ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

সঠিক যত্নে দীর্ঘদিন সুন্দর থাকবে শাড়ি

  লাইফ স্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৪:৪৫  
আপডেট :
 ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৬:০৩

সঠিক যত্নে দীর্ঘদিন সুন্দর থাকবে শাড়ি
ছবি: সংগৃহীত

শাড়িতেই নারী, আর এতেই প্রকাশ পায় নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য্য। প্রতিটি মেয়ের আলমারিতে আর কিছু থাকুক বা না থাকুক শাড়ি থাকবেই। তবে আলমারিতে রেখে দিলেই শাড়ি ভালো থাকবে এমন নয়। শাড়ি ভালো রাখতে প্রয়োজন আলাদা যত্নের। আপনার যত্নেই শাড়ি সুন্দর থাকবে বহুদিন।

বেনারসি কিংবা জামদানি, কাতান কিংবা টিস্যু বা সিল্ক- দীর্ঘদিন ভালো রাখতে সব শাড়ির চাই সঠিক যত্ন।

চলুন জেনে নেই কোন শাড়ির জন্য কেমন যত্ন প্রয়োজন-

সুতি শাড়ি: প্রথমবার সুতি শাড়ি ধোয়ার সময় হাল্কা গরম পানিতে বিট লবণ মিশিয়ে নিন। এরপর সেই পানিতে শাড়িটি ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে শাড়ির রং ঠিক থাকবে পরবর্তীকালে ধোয়ার পরেও।

ঘামে ভেজা সুতি শাড়ি না ধুয়ে রেখে দিলে তাতে ফাঙ্গাস জমে, ফলে শাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই বাইরে থেকে ফেরার পর পানিতে অল্প রিঠা মিশিয়ে শাড়িটি কিছু সময়ের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। এরপর শুকানোর জন্য মেলে দিন। এতে শাড়ি সতেজ থাকবে দীর্ঘদিন।

বিশেষ কিছু রংয়ের শাড়ি ঘরে পরিষ্কার করার সময় বিশেষ যত্নবান হতে হবে। কারণ মাড় সুতি শাড়ির স্থায়িত্ব নষ্ট করে, আবার সুতি শাড়ির সৌন্দর্যই হলো এর কড়কড়ে ভাব।

সুতি শাড়ি একটু সময় নিয়ে আয়রণ করে নিবেন। আয়রণ করার পর সাধারণত ইস্ত্রির তাপে শাড়ি কিছুটা গরম হয়। তাই ফ্যানের বাতাসে ঠান্ডা করে নিন। তারপর ভাঁজ করে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন।

কোরা, অর্গানজা ও চান্দেরি: এই শাড়িগুলোকে লম্বা কাঠের লাঠিতে পেঁচিয়ে রাখতে হবে। মুড়িয়ে রাখতে হবে মলমল কাপড়ে। সংরক্ষণ করতে হবে অনেকগুলো শাড়ির নিচে সমতল স্থানে। কিছুদিন পর পর ভাঁজ খুলে নতুন করে ভাঁজ করতে হবে যাতে ভাঁজে ভাঁজে ছিড়ে না যায়। এই শাড়িগুলো দীর্ঘদিন হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা ঠিক না।

টিস্যু: এই ধরণের শাড়িগুলো বেনারসি শাড়ির কারিগরদের হাতে পরিষ্কার করানোই নিরাপদ। কারণ সাধারণ ড্রাই ক্লিনিংয়ে শাড়িতে ভাঁজ পড়ে যেতে পারে। আর বেনারসি কারিগররা পরিষ্কার করে লম্বা টেবিলের উপর রেখে বা রোলারের মাধ্যমে।

শিফন: অন্যান্য শাড়ির তুলনায় শিফন শাড়ির চাই বাড়তি যত্ন। শিফন কিংবা জর্জেটের শাড়িতে রোলার আয়রন ব্যবহার করবেন কি না তা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কড়া রোলার আয়রন দামি শিফন শাড়ির স্বাভাবিক ভাঁজ দূর করে। তবে কমদামি শিফন শাড়িতে সচরাচর ভাঁজ থাকে না, তাই এতে ভাঁজ আনার জন্য হালকা রোলার আয়রন আবশ্যক।

শাড়িতে আলপিন কিংবা সেফটিপিন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সেফটিপিনে ছোট একটা কাগজ বা টিস্যু দিয়ে এরপর শাড়িতে ব্যবহার করলে শাড়ি পেঁচিয়ে যাবে না বা টান পরলেও ছিঁড়বে না। ভারী এমব্রয়ডারি কিংবা ভাড়ী পাড়ের শিফন শাড়ি হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা উচিত নয়। কারণ ভারী কাজের ভারেই শাড়ি ছিঁড়ে যেতে পারে।

বেনারসি সিল্ক: বেনারসি সিল্ক কাপড় হওয়ায় সব সময় ড্রাই ক্লিনিং পদ্ধতিতে পরিস্কার রাখা ভালো এবং শাড়ির ভাঁজ অনুযায়ী কাঠের হ্যাংগারে ঝুলানো হলে শাড়ির কারুকাজ অক্ষুন্ন থাকে।

এছাড়াও কিছু ছোটখাটো পদ্ধতি অনুসরণ করলে সারা বছর শাড়ির সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব।

* মসলিন কাপড়ে মুড়িয়ে রাখলে বাজে দুর্গন্ধ ও ধুলাবালি থেকে দূরে থাকবে।

* শাড়ি ধাতব হ্যাঙ্গারে রাখা উচিত নয়, মরিচার দাগ লেগে যেতে পারে। যদি হ্যাঙ্গার ব্যবহার না করেন তবে একটার উপর আরেকটা রাখতে পারেন এক ভাঁজে। বেশি ভাঁজ দিলে কাপড় কিংবা কারুকাজের সেলাই একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে যেতে পারে। ফলে শাড়ি নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে।

* ডিটারজেন্টের চাইতে ড্রাই ক্লিনিং ভালো। বিকল্প হিসেবে শ্যাম্পু কিংবা শ্যাম্পু ও ডিটারজেন্টের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।

* শাড়ি সরাসরি সূর্যের আলোতে শুকানো যাবে না। এতে রং নষ্ট হয়ে যাবে।

* কড়া দাগ তুলতে ড্রাই ওয়াশের বিকল্প হিসেবে পেট্রোল ব্যবহার করতে পারেন। নেইল পলিশের দাগ তুলতে অ্যাসিটোন ব্যবহার করতে পারেন। তেলের দাগ তুলতে ধোয়ার আগে ট্যালকম পাউডার ও সামান্য ডিটারজেন্ট দাগের উপর ঘষে নিতে পারেন।

* ভারি কারুকাজের শাড়ি ভালো রাখতে সবসময় শাড়ির উল্টা দিকটা বাইরের দিকে রেখে ভাঁজ করা উচিত।

* শাড়িতে সরাসরি সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার করলে স্থায়ী দাগ পড়ে যেতে পারে। তাই কবজিতে সুগন্ধি মাখাই নিরাপদ।

* শাড়ি সবসময় মৃদু থেকে মাঝারি তাপমাত্রায় আয়রন করা উচিত। বেশি তাপ হলে শাড়িতে ছাপ পড়ে যেতে পারে।

* পোকামাকড় থেকে বাঁচাতে শাড়ির আশপাশে ন্যাপথালিন বল না রেখে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।

উপরোক্ত টিপসগুলো অনুসরণ করে শাড়ির যত্ন নিলে পছন্দের শাড়িটি নতুনের মতোই সুন্দর থাকবে দীর্ঘদিন।

বাংলাদেশ জার্নাল/ স্বর্ণ/রাজু/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত