ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষা প্রশাসনের ৩০ ‘দুর্নীতিবাজ’ কর্মকর্তার বদলির আদেশ অনুমোদন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২২:৪৬  
আপডেট :
 ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২২:৪৯

শিক্ষা প্রশাসনের ৩০ ‘দুর্নীতিবাজ’ কর্মকর্তার বদলির আদেশ অনুমোদন

শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বছরের পর বছর আঁকড়ে থাকা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৩০ কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ অনুমোদন হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ ফাইলে অনুমোদন দিয়েছেন। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে ঘুষ-দুর্নীতি, চাকরিবিধি লঙ্ঘনসহ একই প্রতিষ্ঠানে বহু বছর ধরে কর্মরত থাকার অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘ঘুষ, দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বদলি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মঙ্গলবার তালিকাভুক্ত কর্মকর্তাদের বদলির নির্দেশনা অনুমোদন পেয়েছে। বদলির প্রক্রিয়ায় আরও প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। পর্যায়ক্রমে তাদেরও বদলির নির্দেশনা জারি করা হতে পারে।

অপর এক সূত্র জানায়, পছন্দমতো বদলি না হওয়ায় নতুন করে তদবির করছেন অনেকেই। এদেরকে সরকারি কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার জন্য নিয়োগ দেয়া হলেও শুধু অফিসে চাকরি করতেই বেশি পছন্দ করেন। যেকোনো মূল্যে শুধু অফিসে অথবা ঢাকায় পদায়ন পেতে চান তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক শাখার উপ-পরিচালক মোস্তফা কামাল, বেসরকারি কলেজ শাখার উপ-পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, এস এম কামাল হায়দারসহ ১২ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দুজন কর্মকর্তা, এনসিটিবির চারজনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ১২ জন কর্মকর্তা রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, এসব কর্মকর্তার মূল পদ সরকারি কলেজগুলোতে হলেও প্রভাব খাটিয়ে তারা বছরের পর বছর প্রশাসনিক পদ আঁকড়ে ছিলেন। অনেকেই গড়ে তুলেন বাণিজ্য সিন্ডিকেট।

তবে, ঢাকা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক এটিএম মইনুল হোসেনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রক আবদুল মজিদ, মোখলেছুর রহমান, মনির হোসেনসহ অন্তত ১০ জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ডিআইএর সালাম আজাদ, শ্যামা প্রসাদ সাহা, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। শিগগিরই এসব কর্মকর্তাদেরও বদলি করা হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, এনসিটিবিতে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকার বই ছাপার কাজে কমিশন হাতিয়ে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন অনেক কর্মকর্তা।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে থেকে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমতি, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ইচ্ছেমতো পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আসন বৃদ্ধি ও বোর্ডের কেনাকাটায় বড় ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। ডিআইএ কর্মকর্তারা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিদর্শনের নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। গতবছর একজন কর্মকর্তাকে ধরিয়ে দেন মন্ত্রণালয়ের কারিগরি শাখার একজন উপ-সচিব। মাউশির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তিসহ বিভিন্ন কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব অনৈতিক সুবিধা নিতেই বছরের পর বছর সেখানে ‘খুঁটি’ গেড়েছেন অনেক কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, অনেক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতির নানান অভিযোগ উঠেছে। বদলির প্রক্রিয়ায় আরও প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। পর্যায়ক্রমে তাদেরও বদলি করা হতে পারে।

জেডএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত