ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাক্ষাতকারে শাহাব উদ্দীন সালমী

অসঙ্গতি দূর করে দ্রুত পদোন্নতি চাই

  শিক্ষা ডেস্ক

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১৮:৫৩  
আপডেট :
 ০৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:৪৬

অসঙ্গতি দূর করে দ্রুত পদোন্নতি চাই
ছবি: শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী

গত ৩০ নভেম্বর সহকারী শিক্ষক থেকে সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতির খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ (মাউশি)। ১ ডিসেম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খসড়া তালিকায় ৬ হাজার ১৫৫ সহকারী শিক্ষককে রাখা হয়। তবে শিক্ষকদের বিভিন্ন বিধি বিধানের কারণে দীর্ঘদিন ধরে যারা শিক্ষকতা করছেন তাদের পদোন্নতি আটকে যেতে পারে। এছাড়া বিএড না থাকার শর্ত লঙ্ঘন, সমন্বিত মেধা তালিকা না থাকার কারণে কিভাবে পদোন্নতি দেয়া হবে তা নিয়ে অনেক শিক্ষক প্রশ্ন তুলেছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জার্নালের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছেন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী। সঙ্গে ছিলেন আসিফ কাজল

বাংলাদেশ জার্নাল: দীর্ঘ ২৮ বছর পর সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকরা পদোন্নতি পাচ্ছেন। এর কারণ কী?

শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী: আমাদের কোনো পদসোপান ছিলো না। একারণে আগে মাত্র ৫ ভাগ শিক্ষক আগে পদোন্নতি পেতেন আর ৯৫ ভাগ শিক্ষক পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যেতেন। ২০০৮ সাল থেকে আমরা বিভিন্নভাবে এ বিষয়ে আন্দোলন করে আসছি। পরে ২০১৮ সালে নবম গ্রেডে একটি পদ সৃষ্টি হয় যে পদটির নাম হয়েছে সিনিয়র শিক্ষক। আড়াই বছর পরে শিক্ষকগণ পদোন্নতি পেতে চলেছেন। আসল কথা শিক্ষাবান্ধব সরকার আমাদেরকে অনেক কিছু দিলেও অভ্যন্তরীণ নানা জটিলতা এবং কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে এ পদোন্নতি সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ জার্নাল: খসড়া তালিকা নিয়ে অনেকেই অনেক অভিযোগ করছে। দেখা গেছে, যে শিক্ষক ৩০ বছর চাকরি করছেন তালিকায় তার নাম নেই। অথচ যিনি আট বছর চাকরি করছেন তালিকায় তার নাম আছে।

শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী: ১৯৯১ সালের চাকরি বিধিতে একাধিক ৩য় বিভাগ থাকলেও পদোন্নতি গ্রহণযোগ্য ছিলো। খসড়া তালিকায় এ বিধিমালা অনুসরণ না করায় এখানে অনেকের নাম বাদ পড়েছে। এখন পদোন্নতির জন্য ৮ বছরের শিক্ষকতা ও বিএড চাওয়া হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এখানে নানা অস্পষ্টতা আছে যা দূর করে যারা পদোন্নতির যোগ্য তারাই পদোন্নতি পাবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: একজন শিক্ষক নেতা হিসেবে এ অভিযোগের প্রতিকারে আপনি কী করছেন?

শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী: এ সমস্যার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছি। তারা একটি কমিটি গঠন করবে। এই কমিটি যাচাই বাছাই করে উপযুক্তরা যেনো বাদ না পড়ে সে বিষয়ে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। দীর্ঘদিন যাবত পদোন্নতি আটকে থাকায় শিক্ষকেরা খুব হতাশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়া হলে শিক্ষকেরা আন্দোলনে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: সারাদেশে ১০ হাজার ৫০৫ জন সহকারী শিক্ষক আছেন। সিনিয়র শিক্ষক পদে এবার ৫২৫২ জনকে পদোন্নতি দেয়া হবে। পদোন্নতি বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা আছে কি না?

শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী: সংখ্যা বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা এখন দেখছি না। অর্ধেক শিক্ষককেই পদোন্নতি দেয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: আজ (রোববার) আপনি মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগ (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. গোলাম ফারুকের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ জটিলতা নিরসনে তিনি আপনাদেরকে কী জানিয়েছেন?

শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী: মহাপরিচালক বলেছেন, এই পদোন্নতি অনেক আগেই পাওয়ার কথা ছিলো। শিক্ষকদের দাবি পূরণে খুব শিগগিরই একটি বাছাই কমিটি তিনি গঠন করবেন। এছাড়াও ২০২০ সালের মার্চের ২০ তারিখে মাউশি একটি চূড়ান্ত তালিকা করেছিলো। ওই তালিকায় কোনো অভিযোগ ছিলো না। এই তালিকাটি আপডেট করেও পদোন্নতি দেয়ার সুযোগ ছিলো। বিষয়টি ভেবে দেখবেন বলে তিনি আমাদেরকে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল: শুধু সিনিয়র শিক্ষক নয়, এখনো অনেক পদে সরকারি মাধ্যমিকে লোকবল নেই; এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী: শিক্ষাবান্ধব সরকার আমাদেরকে যথেষ্ট দিয়েছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক কিছুই এখনো দৃশ্যমান হচ্ছে না। আমাদের ডিডির পদ খালি আছে, প্রায় ৩০০ প্রধান শিক্ষক ও ৩৩ জেলা শিক্ষা অফিসার ২০০ সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। মাউশি, শিক্ষাবোর্ড সহ বিভিন্ন জায়গায় কিছু পদ বাড়ানো যেতে পারে। আমরা বলেছি শিক্ষকদের পদ নবম গ্রেডে করে যেন একটা পদসোপান তৈরি করা হয়। মুজিববর্ষে সরকারের অঙ্গীকার কোনো পদ খালি থাকবে না। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি সরকারের কাছে এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত