ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

পঞ্চগড় থেকে উপভোগ করুন সিনিওলচুর সৌন্দর্য

পঞ্চগড় থেকে উপভোগ করুন সিনিওলচুর সৌন্দর্য

হেমন্তের মিষ্টি রোদের সৌন্দর্যে মেতে উঠেছে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত প্রকৃতি কন্যা তেঁতুলিয়া। দেশের একদম উত্তরে অবস্থিত এই জনপদ প্রতিবছরের এসময়টায় সৌন্দর্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়। তিন দিক দিয়ে ভারতের কাঁটাতারে বেষ্টিত তেঁতুলিয়ার সীমান্ত থেকে দেখা যায় ভারতের দার্জিলিং, কাঞ্চনজঙ্ঘা আর নেপালের আকাশচুম্বী হিমালয় পর্বত। বাংলাদেশের উত্তরের শেষ সীমানায় এগুলো ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি হিমবাহ দেখা যায়, তার মধ্যে সিনিওলচু অন্যতম। বিশাল এই উপমহাদেশে তুষার হিমবাহের একটিই আস্তানা হিমালয়। এর সুউচ্চ চূড়াগুলো স্থায়ীভাবে জমাট বরফের বিস্তীর্ণ আস্তরণে ঢাকা। সেখান থেকেই নেমে আসছে এই অসংখ্য ছোট বড় হিমবাহ।

সিকিমে অবস্থিত এর সর্বোচ্চ পর্বতগুলোর একটি সিনিওলচু। একে সবচেয়ে সুন্দর বরফ পর্বতগুলোর একটি বলে বিবেচনা করা হয়। পর্বতটি কাঞ্চনজঙ্ঘার চেয়ে কম উচ্চতার, প্রায় ৬,৮৮৯ মিটার যা কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া থেকে পূর্ব দিকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় অগম্য এই সুউচ্চ চূড়ায় ভ্রমণের সুবিধা নেই, এমনকি বিমানপথেও নয়। কেবল দক্ষিণাঞ্চলীয় এই পর্বতের পাদদেশে যাওয়ার জন্য রেল সংযোগ রয়েছে। কাশ্মীর ও চীনের মধ্যে এবং ভারত থেকে নেপাল ও সিকিম হয়ে চীন পর্যন্ত রয়েছে পাকা রাস্তা। এই ঋতুতে মেঘমুক্ত আকাশে স্পষ্ট দেখতে পারবেন বরফে ঢাকা পাহাড়ের চূড়া। বরফে ঢাকা পাহাড়ের ওপর দিনের প্রথম সূর্যের আলো সত্যিই মুগ্ধতা ছড়ায়। তবে পঞ্চগড়ের সব জায়গা থেকে সিনিওলচু দেখা যায় না । তেঁতুলিয়া ডাক বাংলো থেকে অল্প একটু দেখা গেলেও ঠিকমতো বোঝা যায়না। এটি দেখতে আপনাকে বাংলাবান্ধার নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় যেতে হবে কারণ সামনে দার্জিলিং পাহাড়ের সারির কারণে বেশির ভাগ জায়গা ঢাকা পড়ে যায়। তেঁতুলিয়া থেকে যত পূর্ব দিকে যাওয়া যায় ততোই ভালো দেখা যায় সিনিওলচু।

হিমালয় পর্বতের পাদদেশে বলে দেশের এই উত্তর জনপদে শরতের শেষ থেকেই শীত পড়ে যায়। কুয়াশায় ঢেকে যায় পুরো অঞ্চল। এছাড়া উত্তরে মেঘালয় মালভূমি, আরও উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা এবং উত্তর-পূর্বে আসামের পর্বতমালা থাকার কারণে এখানে শীতের তীব্রতা বেশি। উত্তরের বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট দেশের অন্যতম স্থলবন্দর। এখান থেকে আকাশছোঁয়া হিমালয় পর্বতমালা ছাড়াও দেখতে পাবেন সীমান্তের তীর ঘেঁষা ভারত-বাংলাদেশের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মহানন্দা নদীর তীরের সৌন্দর্য।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সরাসরি বাস যায় তেঁতুলিয়ায়। হানিফ, শ্যামলী ও কেয়াসহ বিভিন্ন পরিবহনের এসব বাসে ভাড়া নেবে মাত্র ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। পঞ্চগড় বা তেঁতুলিয়ার পথে কোনো এসি বাস নেই। যদি এসি বাসে যেতে চান তাহলে আপনাকে রংপুর পর্যন্ত যেতে হবে। সেক্ষেত্রে গ্রীন লাইন, আগমনী, টি আর ট্র্যাভেলস বাসগুলোতে ভাড়া লাগবে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকার মতো। রংপুর থেকে পঞ্চগড়ে আপনাকে আলাদা পরিবহনে যেতে হবে। পঞ্চগড় থেকে সারাদিন তেঁতুলিয়ায় বাস চলাচল করে। ভাড়া পড়বে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। তেঁতুলিয়ায় নেমে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর বা আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি জন্য অটোরিকশা, অটোভ্যান ও মাইক্রোবাস ভাড়া পাওয়া যায়। সারা দিনের জন্য রিজার্ভ কারের ভাড়া পড়বে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা। আর মাইক্রোবাসের ভাড়া ২,৫০০-৩,৫০০ টাকা। পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় বাসস্টেশন কিংবা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এসব ভাড়ার গাড়ি পাওয়া যাবে।

যেখানে থাকবেন পঞ্চগড়ে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় যে কোনো আবাসিক হোটেলে থাকতে পারবেন। তবে এসি রুমের জন্য দিতে হবে এক হাজার টাকা। তেঁতুলিয়ায় মহানন্দা নদী তীরের ডাকবাংলোতে থাকার জন্য তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। দুই বেডের প্রতি কক্ষের ভাড়া পড়বে ৪০০ টাকা। বন বিভাগের রেস্টহাউসে থাকার জন্য জেলা সদর অথবা তেঁতুলিয়ায় বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিতে হবে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরেও জেলা পরিষদের ডাকবাংলো আছে। এখানে থাকার অনুমতি নিতে হবে পঞ্চগড় থেকে। আর এখানে থাকতে হলে ৪০০ টাকাতেই রুম পেয়ে যাবেন।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত