ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

টিপু-প্রীতি হত্যা: আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতাসহ ৩৩ জনের নামে চার্জশিট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৩, ১৬:১৪

টিপু-প্রীতি হত্যা: আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতাসহ ৩৩ জনের নামে চার্জশিট
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা টিপু ও কলেজছাত্রী প্রীতি। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ নেতা টিপু ও কলেজছাত্রী প্রীতি হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১৪ মাস পরে তদন্ত শেষ করে আদালতে দেয়া চার্জশিটে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, টিপু হত্যা মামলার তদন্তে ৩৪ জনের সংশ্লিষ্টতা পায় ডিবি। তাদের মধ্যে এক্সএল সোহেল নামে এক সন্দেহভাজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারায় তাকে অভিযোগপত্রে রাখা হয়নি। বাকি ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, নয়জন এখনো পলাতক।

হারুন বলেন, সুমন শিকদার ওরফে মুসার পরিকল্পনায় ওই হত্যার ঘটনায় মাসুম মো. আকাশ (৩৪) (বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার), মো. শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম (ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার), নাসিরউদ্দীন মানিকসহ কয়েকজন ছিলেন।

তদন্তে হত্যার কারণ সম্পর্কে কী জানা গেছে– এ প্রশ্নে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি, এলাকায় আধিপত্য ও মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণের কিছু বিষয় তদন্তে এসেছে।

জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪) ছিলেন ঢাকার মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন তিনি। মতিঝিল এজিবি কলোনির গ্র্যান্ড সুলতান রেস্তোরাঁর মালিক টিপু ঠিকাদারির কাজও করতেন। দুই মেয়ে, এক ছেলের জনক টিপু থাকতেন শাহজাহানপুরে।

২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাতে খিলগাঁও রেলগেইটের কাছে আক্রান্ত হয় টিপুর গাড়ি। মোটরসাইকেলে আসা এক ব্যক্তি যানজটে আটকে পড়া টিপুর গাড়ির কাছে এসে তাকে গুলি করে। সে সময় গাড়ির পাশে রিকশার আরোহী কলেজছাত্রী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নিলে দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

হত্যাকাণ্ডের পর টিপুর স্ত্রী স্থানীয় নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি যে মামলা করেছেন, তাতে আসামির তালিকায় কারও নাম উল্লেখ করা ছিল না। পরে ওই বছর ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া থেকে মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ব্যক্তিই টিপুকে গুলি করেছিলেন। পরে আরফান উল্লাহ দামাল নামে আরও একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় কমলাপুর থেকে।

এরপর ২ এপ্রিল সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মতিঝিল থানার ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব সে সময় বলেছিল, চাঁদাবাজি ও দরপত্র নিয়ে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব, রিয়াজুল হক মিল্কী হত্যার বদলা এবং বোঁচা বাবু হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওমর ফারুকসহ স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। বাজেট ছিল ১৫ লাখ টাকা।

পরে এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন সুমন শিকদার মুসাকে ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন আগেই মুসা দুবাই চলে গিয়েছিলেন। হত্যা পরিকল্পনা এবং যাবতীয় নির্দেশনা সেখান থেকেই দেওয়া হয় বলে সে সময় তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন।

তারা বলেছিলেন, মুসা ‘রাজনীতি ও অপরাধজগতের মধ্যে যোগসূত্র’ হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ঢাকা ও দুবাইয়ের অপরাধজগতের মধ্যেও সংযোগের সমন্বয় করতেন তিনি।

টিপু হত্যা মামলা অভিযোগপত্রে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর, যুবলীগ নেতা মারুফ রেজা সাগর (গ্রেপ্তার), ছাত্রলীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ার রানার (গ্রেপ্তার) নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আরো পড়ুন: টিপু-প্রীতি হত্যা: সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জনের জামিন

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত