ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

কোন ভাষায় কত অক্ষর

  ফিচার ডেস্ক

প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৪৫  
আপডেট :
 ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৪৯

কোন ভাষায় কত অক্ষর
প্রতীকী ছবি

ভাষা মানুষে-মানুষে যোগাযোগের প্রধানতম বাহন। ভাষার কতটুকু মানুষের কোন জন্মগত বৈশিষ্ট্য আর কতটুকু পরিবেশনির্ভর সে ব্যাপারে আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীদের মতভেদ রয়েছে। তবে সবাই একমত যে স্বাভাবিক মানুষমাত্রেই ভাষা অর্জনের মানসিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়, এবং একবার ভাষার মূলসূত্রগুলি আয়ত্ত করে ফেলার পর বাকি জীবন ধরে মানুষ তার ভাষায় অসংখ্য নতুন নতুন বাক্য সৃষ্টি করতে পারে।

ভাষা মূলত বাগযন্ত্রের মাধ্যমে কথিত বা ‘বলা’ হয়, কিন্তু একে অন্য মাধ্যমে তথা লিখিত মাধ্যমেও প্রকাশ করা সম্ভব। এছাড়া প্রতীকী ভাষার মাধ্যমেও ভাবের আদান-প্রদান হতে পারে।

বিশ্বের ১১টি সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা হল চীনা, ইংরেজি, হিন্দি-উর্দু, স্পেনীয়, আরবি, পর্তুগিজ, রুশ, বাংলা, জাপানি, জার্মান ও ফরাসি। চীনা ও জাপানি ভাষা ব্যতীত বাকি ৯টি ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং বিশ্বের ৪৬% মানুষ এই সব ভাষায় কথা বলেন।

সবচেয়ে বেশি ভাষার আঁতুড়ঘর দুটি দেশ: পাপুয়া নিউ গিনি, যেখানে ৮৫০টিরও বেশি ভাষা রয়েছে; অপরটি ইন্দোনেশিয়া, যেখানে ৬৭০টি ভাষা লোকমুখে ফেরে। মহাদেশের বিচারে বিশ্বের ৬০০০টির মধ্যে ১৫ শতাংশ ভাষায় কথা বলা হয় দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকায়, আফ্রিকায় ৩০ শতাংশ, এশিয়াতেও শতাংশের হিসেব ৩০, সবচেয়ে কম ইউরোপে, সেখানে মাত্র ৩ শতাংশ।

এদের মধ্যে অনেকগুলিই ভাষাই পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত। আবার অনেকগুলি ভাষা আছে যেগুলি একটিই ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষই ব্যবহার করতেন। বংশধরদের অভাবে সেই ভাষা শেষ হয়ে গিয়েছে।

আজ আমরা কিছু ভাষার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি উক্ত ভাষায় কতোটি অক্ষর রয়েছে তা জানব

তামিল: তামিল ভাষায় মূল অক্ষর ৩১টি। তবে যুক্তাক্ষর ধরলে সেখানে আরো ২১৬টি অক্ষর যুক্ত হয়। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে ২৪৭টি অক্ষর৷ বিশ্বের যে কোনো ভাষার চেয়ে বেশি অক্ষর তাই তামিলে।

খামের: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পুরনো দেশগুলির অন্যতম কম্বোডিয়া। খামের সংস্কৃতি বহু শতাব্দীর। খামের ভাষাও খুব সমৃদ্ধ৷ খামের ভাষায় ৭৪টি অক্ষর আছে, যার মধ্যে ৩৫টি ব্যাঞ্জনবর্ণ এবং ১৪টি স্বরবর্ণ। বাকি অক্ষরগুলি যুক্তবর্ণ৷ তবে ব্যাঞ্জনবর্ণের মধ্যে ৩৩টি এখন ব্যবহৃত হয়, দুইটির কোনো ব্যবহার নেই।

থাই: থাইল্যান্ডের ভাষা থাই৷ থাই ভাষায় সব মিলিয়ে ৭০টি অক্ষর, যার মধ্যে ৪৪টি ব্যাঞ্জনবর্ণ এবং ১৫টি স্বরবর্ণ। এই দুই অক্ষর মিলিয়ে বেশ কিছু যুক্তাক্ষরও তৈরি হয়।

মালয়ালম: দক্ষিণ ভারতের কেরলে মালয়ালম ভাষার প্রচলন আছে। এই ভাষায় মোট ৫৮টি অক্ষর, যার মধ্যে ১৩টি স্বরবর্ণ এবং ৩৬টি ব্যাঞ্জনবর্ণ। আর কিছু অন্তচিহ্ন আছে। ওই অঞ্চলের ছোট ছোট বেশ কয়েকটি ভাষাও মালয়ালম অক্ষরেই লেখা হয়।

তেলেগু: ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে তেলেগু মুখ্যভাষা। তেলেঙ্গানা প্রদেশেও৷ কন্নড় ভাষার সঙ্গে তেলেগু লিপির বহু মিল আছে। কারণ, দু’টি ভাষারই সৃষ্টি একই জায়গা থেকে। সব মিলিয়ে ৫৬টি অক্ষর আছে এই ভাষায়।

সিংহলী: শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রভাষা ভাষা সিংহলী৷ অসামান্য সুন্দর এই ভাষার অক্ষর বিন্যাস। সব মিলিয়ে অক্ষরের সংখ্যা ৫৪। এই ভাষাতেও সংযুক্ত অক্ষরের প্রচলন আছে।

বাংলা: বাংলায় সব মিলিয়ে ৩২টি অক্ষর৷তবে যুক্তাক্ষর ধরলে ৫২টি অক্ষর। দেবনাগরী লিপি না হলেও তার সঙ্গে বাংলা বর্ণের প্রচুর মিল। মূলত এই লিপির জন্ম ব্রাহ্মী থেকে।

কন্নড়: দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৪টি ভাষার একটি কন্নড়। কর্ণাটকে মূলত এই ভাষা ব্যবহৃত হয়। কন্নড় ভাষায় ১৩টি স্বরবর্ণ আছে। তবে তার মধ্যে অনুস্বর এবং বিসর্গ নেই৷ কন্নড়ে ব্যাঞ্জনবর্ণের সংখ্যা ৩৬।

হিন্দি: হিন্দিও স্বরবর্ণ এবং ব্যাঞ্জনবর্ণে বিভক্ত, যার মধ্যে ১১টি স্বরবর্ণ এবং ৩৩টি ব্যাঞ্জনবর্ণ। হিন্দি ভাষার উৎপত্তি দেবনাগরী থেকে। সংস্কৃতের প্রচুর প্রভাব আছে এই ভাষায়।

হাঙ্গেরিয়ান: লাতিন বর্ণমালা থেকেই হাঙ্গেরিয়ান বর্ণমালার উৎপত্তি। রোমান বর্ণমালার এ থেকে জেড ছাড়াও এই বর্ণমালায় আরো বেশ কিছু অক্ষর দেখতে পাওয়া যায়।

অবখাজ: জর্জিয়ার কোনো কোনো অংশে এই ভাষায় কথা বলা হয়। অবখাজ ভাষায় ৪১টি অক্ষর। ১৮৮০ সালে এই ভাষার বর্ণমালা তৈরি করা হয়।

আর্মেনিয়ান: আর্মেনিয়ার প্রধান ভাষা আর্মেনিয়ান। তাদের বর্ণমালায় মোট অক্ষরের সংখ্যা ৩৬। তবে কালে কালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯।

রুশ: আধুনিক রুশ বর্ণমালায় ৩৩টি অক্ষর। রুশ ভাষায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অক্ষর ঔ, এ, আ এবং ন৷ রুশ ভাষার সাহিত্য সারা পৃথিবীতেই এক সময় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।

আজারবাইজানি: আজারবাইজানে বলা হয় আজারবাইজানি ভাষা। এই ভাষার অক্ষরবিন্যাসও তৈরি হয়েছে লাতিন বর্ণমালার উপর ভিত্তি করে। তবে লাতিনের চেয়ে কিছু আলাদা অক্ষরও তাদের বর্ণমালায় ব্যবহার করা হয়।

ইংরেজি: ইংরেজিতে মোট ২৬টি অক্ষর আছে, যার মধ্যে ৫টি ভাওয়েল এবং ২১টি কনসোনেন্ট। সারা পৃথিবীতেই ইংরেজি ভাষার ব্যাপক ব্যবহার। মূলত রোমান স্ক্রিপ্ট থেকেই তৈরি হয়েছে ইংরেজির বর্ণমালা।

গ্রিক: গ্রিক বর্ণমালায় মোট ২৪টি অক্ষর, যার প্রথম অক্ষর আলফা। আর শেষ হয় ওমেগা দিয়ে৷ বিজ্ঞান এবং গণিতের বহু ক্ষেত্রে এখনো গ্রিক অক্ষর ব্যবহার করা হয় সারা পৃথিবীতেই।

হিব্রু: আরবি, ফারসি কিংবা উর্দুর মতো হিব্রু ভাষাও বাঁ দিক থেকে ডানদিকে লেখা হয়। এই ভাষার বর্ণমালায় মোট ২২টি অক্ষর আছে৷ইজরায়েলের রাষ্ট্রভাষা হিব্রু। এই ভাষার ইতিহাসও কয়েক হাজার বছর প্রাচীন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত