ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

পার্ক-সড়কে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করে নোটিশ

পার্ক-সড়কে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করে নোটিশ

বিভিন্ন জায়গার নামবদল, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন ছুটি বাতিলসহ নানা বিষয়ে নির্দেশ জারি করে বিতর্কে জড়িয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল পার্ক ও সড়কে নামাজ আদয়ে নিষেধাজ্ঞা।

ভারতের রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন নয়ডায় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্যে নমাজ পাঠে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে একাধিক অভিযোগ আসায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে নয়ডার সেক্টর ৫৮-য় অবস্থিত বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। ওই সব সংস্থাকে পুলিশ জানিয়েছে, সংস্থার কোনও কর্মী প্রকাশ্য স্থানে বা পার্কে নামাজ পড়তে পারবেন না। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন মুসল্লিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ নামাজ পড়তে গিয়ে ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই দায়ী করা হবে। একই সঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, সংস্থাগুলি তাদের কর্মীদের জন্য অফিস চত্বরের ভিতরে বা ছাদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করতে পারে। সেক্টর ৫৮-এ একাধিক সংস্থার অফিস রয়েছে। ওই সব সংস্থায় কর্মরত মুসলিম কর্মচারীরা নিয়মিত স্থানীয় পার্কগুলিতে, এমনকী রাস্তার উপরেও নামাজ পড়েন।

ওই নির্দেশিকায় কোম্পানিগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে, তাদের কর্মীরা যদি পার্কটিতে নমাজ পাঠ করেন, তা হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই নির্দেশভঙ্গের দায় নিতে হবে।

এই নির্দেশিকা জারির পরে ওই শিল্পাঞ্চলের মুসলিম কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে কোম্পানিগুলির কর্তৃপক্ষ পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও চিন্তাভাবনা করছেন।

তবে নয়ডার পুলিশ বলছে, কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। কিছু লোক সেক্টর-৫৮’র পার্কটিতে নামাজ পাঠের অনুমতি চেয়েছিলেন। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেননি। কিন্তু এখনও সেখানে কিছু লোক ধর্মীয় কারণে জড়ো হচ্ছেন। তাদের উদ্দেশেই ওই নোটিস।

গত পাঁচ বছর ধরে সেক্টর-৫৮’র পার্কটিতে নামাজ পাঠ করাচ্ছেন মৌলানা নৌমান। তিনি জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর তাদের পুলিশ জানিয়েছিল, ওই পার্কে নামাজ পাঠ করা যাবে না। তিনি সেই নির্দেশ মেনেছেন। কিন্তু তারপরেও যাকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে দাবি মৌলানার।

একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়ার জন্য এলাকায় শান্তি-সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে অভিযোগে গত ১৮ ডিসেম্বর আমাকে এবং আমার বন্ধু আদিল রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা ২২ ডিসেম্বর জামিন পেয়েছি।’

বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতা দখলের পর থেকে গোরক্ষা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদীরা। সম্প্রতি কয়েকটি জায়গার নাম বদলেছে। এমনকি, গত বছর দু’টি মুসলিম পরবের দিন সরকারি ছুটিও বাতিল করেছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। সেই পথ ধরেই নামাজ নিয়ে এমন নিষেধাজ্ঞা।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত