ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘এটিএম ভাইয়ের পরিচালনায় কাজ করার খুব ইচ্ছে আমার’

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:১১  
আপডেট :
 ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:২৩

‘এটিএম ভাইয়ের পরিচালনায় কাজ করার খুব ইচ্ছে আমার’
প্রাণবন্ত আড্ডায় শবনম ও এটিএম শামসুজ্জামান

বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান এখন অনেকটাই সুস্থ। দীর্ঘ চার মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে বাসায় ফিরেন। বাসায় বেশিরভাগ সময় এখন বই পড়েই কাটান তিনি।

গত ১০ সেপ্টেম্বর একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অভিনেতার জন্মদিন ছিল। বেশ হাসি আনন্দেই সকাল বেলা জন্মদিনের কেক কেটে দিনটা শুরু করেছিলেন এটিএম শামসুজ্জামান। জন্মদিনের দিন রাতের বেলায় তার বাসায় হাজির হয়েছিলেন চিত্রনায়িকা শাবনাজ, পপি, রোজী সিদ্দিকী, রওনক হাসান, মৌটুসী বিশ্বাসসহ আরো অনেককে। তাদের সবাইকে নিয়ে আবারও একসঙ্গে কেক কাটেন তিনি। সবাইকে দেখতে পেয়ে বেশ আনন্দিত হয়েছিলেন তিনি। একটা আনন্দমুখর দিন পার করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সময়ে অনেকেই এটিএম শামসুজ্জামানকে দেখতে গেলেও যেতে পারেন নি কিংবদন্তী নায়িকা শবনম। অনেকদিন দিন ধরেই শবনম বাংলাদেশে নেই। দীর্ঘদিন পাকিস্তান থাকার কারণে সে সুযোগটা হয়ে উঠেনি শবনমের। তবে পাকিস্তান থেকে ফেরার পরই দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামানকে গতকাল বিকেলে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি।

প্রাণবন্ত আড্ডায় শবনম, এটিএম শামসুজ্জামান ও রুনী জামান

বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এক প্রাণবন্ত আড্ডায় মেতে উঠেন শবনম ও এটিএম শামসুজ্জামান। সেই আড্ডায় উঠে আসে অনেক স্মৃতি। সেই আড্ডায় তাদের সঙ্গী ছিলেন এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনী জামান। সেখানে উঠে আসে প্রয়াত নির্মাতা এহতেশাম, মুস্তাফিজেরও কথা।

দু’জনই দু:খ করে বলেন, কোনভাবেই কোন অনুষ্ঠানেই এহতেশাম কিংবা মুস্তাফিজের কথা স্মরণ করা হয়না। অথচ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের শুরুর দিকের দিকপাল ছিলেন তারাই।

শবনম যখন নায়িকা তখন এটিএম শামসুজ্জামান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে অভিনেতা হিসেবে এটিএম’র যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এটিএম ও শবনম একে অন্যের খুব ভালো বন্ধু।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই দুই কিংবদন্তী একসঙ্গে বেশ ক’টি ছবিতেও অভিনয় করেছেন তারা। বিশেষ করে ত্রিশ বছর আগে নায়করাজ রাজ্জাক পরিচালিত ‘প্রেম শক্তি’র শুটিংয়ের স্মৃতি আজও অমলিন তাদের কাছে। ছবিটিতে ত্রিশ বছর আগে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন তারা। যে ছবির পরিচালক আজ প্রয়াত। এরপর আর একসঙ্গে কাজ করা হয়নি তাদের। দেখাও হয়নি অনেক বছর। সর্বশেষ ছয়বছর আগে একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে দু’জনের দেখা হয়েছিল। বলা যায় ছয় বছর পর আবারও দেখা হল তাদের।

একসঙ্গে কাজ করলেও এটিএম শামসুজ্জামানের পরিচালনায় কাজ করার তীব্র ইচ্ছা রয়েছে শবনমের। বেশ আগ্রহ নিয়ে তিনি বলেন,আমরা একসঙ্গে বেশকিছু ছবিতে কাজ করেছি তাও অনেক বছর আগে। আমাদের মধ্যে দেখা হয় খুবই কম। তিনি আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের বটবৃক্ষ। আমার খুব ইচ্ছে এটিএম ভাই পরিচালনায় কাজ করার। অভিনেতার বাইরেও তিনি একজন গুণী নির্মাতা। তার নির্মাণে কাজ করার আগ্রহ আমার অনেক দিনের।

প্রসঙ্গত, এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে এটিএম শামসুজ্জামান সবার বড়। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারি পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা, এ ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক।

এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন তিনি। প্রথমদিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে চরিত্র অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন তার। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। অভিনয়ের জন্য পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এটিএম শামসুজ্জামান।

১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তিনি রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’-তে অভিনয় করেন ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। চলচ্চিত্র জীবনে একটি সিনেমা পরিচালনাও করেছেন তিনি। ‘ইবাদত’ নামের সেই ছবিতে জুটি বেঁধেছিলেন রিয়াজ-শাবনূর।

বাংলাদেশ জার্নাল/ আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত