ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

সফল স্থপতি নারী মেরিনা তাবাশ্যুম

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬:০৭  
আপডেট :
 ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬:১৬

সফল স্থপতি নারী মেরিনা তাবাশ্যুম
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রথম কোনো নারী যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ ‘সন’ পদক পেয়েছেন। আর সেই নারী হচ্ছেন বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাশ্যুম। তিনি মানবিক ঘর তৈরির জন্য ‘সন’ পদক পেয়েছেন। যুক্তরাজ্যের স্থপতি স্যার জন সনের নামে এই পুরস্কার দেয়া হয়।

গত বছর তাবাশ্যুম এবং তার দল ভূমিহীন চরের বাসিন্দাদের জন্য কম খরচের ‘মডুলার হাউস কিট’ তৈরিতে কাজ শুরু করেন।

গত বছর ব্রিটিশ সাময়িকী প্রসপেক্টের ৫০ চিন্তাবিদের মধ্যে শীর্ষ ১০-এ স্থান করে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের এ স্থপতি। তিনি ১০ জনের মধ্যে তৃতীয় হন। সেখানে মেরিনা তাবাশ্যুম সম্পর্কে বলা হয়, ‘তিনি মনোনিবেশ করেছেন এক বাস্তব সমস্যার দিকে। আর সেটি হলো জলবায়ু পরিবর্তন। এর ফলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও সে উপযোগী ঘরবাড়ি তৈরির নকশা করেছেন।’

সনের ওয়েবসাইটে বলা হয়, মেরিনা প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবনের নকশা এবং চর্চার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। যাতে নকশাটি স্থায়িত্বের চ্যালেঞ্জ নিতে পারে এবং গ্রহের ওপর আমাদের সামষ্টিক প্রভাব পড়ে। স্থপতি হিসেবে তিনি প্রশংসিত। এ ছাড়া তিনি নিজের সম্প্রদায়ের জন্য নিবেদিত শিক্ষক ও চ্যাম্পিয়ন।

পুরস্কার জেতার প্রতিক্রিয়ায় মেরিনা বলেন, ‘প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটা কৌতুক। আগের বিজয়ী রাফায়েল মনেও, ডেনিস স্কট ব্রাউন ও কেনেথ ফ্রাম্পটনের তুলনায় আমার কাজ এখনো চলমান। এখনো অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি।’

সনের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, মানুষের জীবনে স্থাপত্যের গুরুত্ব ভালোভাবে বোঝার জন্য উৎসাহিত করে এ পুরস্কার। ২০১৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দেয়া হয়। স্থপতি, শিক্ষাবিদ ও সমালোচকদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর এ পুরস্কার দেয়া হয়। বিশিষ্ট স্থপতি, সমালোচক ও কিউরেটরদের একটি প্যানেল পুরস্কারের জন্য যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করেন, যার নেতৃত্বে থাকেন স্যার জন সন জাদুঘরের সাবেক ট্রাস্টি স্যার ডেভিড চিপারফিল্ড।

বিজয়ী লন্ডনের একটি বিশেষ বার্ষিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন, যা পরে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করে। এ ছাড়া ১৮৩৫ সালে আর্কিটেক্টস অব ইংল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্যার জন সন যে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন, তার একটি প্রতিরূপ (রেপ্লিকা) তাকে দেয়া হয়।

স্থপতি ও চিন্তাবিদ মেরিনা তাবাশ্যুমও তার কাজ ও জীবন সম্পর্কে সন জাদুঘরে বক্তৃতা দেন। পর তিনি স্যার ডেভিড চিপারফিল্ডের সভাপতিত্বে একটি প্যানেল আলোচনা অংশ নেন।

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য বর্ষা বর্ণনাতীত যন্ত্রণার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে অপ্রত্যাশিত আনন্দ বয়ে আনে।

সন পদক জয়ী মেরিনা তাবাশ্যুম আরও বলেন, ‘একে সত্যিকার অর্থে ভূমি বলা চলে না। এটা ভেজা। এটা নদীর অংশ। কিন্তু ভূমিহীনদের জন্য কয়েক বছরের পরিত্রাণ হয়ে ওঠে এসব চর। এগুলো তাদের মাছ ধরার, চাষাবাদ করার ও পরিবার নিয়ে থাকার সুযোগ দেয়।’

মেরিনা তাবাশ্যুম বলেন, ‘একজন স্থপতি হিসেবে এসব মানুষের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। নির্মাণশিল্প বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ক্ষেত্রে অর্ধেক অবদান রাখে। তবে উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন কার্বন নির্গমনে ভূমিকা শূন্য।’

ঢাকার দক্ষিণখানে বায়তুর রউফ নামের একটি শৈল্পিক নকশার মসজিদের জন্য ২০১৮ সালে স্থপতি হিসেবে জামিল প্রাইজ পান মেরিনা তাবাশ্যুম। এর আগে একই নকশার জন্য ২০১৬ সালে তিনি সম্মানজনক আগা খান পুরস্কার পান। সুলতানি আমলের স্থাপত্যের আদলে নকশা করা এ মসজিদ ২০১২ সালে ঢাকায় নির্মিত হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত