ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক গাছ কেটে দ্রুত নির্মাণের দাবি

  বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০১৮, ২১:০২

বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক গাছ কেটে দ্রুত নির্মাণের  দাবি

বেনাপোল ও যশোরের নাগরিক সমাজ গাছ রক্ষা নয়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কটি ৬ লেন দেখতে চায়। সময়ের প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলেই সড়কটি অধিকতর প্রশস্ত করার ব্যাপারে জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে শুক্রবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

পরে বেনাপোল পর্যটন মোটেলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে মত বিনিময় করেছেন। সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক এমপির নেতৃত্বে এ কে এম এ আওয়াল এমপি, নাজমুল হক প্রধান এমপি, মনিরুল ইসলাম এমপি ও শেখ আফিল উদ্দিন এমপিসহ সড়ক সচিব ফজলুল ইসলাম সভায় উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক অধিকার আন্দোলন, যশোর এর উদ্যোগে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, এনামুল হক মকুল, ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের বন্দর সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, বেনাপোল প্রেস ক্লাবের সভাপতি মহসিন মিলন প্রমুখ।

এ সময় সংসদীয় উপ-কমিটির সভাপতি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক বলেন, যারা উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে। এটা স্বাধীনতার মাস। দ্রুত এ মহাসড়কের কাজ শুরু হবে। এ সড়কটি ৮ লেনের মাষ্টার প্লান করে ৬ লেনে উন্নতি করা হবে। এ সড়ক নির্মাণের পর দু’পাশ দিয়ে বনায়ন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।

সভায় গাছ রেখে সড়ক প্রশস্ত করলে শত শত একর কৃষি জমি নষ্ট, কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব ও শেঁকড়ের কারণে ভবিষ্যৎ ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলেও মত প্রকাশ করা হয়। এছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও ঐতিহ্য স্মারক বৃক্ষ রক্ষার দাবিতে দেয়া আইনি নোটিশ এবং হাইকোর্টে দাখিল করা রিটটিও তুলে নেয়ার দাবি তোলা হয়েছে। এর আগে সকালের দিকে বেনাপোল বন্দর এলাকায় বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন, বেনাপোল প্রেস ক্লাব, ও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মানব বন্ধন করেছেন।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর হওয়ায় এখানে আমদানি-রফতানি অন্য সব বন্দর থেকে কয়েকগুণ বেশি। যে কারণে এই সড়কটিতে যানবাহনের ব্যাপক চাপ দেশের অন্য সকল সড়ক মহাসড়কের তুলনায় সর্বাপেক্ষা বেশি। প্রতিদিন কয়েক হাজার ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহন আসা যাওয়া করে। এশিয়ান হাইওয়ের এই সড়কটি দেশের সব শ্রেণীপেশার মানুষের অতিব প্রয়োজনীয় এই সড়কটি সম্প্রসারণ করা ছাড়া বিকল্প নেই বলে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে মতামত উঠে আসার পর জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্প অনুমোদন হয়।

সরকার দেশের অর্থনীতির জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারে গত বছরের ২১ মার্চ ৩শ’ ২৯ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি সড়কের দু’পাশের গাছ কেটে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়। যানবাহনের চাপ সামলাতে ২৪ ফিট প্রস্থের রাস্তাটি ৪০.৩৫ ফিট চওড়া করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। প্রকল্প পাশও হয়। যখন সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে তখন হঠাৎ গাছ কাটার পক্ষে-বিপক্ষে মতামত তৈরি হয় যশোরে।

ওই বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে গত ৬ জানুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যশোরের বেশ কয়েকজন এমপিসহ সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দু’জন অতিরিক্ত সচিব উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় বিশেষজ্ঞদের মতামত বিশ্লেষণ করে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত ১৮ জানুয়ারি উচ্চ আদালত ৬ মাসের জন্য গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশনা দেন। ফলে দেশের জন্যে অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ যশোর-বেনাপোল রোড সম্প্রসারণ কাজ ঝুলে যায়। এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এরপর সরকারকে জনস্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সড়কটি প্রশস্ত করার তাগিদ দিয়ে মাঠে আরও জোরেশোরে নামেন নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের নেতৃবৃন্দ। তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক এই সড়কের দ্রুত সংস্কার চান।

এনএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত