ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাইডেন-পুতিন বৈঠক, প্রশংসাতেই সীমিত

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২১, ০৩:২২  
আপডেট :
 ১৮ জুন ২০২১, ০৩:৩৫

বাইডেন-পুতিন বৈঠক, প্রশংসাতেই সীমিত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো সুষ্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেনি। দুই শীর্ষ নেতার তিন ঘণ্টার আলোচনা আনুষ্ঠানিকা আর পরস্পরের প্রশংসার মধ্যেই সীমিত ছিল। ​কিছু বিষয়ে একমত পোষণ করলেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে। খবর বিবিসির।

দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের উত্তেজনার মধ্যে ২০১৮ সালের পর জেনেভায় গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দুই শীর্ষনেতার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিনের এ বৈঠকে দুই নেতা একে অন্যের গৃহিত নীতি ও পরিকল্পনার প্রশংসা করেছেন।

বহুল প্রতীক্ষিত এ শীর্ষবৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, দুজনের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। তবে তা প্রতিশোধমূলক নয়। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া নতুন কোনো স্নায়ুযুদ্ধ চায় না। যুক্তরাষ্ট্রও স্নায়ুযুদ্ধ এড়াতে চায়। তবে স্নায়ুযুদ্ধ অবসানে গৃহিত কোনো সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর পদক্ষেপে নিয়ে আলোচনা কোনো ইঙ্গিত দেননি বাইডেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও জানান, বৈঠকে রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রকৃত সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বাইডেন একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে যৌক্তিক মতামত জানিয়েছেন। আমরা দুজনই বেশ কিছু বিষয়ে একমত পোষণ করি। আগামীতে যা দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করবে।

দুই নেতার মধ্যে এই আলোচনা প্রায় তিন ঘণ্টা স্থায়ী হয়, যদিও সেটা নির্ধারিত সময়ের চাইতে কম।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন উপহার হিসেবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাাছে সানগ্লাস ও ক্রিস্টালের তৈরি বাইসনের শিল্পকর্ম তুলে দেন। তবে পুতিন বাইডেনকে কোনো উপহার দিয়েছেন কি না, তা জানা যায়নি।

এর আগে ২০১৮ সালে ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফুটবল উপহার দিয়েছিলেন পুতিন।

বাইডেন ও পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন। তাঁরা দুই দেশের রাজধানীতে রাষ্ট্রদূতদের ফিরিয়ে আনবেন বলেও জানিয়েছেন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া মধ্যস্থতা করেছিল বলে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর গত মার্চ মাসে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করা হয়।

সাইবার নিরাপত্তা, ইউক্রেন, রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির ভাগ্য প্রভৃতি ইস্যু নিয়ে আলোচনায় সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে। বাইডেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কারাগারে নাভালনির মৃত্যু হলে রাশিয়ার পরিণতি ধ্বংসাত্মক হতে পারে।

বৈঠকে পুতিন বন্দী বিনিয়ম নিয়ে সমঝোতা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন। সাইবার হামলা প্রসঙ্গে পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ায় বেশির ভাগ সাইবার হামলা চালিয়েছে।

বাইডেন বলেন, তিনি পুতিনের কাছে জানতে চেয়েছেন, নিজ দেশের তেলের পাইপলাইনে হামলা হলে তাঁর (পুতিনের) কেমন লাগবে। বাইডেন আরও বলেন, রাশিয়া নিয়ম লঙ্ঘন করলে যুক্তরাষ্ট্র জবাব দেবে।

মানবাধিকার ইস্যুতে দুই প্রেসিডেন্ট একমত হতে পারেননি। নাভালনির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ নাকচ করে দিয়েছেন পুতিন। নাভালনি ২৪ দিন অনশন করবেন বলে জানিয়েছেন।

রাশিয়া দেশের অভ্যন্তরে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার মুভমেন্টের মতো কোনো গোলযোগ চায় না বলে পুতিন জানান। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার ইস্যুতে পুতিনের মন্তব্যকে হাস্যকর হিসেবে উল্লেখ করে বাইডেন। তিনি বলেন, মানবাধিকার ইস্যু সব সময় আলোচনায় রাখতে হবে।

জেনেভা লেকমুখী দৃষ্টিনন্দন ভিলায় বাইডেন ও পুতিনের মধ্যে বৈঠক হয়। এতে খাবারের কোনো বিরতি ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাইডেন এই প্রথম পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসলেন।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত