ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

সেই মুক্তামনির হাত থেকে বের হচ্ছে পোকা!

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২০ মে ২০১৮, ১১:৩৯  
আপডেট :
 ২০ মে ২০১৮, ১১:৫০

সেই মুক্তামনির হাত থেকে বের হচ্ছে পোকা!

রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামনির শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবণতি হচ্ছে। তার ডান হাতটি ফুলে যাওয়ায় সারাদিনই শুয়ে থাকতে হয় তাকে। এমন কি হাতটি পরিষ্কার করার সময় বেরিয়ে আসছে দুর্গন্ধযুক্ত রক্ত ও সাদা পোকা।

মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম গাজী স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রিলিজের সময় মুক্তার হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়েছিল। এটা মাঝে মাঝে খুলে পরিষ্কার করার নিয়মও দেখিয়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এখন দুইদিন পর পর পরিষ্কার না করলে হাতটিতে দুর্গন্ধ হয়, আবার বেশিক্ষণ খুলে রাখলেও হাত অনেক ফুলে যায়। মাঝে মধ্যে সাদা সাদা পোকাও বের হয়। মনে হয় পুরো হাতটি পচে গেছে। আমরা মুক্তামনির আশা ছেড়ে দিয়েছি। এখন আল্লাহ ভরসা।

অসুস্থ মুক্তামনি জড়ানো কণ্ঠে বলে, আমি আর সুস্থ হব না। ডাক্তার স্যাররা অনেক চেষ্টা করেও আমাকে সুস্থ করতে পারেননি। জানি না কতদিন এভাবে বেঁচে থাকব, আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।

বিছানায় শুয়ে-বসেই বেশির ভাগ সময় কাটছে মুক্তামনির। তবে তাকে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছে তার পরিবার। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে একমাসের জন্য বাড়িতে এসেছিল মুক্তামনি। তারপর ছয়মাস অতিবাহিত হলেও তাকে আর ঢাকা ফেরানো হয়নি।

এদিকে নিয়মিত মুক্তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন। এ প্রসঙ্গে মুক্তার বাবা বলেন, ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন স্যারের সঙ্গে কথা হচ্ছে মাঝে-মধ্যে। ফোন করে মুক্তামনির সম্পর্কে স্যার সব শুনছেন। কিছুদিন আগে তিনি ছবি তুলে পাঠাতে বলেছিলেন। ছবিতে হাতের অবস্থা দেখে সামন্ত স্যার বলেছেন, আবারও তো হাতের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি এও বলেছেন, ঈদের পর হয়তো ওকে আবারও ঢাকায় নিয়ে যাবেন।

প্রসঙ্গত, বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনিকে নিয়ে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হলে, তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা মুক্তামনির হাত দেখে আঁতকে ওঠে অপারেশনের জন্য অপারগতা প্রকাশ করেন।

এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা দেশেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কয়েক দফা অপারেশনও করেন। তবে হাতের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেননি। অবশেষে দীর্ঘ ৬ মাস চিকিৎসা সেবার পর ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে আসে মুক্তামনি।

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত