খালেদা জিয়া ভালো আছেন, জানালেন চিকিৎসক

করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভালো আছেন, তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী। সোমবার রাজধানীর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর মেডিকেল বোর্ড তথা তার চিকিৎসক টিমের প্রধান মেডিসিন ও বক্ষ ব্যাথি বিশেষজ্ঞ সাংবাদিকদের একথা জানান। এরআগে বিকেল ৫টায় মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ‘ফিরোজায়’ প্রবেশ করেন। বেরিয়ে আসেন সন্ধ্যা ৬টার পর।

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক আগামীকাল

তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত বলব যে, উনার (খালেদা জিয়া) অবস্থা খুবই স্থিতিশীল। আজকে পর্যন্ত উনি যথেষ্ট ভালো আছেন। উনি স্পিরিটেড আছেন। আমরা আশা করছি যে, যদি এভাবে আরো এক সপ্তাহ পার হওয়া যায় তাহলে ইনশাল্লাহ আমরা বিপদ থেকে মুক্ত হয়ে যাবো।

মেডিকেল বোর্ডে অনেক বি্শেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রয়েছে জানিয়ে সিদ্দিকী বলেন, আমাদের সাথে বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রয়েছেন। সবচেয়ে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যে, ইউকেতে যে উনার ছেলে ও ছেলের ওয়াইফ আছেন ডা. জোবাইদা রহমান সে ঢাকা মেডিকেল কলেজে আমার স্টুডেন্ট ছিলো উনিও সব সময় মোটিভেট করছেন। আমরা একটা টিম ওয়ার্ক হিসেবে আলোচনা করে উনার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা করছি। কোথাও কোনো গ্যাপ বা কোথাও কোনো রকমের সন্দেহের কিছু অবকাশ নেই।

৭৫ বছর বয়েসী খালেদা জিয়ার স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন জানতে চাইলে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত যে, উনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো আছে বলে মনে হচ্ছে।

খালেদা জিয়াকে কি হাসপাতালে নেয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক টিমের প্রধান বলেন, আপনারা জানেন যে, কোবিডে আনসারটেনিটি আছে। পৃথিবীর কেউ বলতে পারবে না যে, করোনা প্রথম সপ্তাহে কেমন থাকবে, সেকেন্ড উইকে কি বিহেব করবে। কারো পক্ষে বলা সম্ভব না। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি আছে। আমরা যদি কখনো মনে করি, বিন্দুমাত্র আমাদের মনে হয় যে, তাকে হাসপাতালে নেয়া দরকার। আমরা সেই মুহুর্তে তাৎক্ষনিক হাসপাতালে নিয়ে যাবো- সেই ধরণের প্রস্তুতি আমরা রেখেছি।

এফএম সিদ্দিকী বলেন, আমরা তিন চার জন ছিলাম। উনি আমাদের সামনে এসে বসেছেন। আমি উনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দীর্ঘ বছর ধরে। এর আগেও উনাকে যতবার আমি যেভাবে এসে দেখেছি, সেভাবেই দেখেছি। উনি রেডি হয়ে আসেন, বসেন। আমরা সেভাবে যাই। আমাদের সামনে সামনাসামনি কথা বলেন। শুধূ তাই নয়, আমি উনার পাস অক্সিমিটার দিযে দেখেছি, চেস্ট অলকালটেক করে দেখেছি। যেভাবে যা যা দেখা দরকার সেভাবে দেখেছি। অর্থাৎ আমাদের দেখা-পরীক্ষার কোনো কিছুর মধ্যে আমরা কোনো রকমের লিনেয়েন্সি সো করি নাই, ভেরি প্রফেশনালি আমরা এটা হেন্ডেল করছি।”

তিনি বলেন, সবাই কোবিড পজেটিভ। প্রত্যেককে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ভালো দিক হচ্ছে বেশিরভা্গই সিমটেমেটিক। প্রথম দিকে ১/২ জনের জ্বর ছিলো। ওদের এখন জ্বর নাই, সবাইকে আইসোলেশনে রাখা হয়ে্ছে। সবাইকে চিকিৎসা করা হচ্ছে। ম্যাডাম শুধু নিজেরই না, উনি ওরা (কোবিড আক্রান্তরা) ঔষধ খাচ্ছে কিনা সেটাও উনি তদারক করছে। আজকে আমি উনাকে দেখে চলে এসেছি। উনি দোতলায়। উনি লাস্টে খবর পাঠিয়েছেন যে, আমার দুইজনকে আপনি একটু দেখে যান। তো আমি উনার রিকুয়েস্টে ওদেরকেও দেখে এসেছি । এভাবে উনি নিজেরও চিকিৎসা করছেন, অন্যরা ঠিকমতো ঔষধ খাচ্ছে কিনা সেটাও দেখছেন। উনি আমাকে বলেছেন যে, ওরা না হলে ঔষধ খায় না।”

খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমের এই বৈঠকে অনলাইনেও আরো কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অংশ নেন। এছাড়া লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও ইন্টারনেটে যুক্ত থেকে বৈঠকে অংশ নেন।

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় চিকিৎসক টিমের সদস্য বক্ষব্যাথি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আব্দুস শাকুর খান, ইউরে্ালিজিস্ট অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও ডা. মো. আল মামুন পাশে ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএমআর/কেএস