সাংবাদিক নিপীড়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আরএসএফসহ ৫ সংস্থার চিঠি
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২০, ০৬:৫৬
বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতে ফ্রান্স ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারসসহ (আরএসএফ) ৫টি দেশি বিদেশি সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি দিয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে সাংবাদিক ও কার্টুনিস্টদের ওপর শারীরিক হামলা মামলা দিয়ে হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এই খোলা চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাগুলো।
বুধবার আরএসএফের ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়।
সংগঠনগুলো হল- কার্টুনিস্টস রাইটস নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল (সিআরএনআই), রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ), ফোরাম ফর ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন, বাংলাদেশ (এফইএক্সবি), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং কার্টুনিং ফর পিস (সিএফপি)।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় দৃঢ় বিশ্বাসের কথা বলা হলেও বর্তমান মহামারীতে তা লঙ্ঘিত হচ্ছে।
আরও বলা হয়, শুধু মে মাসেই অন্তত ১৬ জন সাংবাদিক ও ব্লগারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর রয়েছেন, যাকে ৬ মে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার একমাত্র ‘অপরাধ’ ছিল ‘করোনার সময়ে জীবন’ শিরোনামে রাজনীতিকদের কার্টুন আঁকা। তিনি এখনও বন্দি এবং তার সামনে যাবজ্জীবনের হুমকি।
চিঠিতেউল্লেখ করা হয়, অন্যান্য সাংবাদিকদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই এই আইনে মামলা হয়েছে সংবাদ প্রকাশের জন্য, যাতে স্থানীয় রাজনীতিকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশে লকডাউন শুরুর পর থেকে অন্তত ১৩ জন সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা হয়েছে, কয়েকজন গুরুতর আহতও হয়েছেন। এই সাংবাদিকরা ত্রাণে অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য হামলার শিকার হয়েছেন বলে চিঠিতে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের ভাষায় ‘ভুল তথ্যের এই মহামারীর’ মধ্যে বাংলাদেশি সাংবাদিকরা দেশের মানুষকে নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে সামনের কাতারে থেকে কাজ করছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
তাদের এভাবে হামলা ও হয়রানির মুখে পড়াটা মেনে নেওয়ার মতো নয় বলে লিখেছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সোচ্চার এই পাঁচ সংগঠন।
* সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা চালানো ব্যক্তিরা যেন বিচারহীন না থাকে সেজন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষ থেকে তদন্তের নির্দেশ এবং প্রয়োজনে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের গ্রেফতার ও বিচার করা।
* ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে সাংবাদিক, ব্লগার ও কার্টুনিস্টদের অবমাননাকর শাস্তির ধারা বাতিল করা।
* সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার আইন সংস্কার করা, যাতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ২০১৮ সালের ১৪ মে বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হয়। এক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কার করা উচিত এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষায় একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করা দরকার।
এসব লক্ষ্য অর্জনে সরকারের সঙ্গে সংলাপ শুরুর জন্য সংগঠনগুলো প্রস্তুত আছে বলে চিঠিতে জানানো হয়।
বাংলাদেশ জার্নাল/আর