আমার জন্মের কী বেশি প্রয়োজন ছিল?
রাজীব কুমার দাশ
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২১, ১৮:২৯
এখনো মাঝে-মাঝে নিজেকে প্রশ্ন করি, ‘আমার জন্মের কী বেশি প্রয়োজন ছিল?’
-কার বেশি প্রয়োজন ছিল:
-জন্মদাতা-জননী নাড়ি কাটা জন্মধাত্রী, চন্দ্র-সূর্য্য গ্রহ নক্ষত্র ভূলোক-দ্যুলোক!
-একদিন সাহস করে বাবাকেও অক্ষম আক্রোশে জিজ্ঞেস করেছিলাম; ‘বাবা আমার জন্মের কী বেশি প্রয়োজন ছিল?’
-বিবশ মুখে অস্পষ্ট স্বরে বাবা কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারেননি
-মা বলেছে, ‘তোমারে এমন প্রশ্নতো কেউ কোনোদিন করেনি বাপু! একদিন অনেক বড় হবে। এটা-সেটা করে দেশ-দশের সেবা করে বংশের বাতি জ্বালাবে।’
এবার জন্মের প্রয়োজন বুঝেছি:
-বাঁশঝাড় কেরোসিন আলোর গ্রামগুলোর বেদনার মহাকাব্য লেখার প্রয়োজনে আমাকে দরকার ছিল
-বিদায় বেলা আমার পানে তাকিয়ে দিগন্তরেখা পার করে দেয়া রাস্তার শতবর্ষী বটগাছের অব্যক্ত কষ্টের হাহাকার ক্রন্দনের দিনলিপি লেখার আয়োজনে; জন্মের প্রয়োজন ছিল।
-জাতির পিতার শরীরে লেগে থাকা হায়েনা বুলেট অট্টহাসির বিষদাঁত চিরতরে মূল্যচ্ছেদ করতে আমার জন্মের প্রয়োজন ছিল।
-চার হাজার ছয়শো বিরাশি দিনের ভীষণ কারাগার-বেদনা মহাকাব্য রচনায় জন্মের প্রয়োজন ছিল।
-হেমলকের হাত ধরে বুলেট বিষে মহানায়ক সক্রেটিসের প্রস্থান জবানবন্দি লিখতে পৃথিবীতে জন্মের প্রয়োজন ছিল।
-ব-দ্বীপের আমজনতা মনে সুখ দুঃখের মহাকাব্য লিখতে আমি জন্মেছি
-এখন ভীষণ কষ্টে পিতার রক্তে রঞ্জিত স্বদেশে উত্তর খুঁজে বেড়াই, ‘আমি জন্মেছি কেন!’
লেখক: রাজীব কুমার দাশ, প্রাবন্ধিক ও কবি, পুলিশ পরিদর্শক।