্রিয় ধারাবাহিক মহাভারতে কৃষ্ণের ভূমিকায় ছিলেন সৌরভ জৈন, দ্রৌপদীর ভূমিকায় পূজা শর্মা, অর্জুনের ভূমিকায় শাহির শেখ এবং বাঙালি অভিনেত্রী সায়ন্তনী ঘোষ অভিনয় করেছেন সত্যবতীর ভূমিকায়।

২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল একনাগাড়ে এক বছর ধরে চলেছিল ওই ধারাবাহিকটি।

লকডাউনের আগে পর্যন্ত স্বামীরা অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকায় কিংবা বাচ্চারা স্কুল-কলেজে থাকার ফলে ওই সময়টায় গোটা বাড়িটাই ছিল নারী সদস্যদের দখলে। বাড়িতে পরিচারিকা ঘরের টুকটাক কাজে হাত লাগাতো। আর সন্ধ্যা হলেই বিনোদন উপভোগ করতে বসে পড়তেন টেলিভিশন সেটের সামনে। কিন্তু করোনা তাদের সেই চেনা ছন্দে আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে। বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ সামলাচ্ছেন স্বামীরা। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার কারনে বাচ্চারা ঘরেবন্দি। ফলে বাড়ির বিশাল অংশ এখন তাদের দখলে।

লকডাউন, তাই কাজে ডুব মেরেছেন পরিচারিকারাও। তাই ঘরের টুকিটাকি কাজের চাপও বেড়েছে গৃহিনীদের ওপর। এরওপর টিভির পর্দায় ধারাবাহিকের অনুপস্থিতি বাসার গৃহিনীদের অস্বস্তির মাত্রা বাড়িয়েছে।

এমন অবস্থায় দুরদর্শনে ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’, ‘ব্যোমেবেশ বক্সী’, ‘সার্কাস’ এর মতো টিভি সিরিয়ালগুলো ফিরিয়ে আনলেও ভাষা সমস্যার কারণে একটু অসুবিধায় পড়েছেন বাঙালিরা। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই পুরনো বাংলা টিভি সিরিয়ালগুলিকেও আবার নতুন করে সামনে নিয়ে আসা হল।

জি বাংলায় সম্প্রচারিত হওয়া ‘সুদীপার রান্নাঘর’র সুদীপা চ্যাটার্জি জানান ‘পুরোনা জনপ্রিয় বাংলা টেলি ধারাবাহিক বা টেলি-সোপগুলি আমাদের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বয়স্ক মানুষ থেকে শুরু করে গৃহবধূ, পরিচারিকা সকলেই উপভোগ করতেন। লকডাউনের কারণে শ্যুটিং বন্ধ থাকায় নতুন এপিসোডও দেখানো হচ্ছে না। তাই আমার পুরোনো এপিসোডগুলিকে পুনরায় চালু করার জন্য বাড়িতেই কেবলমাত্র নতুন প্রোমো তৈরি করেছি।’

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত