সিনহা হত্যা মামলা: রিমান্ডে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু রোববার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২০, ২২:১৬
সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় আসামিদের আগামীকাল রোববার রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে র্যাবের তদন্ত দল।
শনিবার এ বিষয়ে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল আশি বিল্লাহ বলেন, আদালতের নির্দেশে আসামিরা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। রোববার আসামিদের কক্সবাজার কারাগার থেকে ৭ আসামিকে র্যাবের হেফাজতে নিয়ে পর্যায়ক্রমে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এদিকে আসামির নাম ঠিকানা যাচাইয়ে জন্য শনিবার দুপুর ২টার পর থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের ফটকে গিয়েছেন র্যাবের তদন্ত দল।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান জানান, আপাতত দু’দিন করে জেল গেটে রিমান্ড মঞ্জুর করা চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে। রোববার থেকে টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী, বরখাস্ত টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে র্যাব-১৫ এর হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা তুলে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। মামলার শুনানিতে র্যাবের পক্ষে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৭ আসামিকে ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন, এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি বাহারছড়া চেকপোস্টের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও ২ নম্বর আসামি প্রত্যাহার টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএস আই লিটন মিয়া।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বুধবার সকালে কক্সবাজারে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার করেন। মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্তদলের প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার হিলডাউন সার্কিট হাউজে তদন্ত কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘ বৈঠকে তদন্ত দলের সদস্যরা ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন। এতে তদন্ত দলের নির্দিষ্ট কর্ম-পরিকল্পনা তথা কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ অনুযায়ী কমিটির সদস্যরা ঘটনার তদন্তের স্বার্থে ঘটনাস্থলসহ মাঠ পর্যায়ে যেখানে যাওয়া দরকার সেখানে পরিদর্শন করবে। এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীসহ যাদের দরকার তাদের সঙ্গে কথা বলবে তদন্ত দল।
মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া ৭ কর্ম-দিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার চেষ্টা করবে বলে জানান তদন্ত দলের এ প্রধান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের এই কমিটি বৈঠকের পর প্রয়োজনে তথ্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া তদন্ত কমিটির এ বৈঠক চলে দীর্ঘ প্রায় সাত ঘণ্টাব্যাপী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বিভাগে কর্মরত সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডারের মনোনীত প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মনোনীত প্রতিনিধি অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরাধ ও অপারেশন) মো. জাকির হোসেন এবং কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান আলি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস/এনএইচ