অশ্লীল ভিডিও বানাতেন পাপিয়া, ফোনে মিললো প্রমাণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:৩৬ আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৪৯
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার সদ্য বহিষ্কৃত যুব মহিলালীগ নেত্রী পাপিয়ার কাছে থাকা মোবাইল ফোনে বেশকিছু অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। কম বয়সী মেয়েদের দিয়ে জোরপূৰ্বক অনৈতিক কাজ কারিয়ে তা নিজ মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখতেন। এরমধ্যেই কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
র্যাব-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, শামিমা নূর পাপিয়ার নিজ মোবাইলে বেশ কিছু অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। ওই ভিডিও থেকে কয়েকটি এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তবে এই ধরণের ভিডিও যে কোনো নারীর জন্য আপত্তিকর ও অনৈতিক।
পাপিয়া চৌধুরী ও তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন
কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল জানায়, তাদের আয়ের আরেকটি উৎস হচ্ছে কম বয়সী মেয়েদের দিয়ে জোরপূৰ্বক অনৈতিক কাজ করানো। যাদের অধিকাংশই নরসিংদী এলাকা হতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসে। তাদের বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।
আরো পড়ুন: তারা এমপির লোক!
র্যাব আরো জানায়, পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী নরসিংদী এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, চাকরি দেওয়ার প্রলােভন দেখিয়ে প্রতারণা, জমির দালালি, সিএনজি ষ্টেশনের লাইসেন্স প্রদান, গ্যাস লাইন সংযােগ ইত্যাদির নামে সাধারণ মানুষের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশের এসআই ও বাংলাদেশ রেলওয়েতে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নামে মােট ১১ লাখ টাকা, একটি কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযােগ দেওয়ার কথা বলে ৩৫ লাখ টাকা, একটি সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স দেওয়ার নাম করে ২৯ লাখ টাকাসহ ঢাকা ও নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছে।
এছাড়াও ধৃত আসামি শামিমা নূর পাপিয়ার ‘কিউ এন্ড সি’ নামক একটি ক্যাডার বাহিনী আছে। তাদের মাধ্যমে নরসিংদীর এলাকায় চাঁদাবাজির, মাসােহারা আদায় আর আধিপত্য বিস্তারের জন্য সকল প্রকার অন্যায় কাজের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে র্যাব সূত্রে।
আরো পড়ুন: সেই পাপিয়াকে নিয়ে যা বললেন সাবেক এমপি তুহিন
কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল জানায়, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বর্তমান সম্পদ ও বিলাসবহুল জীবন সম্বন্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। সুনির্দিষ্ট পেশা না থাকা সত্ত্বেও তারা স্বল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তি ও অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছেন। ফার্মগেট এলাকাস্থ ২৮ ইন্দিরা রোডে তাদের ২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নরসিংদী শহরে ২টি ফ্ল্যাট, বিলাসবহুল ব্যক্তিগত গাড়ি ও নরসিংদীর বাগদী এলাকায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ২টি প্লট আছে।
পাপিয়া চৌধুরী ও তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন
এছাড়াও তেজগাঁও এফডিসি গেট সংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বে তাদের ‘কার একচ্যাঞ্জ' নামক গাড়ির শাে রুমে প্রায় ১ কোটি টাকা বিনিয়ােগ আছে এবং নরসিংদী জেলায় ‘কেএমসি কার ওয়াস এন্ড অটো সলিউশন' নামক প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে বলেও জানা যায়।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের নামে-বেনামে অনেক এ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত আছে। এ ব্যাপারে র্যাবের অনুসন্ধান অব্যাহত আছে বলে জানায় র্যাব-১ এর এই সিও।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ