ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইসির আচরণবিধি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থি: বিএনপি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:১২

ইসির আচরণবিধি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থি: বিএনপি

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার ও কর্মকর্তারা নিজেরা যে আচরণবিধি তৈরি করছেন তা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ সব কথা বলেন।

ইসির আচরণবিধি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থি দাবি করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই কমিশনের কয়েকজন আধিকারিক কমিশনের ক্ষমতা কমিয়ে সরকারকে দিতে চান। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। অথচ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টির করতে আইন করতে চাচ্ছেন।

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ‘চারদিকে নৈরাশের ছবি’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার পুনরায় একতরফা নির্বাচন করার জন্য এখন এজিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। ভোটাররা বাড়ি ছাড়া, ঘর ছাড়া, গ্রাম ছাড়া, জেলা ছাড়া। এজিদের মতো ফোরাত নদীর তীর অবরোধ করার ন্যায় এরা মানুষের ভোটাধিকারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সন্ত্রাসী পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হচ্ছে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসিকে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে, তারা আগামী সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। অন্যান্য দাতা ও সাহায্য সংস্থা, বিদেশী মিশন থেকেও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ বাংলাদেশে বর্তমানে নির্বাচনের কোনও পরিবেশ নেই।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাহেবকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা যেভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন তা সন্ত্রাসী আচরণ এবং তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কেন ছুটি নিয়েছেন? না কী নিতে বাধ্য করা হয়েছে, তাও রহস্যজনক। ইসিকে সর্বোচ্চ চাপে রেখে কাজ করাচ্ছে সরকার।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা তথ্য তুলে ধরে রিজভী বলেন, সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মিথ্যা মামলা ৪,২১৩ টি এবং এজাহারে জ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৯৫,৬৩২ জন, এজাহারে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২,৮৮,১৪৬ জন। সর্বমোট জ্ঞাত ও অজ্ঞাত এজাহার মিলে আসামি ৩,৮২,৭২৮ জন। এপর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫০৬০ জন।

বেআইনীভাবে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় নির্ধারণে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আমরা আগেই বলেছি, বিবাদীর অনুপস্থিতিতে মামলার রায় নির্ধারণ পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। সরকার প্রধানের নির্দেশেই সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলকভাবে এ রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। সেজন্যই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতের ওপর চাপসৃষ্টি করে রায়ের দিন ধার্য করে নিয়েছে। আরেকটি ফরমায়েশি রায় হতে যাচ্ছে কী না তা দেখার জন্য দেশবাসী প্রহর গুনছে। এ আদালতে ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে কী না, সেই প্রশ্নও মানুষের মনে জেগে উঠছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারের ইচ্ছাধীন চিকিৎসায় বেগম জিয়া যে সুচিকিৎসা পাবেন না, সেই আশঙ্কাটি আমরা পূর্বেই করেছিলাম। এ বিষয়ে বারবার আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবহিত করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনকে বন্দী করে রাখাই হয়েছে তো কষ্ট দেয়ার জন্য। সেখানে উন্নতমানের চিকিৎসার প্রশ্নই আসে না। বিএসএমএমইউতে শুধুমাত্র যে ফিজিও থেরাপী দেয়া হয়, সেটিও পর্যাপ্ত নয়। তার ব্যক্তিগত বিশেজ্ঞ ডাক্তারদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। অথচ এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।

বেগম জিয়া সুস্থ্য হলে তো সরকার প্রধানের প্রতিহিংসা চরিতার্থ হবে না মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এজন্যই আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে স্বজ্জিত বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসার সুযোগ থেকে বেগম জিয়াকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের ধ্বজাধারি প্রধানমন্ত্রী দেশের একজন অগ্রগণ্য জাতীয় নেতাকে অনুন্নত চিকিৎসার সরঞ্জামাদির আওতায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে বাধ্য করছে।

আবারও বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তার পছন্দমত চিকিৎসক এবং হাসপাতালের ব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবি জানান রিজভী।

কেএস/ডিপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত