ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

জন্মদিনে সাবিনা ইয়াসমিন

‘সবার ভালোবাসা পেয়ে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি’

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩:৪৬  
আপডেট :
 ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩:৫০

‘সবার ভালোবাসা পেয়ে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি’
গানের পাখি সাবিনা ইয়াসমিন, ছবিঃ গোলাম সাব্বির

একজন সাবিনা ইয়াসমিন বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের এমনই মহান একজন শিল্পী যার কন্ঠ, সঙ্গীতে তার সাধনা, সঙ্গীত জীবনে তার পথচলা, বাংলাদেশের সঙ্গীতে তার অবদান, তার পারিবারিক জীবন, শিক্ষা জীবন, সঙ্গীতে তার সম্মাননা বা স্বীকৃতি এবং সর্বোপরি তার সার্বিক জীবন নিয়ে গবেষণা হতে পারে। সেই গবেষণার পর তা হতে পারে বই আকারে প্রকাশ অত:পর সেই বইটি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে হয়ে থাকতে পারে অনুকরনীয় অনুসরনীয় কিংবা গবেষণার বিষয়।

কিন্তু সত্য হলো এই যে আমরা জীবদ্দশায় এমন মহান শিল্পীদের নিয়ে বিষদ ভাবতে পারিনা, সম্মান জানাতে পারিনা। আমরা এমনই হতভাগা জাতি যে আমরা আমাদের কিংবদন্তীদের হারিয়ে তারপর হতাশায় মগ্ন থাকি কিছুটা দিন, তারপর আবার ভুলে যাই। এর উত্তরণ আদৌ কবে হবে তা ভাবনার বিষয়।

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের আজ জন্মদিন। বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি, জীবন্ত এই কিংবদন্তী কন্ঠশিল্পী এ দেশের গর্ব। শুধু দেশের গানেই তার যে বিরাট অবদান, তা দিয়েই তিনি এই বাংলার বুকে বেঁচে থাকবেন শতশত বছর। বছরজুড়ে বিভিন্ন সময়ে তার গাওয়া দেশের গান আমাদের পুলকিত করে, অনুপ্রাণিত করে, আন্দোলিত করে। আর দেশের বিভিন্ন জাতীয় দিবসে তার গাওয়া দেশের গানই যেন আগামীদিনে নতুন করে পথ চলার সাহস যুগায়। দেশের গান ছাড়াও চলচ্চিত্রে হাজার হাজার গান গেয়েছেন তিনি। আর এমনি করেই গানে গানে সাবিনা ইয়াসমিন হয়ে উঠেছেন এদেশের তথা বাংলা ভাষাভাষীর অতি প্রিয় একজন শিল্পীতে-একজন জীবন্ত কিংবদন্তীতে।

জন্মদিন প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘জন্মদিন এলেই আব্বা আম্মা এবং আমার বোনদের খুব মিস করি। কিন্তু তারপর সবার ভালোবাসা পেয়ে আমি সে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি। দেশে বিদেশ থেকে অনেকেই শুভেচ্ছা জানান। দিনটিতে বিশেষভাবে উদযাপনের কোন ইচ্ছে নেই। ঘরেই সময় কাটবে। এটিএন বাংলা আজ আমার জন্মদিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপনের জন্য নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলো। কিন্তু আমি আসলে সময়টা ঘরেই কাটাতে চাচ্ছি নিজের মতো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমিও সবার জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন সবাইকে ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন।’

প্রয়াত বরেণ্য সুরকার-সঙ্গীত পরিচালক রবিন ঘোষের সঙ্গীত পরিচালনায় এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ সিনেমাতে ১৯৬২ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম গান করেন সাবিনা ইয়াসমিন। তবে ১৯৬৭ সালে আমজাদ হোসেন ও নূরুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমাতে আলতাফ মাহমুদের সঙ্গীত পরিচালনায় ‘মধু জোছনা দীপালি’ গানটি গাওয়ার মধ্যদিয়ে প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। বরেণ্য এই সঙ্গীত শিল্পী ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার’সহ সর্বোচ্চ ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে প্রমোদকার (খান আতাউর রহমানের ছদ্ম নাম) পরিচালিত ‘সুজন সখী’ সিনেমাতে গান গাওয়ার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

এরপর বিভিন্ন সময়ে আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, চাষী নজরুল ইসলামের ‘চন্দ্রনাথ’, মইনুল হোসেনের ‘প্রেমিক’, বুলবুল আহমেদ’র ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’ , আমজাদ হোসেনের ‘দুই জীবন’, কাজী হায়াৎ’র ‘দাঙ্গা’, মতিন রহমানের ‘রাধা কৃষ্ণ’, মোহাম্মদ হোসেন’র ‘আজ গায়ে হলুদ’ ও চাষী নজরুল ইসলামের ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করার জন্য এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে ‘পুত্র’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশে তিনিই সর্বাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত সঙ্গীতশিল্পী। ১৯৭১ সালে নঈম গহরের লেখা ও আজাদ রহমানের সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’ গানটি মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম প্রেরণা জুগিয়েছিলো। অভি মঈনুদ্দীনের পক্ষ থেকে গুনী এই সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব’কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত