ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষকের নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

  মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০১৮, ২১:২৬  
আপডেট :
 ১৬ আগস্ট ২০১৮, ২২:০২

শিক্ষকের নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

মাদারীপুরে শিক্ষকের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সাথী আক্তারের (১৫) মৃত্যুর পর পালিয়ে গেছেন পৌর এলাকার চরমুগরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নূর হোসেন হাওলাদার। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে ওইস্কুলের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর গ্রামের ইকবাল বেপারীর প্রথম পক্ষের মেয়ে সাথীর সঙ্গে গত শনিবার তার দুই সহপাঠির কথা কাটাকাটি হয়।

এ ঘটনাটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর হোসেন হাওলাদার জানতে পেরে সাথী ও তার বান্ধবীদের ডেকে নিয়ে মারপিট ও গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ।

স্থানীয়রা জানান, এ অপমান সইতে না পেরে সাথী বিষপান করলে তার মামা বাড়ির লোকজন সাথীকে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সে মামার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতো। এক পর্যায়ে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সাথীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরদিন সকালে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সাথীর মৃত্যুর খবর মাদারীপুরের চরমুগরিয়ায় পৌঁছালে স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ সময় তারা চরমুগরিয়া বন্দরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করে। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

নিহত সাথীর সহপাঠি রিতু আক্তার ও অন্তরা আক্তার জানায়, ঘটনার দিন সাথীর সঙ্গে দুই বান্ধবীর ঝগড়া হয়। স্যার (প্রধান শিক্ষক) সাথীকে মারধর ও গালাগাল করে রোদের মধ্যে দাঁড় করে রাখায় সে মারাত্মক ভাবে অপমানিত হয়। এই অভিমান সইতে না পেরে সাথী আত্মহত্যা করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সম্পাদিকা সানজিদা ইসলাম তানিয়া বলেন, এই ঘটনা একটি প্রভাবশালী মহল ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে সাথীর মামী মুক্তা বেগম বলেন, ‘আমার ভাগ্নীকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মারপিট ও গালিগালাজ করে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছে। আমি এঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

চরমুগরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালায় প্রধান শিক্ষক মো. নুর হোসেন হাওলাদার সাথী মারা যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের বলেন, সাথী ও আর এক ছাত্রী গালাগাল করায় আমি তাদের দুইজনকেই ডেকে এনে সবার সামনেই শাসন করে ক্লাসে পাঠিয়ে দিই। সামান্য এ ঘটনায় সাথী যে ঔষুধ খাবে তা ভাবতে পারিনি।

তবে সাথী মারা যাওয়ার পর প্রধান শিক্ষকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, নিহত ছাত্রীর পরিবারের লোকজন ও স্কুলের সহপাঠিরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা প্রকৃত অপরাধীকে আটক করার আশ্বাস দিয়েছি।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বলেন, ‘এ ঘটনায় পুলিশের একাধিক টিম এলাকা পরিদর্শন করেছে। এখনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আমরা সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

আরো পড়ুন: শ্রেণিকক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষিকা, ধরলো শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত