সন্ত্রাস দমনে শ্রীলঙ্কার পাশে থাকার আশ্বাস মোদির
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার শপথ নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে মালদ্বীপ হয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর মোদিই হচ্ছে প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যিনি দেশটিতে সফর করেন।
রোববার শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেই সে দেশের জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে সুর চড়ান মোদি। এর আগে মালদ্বীপেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের মাটি থেকে চালানো জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে ভারত কড়া জবাব দিয়েছে একের পর এক সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে। এ বার ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কা— দুই প্রতিবেশী দেশেও সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে পাশে থাকার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সেন্ট অ্যান্টনি’জ চার্চে যান মোদি। গত এপ্রিলে ইস্টার সানডে-র দিন একাধিক জায়গায় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কায় ওই দিনের জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় কমপক্ষে ২৫৮ জনের। শ্রীলঙ্কায়যে সমস্ত জায়গায় বিস্ফোরণ হয়, তার মধ্যে ছিল সেন্ট অ্যান্টনি’জ চার্চও।
এই গির্জায় জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর মোদি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত শ্রীলঙ্কা ফের ঘুরে দাঁড়াবে। ভারত শ্রীলঙ্কার যে কোনো প্রয়োজনে পাশে আছে।’
সেন্ট অ্যান্টনি’জ গির্জায় শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপলা সিরিসেনা, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে, বিরোধী নেতা মাহিন্দা রাজাপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। মোদি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত শ্রীলঙ্কা ফের ঘুরে দাঁড়াবে। এমন কাপুরুষের মতো হামলা শ্রীলঙ্কার মনোবল নষ্ট করতে পারবে না। ভারত শ্রীলঙ্কার পাশে আছে।’
এর পরে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ, বিরোধী নেতা মাহিন্দা রাজাপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। দেখা করেন তামিলদের রাজনৈতিক দল ‘তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স’-এর এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও।
শ্রীলঙ্কা সফরের সময় মোদিকে একটি বৌদ্ধমূর্তি উপহার দিয়েছেন প্রেসিডেন্টসিরিসেনা। এ সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সমাধিস্থ বুদ্ধের ওই মূর্তি শ্রীলঙ্কার এক প্রাচীন মূর্তির প্রতিরূপ। কলম্বোর প্রেসিডেন্ট হাউসের বাগানে এক অনুষ্ঠানে অশোক গাছের একটি চারাও পুঁতেছেন মোদি।
এ দিনই অন্য এক অনুষ্ঠানে মুসলিম মৌলবাদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন সিরিসেনা। এক সময়ে এলটিটিই-র গড় হিসেবে পরিচিত মুল্লাইটিভুতে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা এখন বিভক্ত। কিন্তু দেশ বিভক্ত হয়ে গেলে তার মূল্য দিতে হবে। মুসলিম প্রভাকরনের আবির্ভাব যে কোনও মূল্যে রুখতে হবে।’
তামিল নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরনের নেতৃত্বাধীন এলটিটিই-র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগ্রামের ফলে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মুখে পড়তে হয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে।
সূত্র: আনন্দবাজার
এমএ/
