ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাজেট পেলে আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান নির্মাণ করবো: শুভ্র

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০১৮, ১৪:২৬

বাজেট পেলে আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান নির্মাণ করবো: শুভ্র

বিশ্বায়নের এ সময়ে কেউ পিছিয়ে থাকতে চায় না। যার ফলে সবার মাঝেই দেখা যায় এখন তীব্র প্রতিযোগিতা। প্রযুক্তির দিক থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকলেও আমাদের মেধা ও চেষ্টার কোন কমতি নেই। আমরা খুব কম বাজেটে অনেক ভালো অনুষ্ঠান নির্মাণ করার চেষ্টা করি। আর সেই অনুষ্ঠানটি নির্মাণে যদি পূর্ণাঙ্গ বাজেট পাওয়া যেতো তবে তা কোন অংশেই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানগুলোর থেকে কম হতো না। কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এনটিভির সিনিয়র প্রযোজক ওয়াহিদুল ইসলাম শুভ্র।

শুভ্র'র ধ্যান-জ্ঞান থাকে সর্বদা ব্যাতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান নির্মাণ করার দিকে। এর কারন হিসেবে জানান, 'দর্শক সবসময় নতুন নতুন অনুষ্ঠান ও এর মাঝে বৈচিত্রের ছোঁয়া খুঁজে বেড়ান। তাইতো আমি সবসময় সচেষ্ট থাকি একটি অনুষ্ঠান কতটা নান্দনিক ও চমকপ্রদ হয় তার বিষয়ে। দর্শককে অবশ্যই মানসম্মত অনুষ্ঠান উপহার দিতে হবে। তা না হলে আমাদের দর্শক অন্য দেশের অনুষ্ঠানের প্রতি পুরোপুরি ঝুঁকে পড়বে। যার ফলে আমাদের সংস্কৃতির উপর ভীনদেশী সংস্কৃতির বিরুপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি দেশিয় টিভি চ্যানেলগুলো দর্শক হারাবে। আমি প্রায় একদশক ধরে বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠান নির্মাণ ও ইভেন্ট করে আসছি। কাজ করতে করতেই আমার এ ধারণা হয়।'

তার কিছু জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রূপচাঁদা সুপার শেফ, মার্কস অলরাউন্ডার, স্বর্ণালী স্মৃতি, স্টাইল অ্যান্ড ট্রেন্ড, মিউজিক জ্যাম, ওল্ড স্কুল বিটস। তবে রান্না নিয়ে জনপ্রিয় প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান রূপচাঁদা-দ্য ডেইলি স্টার সুপার শেফ অনুষ্ঠানটির প্রচার শুরু হবে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে।

শুভ্র'র ইচ্ছে রয়েছে চলচ্চিত্র নির্মাণেরও। এই বিষয়ে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজে হাত দিতে চাই। তার আগে হলিউড-বলিউড থেকে প্রশিক্ষণ নিতে চাই, সেখানে কাজ করতে চাই। আমার বিশ্বাস, ভালো গল্প ও বাজেট পেলে আর এই প্রশিক্ষণগুলো থাকলে আমরা অবশ্যই অনেক ভালো কিছু করতে পারবো। বিদেশের মাটিতে আমরা যে ইভেন্টগুলোয় কাজ করি তার সব কয়টি বাঙালী কমিউনিটিতে হয়। আমাদেরেকে অবশ্যই বাঙালী কমিউনিটি থেকে বের হয়ে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মেও কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা বিশ্ব মিডিয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে পারবো। আর আমাদের সংস্কৃতির বিকাশ হবে বিশ্বব্যাপী। তাই নিজেকে ভালোভাবে গুছিয়ে নিচ্ছি।

শুভ্র সম্প্রতি কোরিয়ান সরকারের আমন্ত্রণে টিভি অনুষ্ঠান নির্মাণের উপর বিশেষ এক ট্রেনিং এ কোরিয়া গিয়েছিলেন। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র তিনি এ ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে দক্ষিণ কোরিয়া যান। সেখানে ক্যামেরা, অডিও, সেট ডিজাইন, লাইটিং, স্ক্রিপ্ট রাইটিং, ত্রিমাত্রিক এনিমেশন, বাজেট, অনুষ্ঠান তৈরির প্রস্তুতি, সবকিছু নিয়েই হাতেকলমে শিখেছেন।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, কোরিয়ায় প্রশিক্ষণের পর আমি সব বিষয়ে নতুন করে ভাবতে শিখেছি। আমি দেখলাম, অনুষ্ঠান নির্মাণে বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পর্যাপ্ত বাজেট থাকলে আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান দেশে বানানো অবশ্যই সম্ভব।

রিয়্যালিটি শো’ নিয়ে বলেন, বর্তমানে দেশে আগের থেকে আরও উন্নত রিয়্যালিটি শো হচ্ছে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এখন বেশ বড়। সুতরাং কাজের মানও ভালো হওয়া চাই। আন্তর্জাতিক মানের কাজ করতে গেলে সবার আগে বাজেট বাড়াতে হবে। কিন্তু এই বিষয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে। সবচেয়ে নেতিবাচক দিক হচ্ছে, কম বাজেটে আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান চাই। আমাদের এধরনের কাজ করার মত যথেষ্ট সাপোর্ট এবং লোকবল আছে। বাজেট পেলে সবই করা সম্ভব। এই বিষয়টি চ্যানেলের পাশাপাশি স্পন্সরকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।

অন্য দেশের তুলনায় আমাদের অনুষ্ঠানের দুর্বলতার বিষয়ে বলেন, শুরতেই বুঝতে হবে, সবার মার্কেট তো আর এক না। অন্য দেশের কাজে কোটি টাকার বাজেট থাকলেও আমাদের তা থাকেনা। তাই বাজেট অনেক বড় একটি ফ্যাক্ট। আর আমাদের রিয়্যালিটি শো গুলোর সবচেয়ে বড় দুর্বল জায়গা হচ্ছে, বিচারক এবং অংশগ্রহণকারীদের পারফর্মেন্স শতভাগ পাওয়া যায়না। এবারের রিয়্যালিটি শো থেকে যারা বাদ পড়ছে তারাই পরেরবারের বিজয়ী। এটাই সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। নতুন ও মেধাবী প্রতিযোগী খুব কম। প্রতিযোগীর পাশাপাশি বিচারকদেরও গ্রুমিং খুব জরুরী; তবে তা হয় খুব কম। আশার দিক হচ্ছে, এখন অংশগ্রহণকারীদের জড়তা কাটছে। যতোই দিন যাচ্ছে, আমরা এগুলা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। অনুষ্ঠানের মান বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিনিয়তই অব্যাহত চেষ্টা করে যাচ্ছি।

কেআই/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত