ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

আইনস্টাইনের ভুল, বড় ডাস্টবিন ও অন্যান্য

  অমিয়া হাশেম

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১২:০৫  
আপডেট :
 ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:৫৪

আইনস্টাইনের ভুল, বড় ডাস্টবিন ও অন্যান্য

আইনস্টাইন পদার্থিবদ্যার জটিল তত্ত্বই শুধু দেন নি; গবেষণার পাশাপাশি তিনি জন্ম দিয়েছেন অসাধারণ অনেক মজার ঘটনা। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা তার তত্ত্ব নিয়ে মশগুল থাকলেও সাধারণ মানুষকেও কম আনন্দ দেনিন আলবার্ট আইনস্টাইন। লেখাপড়া ও গবেষণার জন্য কাগজ-পেন্সিলের পাশাপাশি একটা বড় ডাস্টবিনও লাগতো তার।

১. নিজের ভুলভ্রান্তি নিয়ে বিস্তর ভাবতেন আইনস্টাইন। ১৯৩৫ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য আপনার কী কী দরকার? আইনস্টাইন বললেন, একটা ডেস্ক, কিছু কাগজ আর একটা পেনসিল। সঙ্গে দরকার বড় একটা ডাস্টবিন, যেখানে আমার সব ভুল বা ভুলে ভরা কাগজগুলো ফেলব!

. এক সহকর্মী আইনস্টাইনের কাছে একবার তার টেলিফোন নম্বরটা চাইলেন। তখন আইনস্টাইন একটা টেলিফোন বই খুঁজে বের করলেন এবং তাতে তার নম্বরটা খুঁজতে লাগলেন। তখন সহকর্মীটি বললেন, কী ব্যাপার, নিজের টেলিফোন নম্বরটাও মনে নেই আপনার? আইনস্টাইন বললেন, না। তার দরকারই বা কী? যেটা আপনি বইতে পাবেন, সে তথ্যটা মুখস্থ করে মস্তিষ্ক খরচ করবেন কেন?

৩. স্বামী সম্পর্কে কেমন ধারণা ছিল আইনস্টাইনের স্ত্রীর? তার স্ত্রীকে একবার জিজ্ঞাসা করা হলো, আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব কি বুঝতে পারেন? জবাবে তিনি বললেন, না, কিন্তু আমার স্বামীকে বুঝি। আমি জানি, তাকে বিশ্বাস করা যায়।

৪. একবার বেলজিয়ামের রাণী আইনস্টাইনকে আমন্ত্রণ জানালেন তার দেশ সফরের। নির্দিষ্ট দিনে আইনস্টাইনকে রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাবার জন্য রেল স্টেশনে হাজির হল গাড়ির বহর। কিন্তু কোথায় কী? রেল স্টেশনে আইনস্টাইনকে খুঁজেই পাওয়া গেল না। ফিরে চলল গাড়ির বহর রাজপ্রাসাদের দিকে। কিছুক্ষণ পর সাদাসিধে পোশাকে বেহালা বাজাতে বাজাতে রাজপ্রাসাদে হাজির হলেন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন। রাণী ব্যাপারটাতে লজ্জিত হলেন। সাথে সাথে ক্ষমা প্রার্থণা করে জানালেন, বিজ্ঞানীকে নিয়ে আসার জন্য গাড়ি বহর রেল স্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু তাকে না পেয়ে ফিরে এসেছে। আইনস্টাইন বললেন, আমি ইচ্ছে করেই গাড়ি বহরকে এড়িয়ে গেছি। আর পায়ে হেঁটে বেহালা বাজাতে বাজাতে এসেছি। যদি আপনার ওই রাজকীয় গাড়িতে আসতাম, তবে কি এভাবে বেহালা বাজাতে পারতাম? সাধারণ মানুষের মত শহরটাকে দেখে নিতে পারতাম?’ এমনই অদ্ভত সহজ সরল আর সাধারণ ছিলেন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন।

৫. আইনস্টাইনের সরলতার ধারণা মেলে আরেকটি মজার ঘটনায়। আপেক্ষিকতা তত্ব আবিষ্কার করে তিনি তখন বিখ্যাত ও বিতর্কিত। আসলে বাস্তবতা ছিলো, বিজ্ঞানী-অবিজ্ঞানী কারোর মগজের এন্টেনাই ব্যাপারটা ক্যাচ করতে পারছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা সেমিনারে, বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবিত তত্ত্বটি বোঝাতে লেকচার দিতে যেতেন। প্রায় সব সেমিনারে তিনি একই ধরনের আলোচনা করতেন। একবার এমনি এক সেমিনারে তিনি আমন্ত্রিত হয়েছেন, লেকচার দেবার জন্য। পথে তার ড্রাইভার করে বসল এক আজব আবদার। বলল, স্যার, আপনার লেকচারগুলো শুনতে শুনতে আমার মুখস্থ হয়ে গেছে। আজ একদিনের জন্য আমি আইনস্টাইন সেজে সেমিনারে বক্তব্য দিতে চাই। মজার মানুষ আইনস্টাইনেরও কথাটা খুব মনে ধরল। তিনি এক কথায় রাজি। দেখাই যাক না, ব্যাপারটা কী হয়? ড্রাইভার আইনস্টাইন সেজে অনুষ্ঠানে গেল বক্তব্য দিতে, আর স্বয়ং আইনস্টাইন দর্শক সারিতে বসে রইলেন আইনস্টাইনেরই ড্রাইভার হয়ে। তখন তো আর মিডিয়ার এত দৌরাত্ন্য ছিল না। তাই ব্যপারটা কেউ বুঝতে পারল না। আইনস্টাইনরূপী ড্রাইভার মঞ্চে বক্তব্য রাখল এবং চমৎকার বক্তব্য রাখল। দর্শক সারিতে বসে মুগ্ধ আইনস্টাইন বার বার হাত তালি দিতে লাগলেন। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত একজন আইনস্টাইনের ড্রাইভারের কাছে গিয়ে বললেন, আপনার বক্তব্যটি আমার খুব ভাল লেগেছে। কিন্তু কি জানেন, আমি এই অমুক অমুক বিষয়গুলো একদম বুঝতে পারিনি। আপনি কি অনুগ্রহ করে আমাকে বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেবেন?’ আইনস্টাইনের ড্রাইভার বিন্দু মাত্র না ঘাবড়ে উত্তর দিল, ওহ! এই ব্যাপার? এই ব্যাপারটা তো আমার ড্রাইভারই বুঝিয়ে দিতে পারবে। চলুন তার কাছেই যাই। (সংগ্রহ)

  • সর্বশেষ
  • পঠিত